ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

সুশান্তের মৃত্যুর ২ বছর পরেও নেপথ্য কারণ অজানা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:৫৮, ১৪ জুন ২০২২

মাত্র ৩৪ বছরের তরতাজা তারকা ২০২০ সালের ১৪ই জুন আচমকাই ফুরিয়ে গেলেন! সে দিন ভোর হওয়া দেখেছিলেন তিনি। সকালের খাবারও চেয়ে নিয়েছিলেন। তার পরেই ঘরের দরজা বন্ধ। আর কোনও সাড়া নেই তার।

দীর্ঘক্ষণ পরে সবার যখন টনক নড়ল, ততক্ষণে তিনি ‘নেই’। ‘কাই পো চে’, ‘ধোনি: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’, ‘ব্যোমকেশ বক্সী’, ‘দিল বেচারা’র নায়কের ঝুলন্ত দেহ মিলল তার শোওয়ার ঘর থেকে।

কেন এ ভাবে শেষ হয়ে যেতে হল তাকে? কেউ কি খুন করে ঝুলিয়ে দিয়েছিল? নাকি, তার বাঁচার ইচ্ছেটাই চলে গিয়েছিল? রাজপুতের পরিবার হতাশ। ক্ষুব্ধ ভক্তরাও। এই প্রশ্ন নিয়ে তারা প্রশাসন, সিবিআই দফতরের দরজায় দরজায় ঘুরেছেন। দেখতে দেখতে দু’বছর পার। সুশান্তের মৃত্যুজট খুললই না! জনপ্রিয় অভিনেতার মৃত্যুর পর থেকে গত দু’বছর ধরে প্রশাসন এবং তদন্তকারী দলের ভূমিকা ঠিক কী ছিল, দেখে নেওয়া যাক—

মৃত্যুর পর ময়নাতদন্তের কারণে এক দিন পরে অর্থাৎ ১৫ জুন মুম্বাইয়ের পবনহংস শ্মশানে দাহ করা হয়েছিল সুশান্তের দেহ। প্রথম থেকেই মুম্বাই পুলিশ আত্মহননের কথা বলেছিল। কিন্তু একের পর এক সন্দেহজনক ঘটনা এবং তাকে ঘিরে জন্ম নেওয়া প্রশ্ন যেন অন্য কিছুরও ইঙ্গিত করছিল। কী সেগুলি? জানতে সিবিআই তদন্ত দাবি করেছিলেন প্রয়াত অভিনেতার বাবা কেকে সিংহ। এ ছাড়া, অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বও এই মৃত্যুকে ‘হত্যাকাণ্ড’ তকমা দিয়েছিলেন। অভিযোগ, বলিউডের কর্তাব্যক্তিরা স্বজনপোষণ করতে গিয়ে নাকি কম হেনস্থা করেননি সুশান্তকে। এই অভিযোগ প্রথম জানিয়েছিলেন কঙ্গনা রানাউত।

সুশান্তের ভগ্নীপতি এবং উত্তরপ্রদেশের আইপিএস অফিসার ওপি সিংহও সেই সময় বিষয়টির তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। ঘটনাগুলি নতুন মোড় নেয় যখন ২৯ জুলাই, ২০২২-এ সুশান্তের বাবা আত্মহত্যায় প্ররোচনা এবং অভিনেতার ব্যাঙ্কে জমানো অর্থের লেনদেনের জন্য পটনার রাজীব নগর থানায় সুশান্তের বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তী-সহ ছ’জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন। 

ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিহার এবং মহারাষ্ট্র সরকারও মুখোমুখি হয়েছিল। এমনকি তদন্ত শুরু হওয়ার আগেই, রিয়া চক্রবর্তী মুম্বাইয়ের বান্দ্রা থানায় তার বক্তব্য রেকর্ড করেছিলেন। পাশাপাশি, তিনি সুশান্ত সম্পর্কিত সমস্ত পোস্ট মুছে ফেলেছিলেন।

ষড়যন্ত্রমূলক হত্যাকাণ্ডের অভিযোগের তদন্তের মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে সুশান্তের ব্যাঙ্কে জমানো কোটি টাকা কোথায় গেল? সন্দেহের তির এ বারেও রিয়ার দিকেই। গত ৩০ জুলাই বিষয়টি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) দফতরে পৌঁছায়। সুশান্তের মৃত্যুর তদন্তে মুম্বাইয়ে যাওয়া বিহার পুলিশের দল ইডি-কে সাহায্য করেছিল। এই সময়েই প্রকাশ্যে আসে সুশান্তের মাদক-যোগ কাহিনি। ইডি-র সন্দেহ, রিয়া এবং আরও অনেকের সঙ্গে মাদক পাচারকারীদের যোগসূত্র রয়েছে। 

ফলে, শুরু নতুন তদন্ত। যদিও তথ্য-প্রমাণের অভাবে একে একে ছাড়া পান রিয়া, তার ভাই শৌভিক। অর্থের লেনদেন এবং মাদক সংক্রান্ত অভিযোগে সরাসরি তাদের কোনও যোগসাজশ খুঁজে পাওয়া যায়নি। ফলে, চক্রবর্তী পরিবার আপাতত জেলের বাইরে।

মুম্বাইয়ের একটি আদালত রিয়াকে আবু ধাবিতে আয়োজিত আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিল। রিয়ার বিরুদ্ধে ‘লুকআউট’ নোটিস থাকায় শেষ মুহূর্তে তার যাওয়া নাকচ হয়। সুশান্তের মৃত্যু আত্মহত্যা নাকি খুন, তার তদন্ত সিবিআই গত ডিসেম্বরে শেষ করেছে। তার পর কেটে গিয়েছে ছ’মাস। এখনও তার ফলাফল অজানাই। সূত্র: আনন্দবাজার

এসি

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি