ঢাকা, রবিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

‘চতুর্থ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব’ শুরু হয়েছে কলকাতায়

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:২০, ২৯ অক্টোবর ২০২২

Ekushey Television Ltd.

কলকাতায় শুরু হলো ‘চতুর্থ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব’। এই উৎসব আগামী ২ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। 

বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হইকমিশনের ব্যবস্থাপনায় শনিবার বিকালে কলকাতার রবীন্দ্র সদনে পাঁচ দিনব্যাপী এই চলচ্চিত্র উৎসবের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়েছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য প্রযুক্তি এবং পর্যটন দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার-৩ এর সংসদ সদস্য সাইমুম সারোয়ার কমল ও প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কলকাতার উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস।

এ দিনের অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী জয়া আহসান, অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, সংগীত শিল্পী সাব্বির আহমেদ, প্রিয়াঙ্কা বিশ্বাস প্রমুখ। 

দুই দেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পরে মঞ্চে উপস্থিত হাসান মাহমুদকে ফুল, উত্তরীয় ও মেমেন্টো দিয়ে সম্মাননা জানান বাবুল সুপ্রিয়। পরে বাবুল সুপ্রিয়কে একইভাবে সম্মাননা জানান হাসান মাহমুদ।

পরে বক্তব্য রাখতে গিয়ে হাসান মাহমুদ বলেন, ‘কাঁটাতারের বেড়া বা রাজনৈতিক সীমারেখা আমাদের বিভক্ত করে দিলেও, আমরা একই ভাষায় গান গাই, একই পাখির কলতান শুনি। তাই কোনো বেড়াজালই আমাদের ভালোবাসা, মৈত্রীর সীমারেখা টানতে পারবে না।’ 

তার অভিমত, ‘আমরা বাঙালিরা বিশ্বের অনেক জাতি, গোষ্ঠীর থেকে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে কিছুটা পিছিয়ে থাকতে পারি কিন্তু মেধা, সংস্কৃতির দিক থেকে অনেক এগিয়ে।’  

তিনি বলেন, ‘শিল্পীদের কোনো সীমানা নেই। তাই শিল্প সংস্কৃতি যেন কাঁটাতারের মধ্যে আটকে না যায়, তার কারণেই এই উৎসব।’ দুই বাংলা যদি যৌথভাবে কাজ করে সেক্ষেত্রে গোটা বিশ্বে বাংলার চলচিত্র বড় জায়গা নিতে পারবে বলেও তার অভিমত।

বাবুল সুপ্রিয় জানান, ২০১৯ সালের পর এ বছর চালচিত্র উৎসব হচ্ছে, আগামী বছরও হবে। যদিও তার আক্ষেপ যারা ছবি নির্মাণ করেন তারা সেই বাবদ যে খরচ করে তুলবেন তারা ততটা উপকৃত হননি। পূজার মৌসুমে বাংলাদেশ সরকারের তরফে পশ্চিমবঙ্গে ইলিশ মাছ পাঠানোর জন্য বাংলাদেশের মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান বাবুল। অনুষ্ঠান শেষে দর্শকদের অনুরোধে ‘আমি বাংলায় গান গাই...’ গেয়ে শোনান সংগীত শিল্পী বাবুল সুপ্রিয়।

গৌতম ঘোষের আক্ষেপ ‘দুই দেশের মধ্যে ছবির আদান প্রদান এখনো করতে পারিনি। দুই দেশের মধ্যে আদা, রসুন আমদানি রফতানি হয়, কিন্তু সিনেমা হয় না।’ বিষয়টি দেখার জন্য হাসান মাহমুদকে অনুরোধ জানান তিনি। সীমানা পেরিয়ে ছবির আদান প্রদান বাড়ানোর ওপর জোর দেন তিনি।

এই উৎসবে মোট ৩৭ পূর্ণদৈর্ঘ্য ও স্বল্প দৈর্ঘ্য'এর ছবি দেখানো হবে। উল্লেখযোগ্য ছবিগুলোর মধ্যে আছে ‘চিরঞ্জীব মুজিব’, ‘হাসিনা-এ ডটারস টেল’, ‘হাওয়া’, ‘পরাণ’, ‘গুণীন’, ‘কালবেলা’, ‘বিউটি সার্কাস’, ‘শাটল ট্রেন’, ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’ প্রমুখ।

কলকাতার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাগৃহ নন্দন ১,২,৩-এ ছবিগুলো দেখানো হবে প্রতিদিন দুপুর ১টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত।

শনিবার দুপুর ১টায় নন্দন প্রেক্ষাগৃহে দেখানো হয় ‘হাওয়া’ ছবিটি। দুপুর সাড়ে ৩টা থেকে প্রদর্শিত হয় হাসিনা-এ ডটারস টেল। সন্ধ্যা ৬টায় ফের ‘হাওয়া’ দেখানো হয়। 

এদিকে উৎসবের প্রথম দিনই ‘হাওয়া’ দেখতে নন্দনে ভিড় উপচে পড়ে। শো শুরু হওয়ার অনেক আগে থেকেই প্রেক্ষাগৃহে লম্বা লাইন দেখা যায় দর্শকদের। শো শেষেও প্রত্যেকের মুখেই অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর অনবদ্য অভিনয় দক্ষতার প্রশংসা করেন। 

এমনকী নন্দনের কর্মকর্তারাও বলছেন, সাম্প্রতিককালে একটা নির্দিষ্ট ছবি দেখার জন্য এরকম চাহিদা দেখা যায়নি। এই অনুষ্ঠানের সঞ্চালক সতীনাথ মুখোপাধ্যায়সহ অনুদের মুখেও বারে বারে হাওয়া ছবির প্রসঙ্গ উঠে আসে। 

মূল অনুষ্ঠান শেষে বাবুল সুপ্রিয়কে একটি নৌকা, পাঞ্জাবি, এবং তার স্ত্রীকে জামদানি শাড়ি উপহার তুলে দেন বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী। আর গৌতম ঘোষকে নৌকা ও পাঞ্জাবি তুলে দেন তিনি। 

এমএম/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি