অভিনেতারা বেশি শ্রম দেন সোশ্যাল মিডিয়ায়: অনির্বাণ
প্রকাশিত : ১১:৩০, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২
দিন দিন বেড়েই চলেছে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার। অনেক ক্ষেত্রেই নিজ কর্মের চেয়ে আকর্ষনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে ফেসবুক-ইনস্টাগ্রাম। ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে এক আড্ডায় বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলছেন টালিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা হালের ‘ব্যোমকেশ’ অনির্বাণ ভট্টাচার্য।
অনির্বাণ জানান, সব কিছু পেশা, আর অভিনয়টা পেশা নয়? যেন রাতারাতি নিজেকে অভিনেতা বলে দিলেই পরের দিন থেকে অভিনয় শুরু করে দেওয়া যায়? আর হচ্ছেও তো তাই।
তিনি আরও বলেন, একজন মঞ্চের অভিনেতা ভালো কাজ করলে, জনপ্রিয়তা পেলে, তাকে সিনেমায় আনা হয়। সিনেমায় ভালো করলে তিনি আরও বেশি মানুষের ভালোবাসা পান। সারা বিশ্বে এত কাল ধরে এমনটাই হয়ে আসছে। এতে কে প্রশংসা করল, আর কে করল না, সে সব ধর্তব্যের মধ্যেই আসে না।
অনির্বাণ আরও জানান, আর যদি কোনও অভিনেতার এইসব খারাপ লাগে তাহলে তাকে নেটদুনিয়া ত্যাগ করতে হবে। না হলে খারাপ লাগা বাড়তেই থাকবে।
তিনি বলেন, “থিয়েটার, সিনেমা কিংবা অভিনয় শিল্প সব কিছুই এর থেকে অনেক বড়। এই খারাপ লাগাটা যদি একটা ব্যাধি হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে কয়েক বছর পরে, তা হলে সেটা সোশ্যাল মিডিয়ার কারণেই। আমি সব জায়গায় একই কথা বলে খারাপ হতে চাই না, তবে এই সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের সমস্ত বুনিয়াদ ধসিয়ে দেবে। ইতোমধ্যেই দিয়েছে। কারণ বহু অভিনেতা-অভিনেত্রী তাদের অভিনয়ের পিছনে যে শ্রমটা দিচ্ছেন, তার চেয়ে অনেক বেশি পরিশ্রম করছেন ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক ইত্যাদি সাজাতে।”
তার সাফ কথা, ভার্চুয়াল দুনিয়ার ফলোয়ার দিয়ে কিন্তু কাজ বিচার হবে না। ক্লোজ শটে কে কতটা নিখুঁত অভিনয় করতে পারছেন, দিনের শেষে সেটাই ধরা থাকবে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আজকেও হবে না, একশো বছর পরেও হবে না। এ সব ব্যথা-বেদনা সোশ্যাল মিডিয়া থেকে উঠে আসা। দিনের পর দিন আরও বেড়ে যাবে। বরং নিজেকে প্যারামিটার ঠিক করতে হবে কোনটাকে মাপকাঠি ধরব। ‘উত্তরণ’ ভাল শব্দ। কিন্তু এটা নিয়ে গাত্রদাহ হবে কেন? অভিনয় তো একটা পেশা!”
উদাহরণ হিসাবে অনির্বাণ তুলে আনলেন ডাক্তারির কথা।
তার কথায়, “কোনও দিন কোনও ডাক্তার যদি এমবিবিএস পাশ করে চেম্বার খোলেন, অন্য কোনও ডাক্তার কি তাকে বলেন, ‘আরে তুই তো করে দেখালি!’
শুধু মাত্র পেশা হিসাবে অভিনয় নিয়ে এ সব চলার কোনও যুক্তি খুঁজে পাই না। আসলে অনেক লোক এখন অভিনয় করে। রাতারাতি নিজেকে অভিনেতা বলে দেওয়া যায়। এত লোক তো ডাক্তারি করতে পারবে না। সেখানে পড়তে হবে, খাটতে হবে, ল্যাবওয়ার্ক রয়েছে। লাইব্রেরি যেতে হবে। অভিনয় তো তা নয়, ‘আমি অভিনেতা’ বলে শুরু করে দিলেই হয়ে যাবে, সহজ কাজ হয়ে গেছে। কিচ্ছু করতে হয় না অভিনয় করতে গেলে এই ধারণা তৈরি হয়েছে। বিতর্ক, ব্যথা সব সেখান থেকেই।”
সূত্রঃ আনন্দবাজার অনলাইন
আরএমএ/এমএম/