‘বাবার মৃত্যুর দিনও শ্যুটিং বাতিল করতে পারিনি’
প্রকাশিত : ২০:৪২, ১২ জুন ২০২২
পিতৃশোক ভুলে মাঠে নেমে সেঞ্চুরি করা বা শেষকৃত্য করে ব্যাট হাতে ২২ গজে নেমে পড়া, এই ছবি একাধিকবার দেখেছে ভারতের ক্রিকেট মাঠ। কিন্তু সিনে দুনিয়ায়? যেখানে পেশার সঙ্গে লতায় পাতায় জড়িয়ে রয়েছে অনুভূতি, বাবার মৃত্যুর দিনেও কতটা কঠিন নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে চরিত্রের আবেগকে ফুটিয়ে তোলা? সকাল থেকে বাবাকে নিয়ে জমে মানুষে টানাটানি যেদিন, সেইদিনও মুখে মেকআপ করে লাইটস-ক্যামেরা-অ্যাকশানের জন্য তৈরি হওয়া নেহাত সহজ নয়। কিন্তু স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়কে 'শ্রীমতী' সাজতে হয়েছিল সেইদিনও, যেদিন তিনি জীবনের সবচেয়ে বড় অবলম্বনকে হারিয়ে ফেলেছিলেন ।
কাছের মানুষকে হারিয়েও যথারীতি অভিনয় করে যাওয়া.. অভিনয়ের আড়ালে যে মানুষটা থাকে, তার জন্য সহজ বিষয়টা? ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এবিপি লাইভকে স্বস্তিকা বললেন, 'সবচেয়ে কঠিন কাজ। কিন্তু আমি এটা দেখেই বড় হয়েছি। ঠাকুরদা যেদিন মারা গিয়েছিলেন, বাবা ৩টে পর্যন্ত শ্যুটিং করেছিলেন। তখন টেকনিশিয়ান ২ ছিল। শ্যুটিং শেষ করে সরাসরি কোঠারি হাসপাতালে চলে গিয়েছেন। তারপর কাগজে সই করে সব নিয়ম পালন করেন। বাবা সেইদিনের শ্যুটিংটা বাতিল করতে পারেননি কারণ সেইদিনের পর স্টুডিও পাওয়া যেত না। সেই রাতে শ্যুটিং শেষ হয়ে যাওয়ার পরে সেট ভেঙে ফেলা হত। বাবা ঠাকুরদার মৃত্যুর খবর পেয়েছিলেন ৯টার সময় আর শ্যুটিং করেছিলেন ৩টে পর্যন্ত।'
স্বস্তিকার ক্ষেত্রেও কী এই ঘটনার পুনরাবৃত্তিই হল? অভিনেত্রী বলছেন, 'কপালের ফের। যেদিন বাবা মারা গিয়েছিলেন, সেদিন আমি 'শ্রীমতী'-র ক্লাইম্যাক্সটা শ্যুটিং করেছি। ট্রেলারের শেষের দিকেও ছোট্ট একা অংশ আছে। সেদিন সকাল থেকে জমে মানুষে টানাটানি। বাড়িতে আত্মীয়রা সবাই রয়েছেন। টেকনিক্যাল কিছু কারণে সেইদিনের শ্যুটিং বাতিল করতে পারিনি। সাড়ে পাঁচটায় বাড়ি ফিরলাম, আর সাড়ে ৭টার সময় বাবা মারা গেলেন। যখনই এই ছবিটার কোনও অংশ দেখি, আমার বাবার মৃত্যুর দিনটা মনে পড়ে যায় বার বার।'
জীবনের অন্যতম বন্ধু, অবলম্বনকে হারিয়েও অভিনয়ের ফ্লোরে অটল। চূড়ান্ত পেশাদারিত্ব? একটু হেসে স্বস্তিকা বললেন, 'ছবিটা যখন দর্শক দেখবেন, তখন তো আর নিচে সাবটাইটেল যাবে না, যে এই দৃশ্যে অভিনয়ের সময় উনি আর শ্রীমতী ছিলেন না। উনি ভালো করে অভিনয়টা করতে পারেননি কারণ ওনার বাবার মৃত্যু হয়েছিল। কিন্তু ওই সময় মন দিয়ে, সংলাপ মুখস্থ করে বলাটা খুব কঠিন।'
সূত্র: এবিপি আনন্দ
এসবি/