‘অন্তর জ্বালা’ দেখে মানুষ কাঁদবে: জায়েদ খান
প্রকাশিত : ১৭:৪৮, ৫ ডিসেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ১৭:১৩, ৬ ডিসেম্বর ২০১৭
এক দশক আগে চলচ্চিত্রে পথ চলা শুরু করেন ঢাকাই ছবির অন্যতম নায়ক জায়েদ খান। শুরু থেকে এ পর্যন্ত অসংখ্য ছবিতে অভিনয় করেছেন। কোনোটি ব্যবসা সফল ছবি হয়েছে, কোনোটি ব্যবসা করেনি। কিন্তু তিনি থেমে থাকেননি। একের পর এক তার ক্যারিয়ারে যুক্ত করেছেন ভিন্ন ধারার ছবি। সর্বশেষ আগামী ১৫ ডিসেম্বর মুক্তি পেতে যাচ্ছে তার ক্যারিয়ারের অন্যতম একটি ছবি ‘অন্তর জ্বালা’। এই ছবিতে জায়েদ খান নিজেকে ভেঙ্গে একেবারে ভিন্ন রুপে আভির্ভূত হচ্ছেন দর্শকদের সামনে। তার ‘অন্তর জ্বালা’ ছবি নিয়ে কথা হয় একুশে টিভি অনলাইনের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেনআউয়াল চৌধুরী।
ইটিভি অনলাইন: ‘অন্তর জ্বালা’ সম্পর্কে কিছু বলুন?
জায়েদ খান: আমার জীবনের সেরা ছবি অন্তর্জ্বালা। এ যাবত কালে আমি যতোগুলো মুভি করেছি। তার মধ্যে এই ছবিটি অন্যতম। এটি আমার নিজেকে ভাঙ্গার ছবি। এর আগের ছবিগুলোতে দর্শক নায়ক জায়েদ খানকে দেখেছে। এবার দেখবে অভিনেতা জায়েদ খানকে। আর এটা কোনো নায়ক বা নায়িকার মুভি না। এটা হলো পরিচালকের মুভি। এই ছবি মালেক আফসারীর মুভি। তিনি ছবির জন্য জায়েদ খানকে একেবারে ভেঙ্গে দিয়েছেন, গড়ে তুলেছেন অন্যরকমভাবে। তার কাছ থেকে অভিনয় বের করে নিয়েছেন। আমি বলবো এর সব কৃতিত্ব মালেক আফসারীর। তিনিই আামকে ছবির উপযোগী করে তৈরি করেছেন।
ইটিভি অনলাইন: আপনি বলেছেন একেবারে নিজেকে ভেঙ্গে তৈরি করেছেন, সেটা কিভাবে?
জায়েদ খান: আসলে এই ছবির জন্য আমি সব ধরণের ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত ছিলাম। কোনো কষ্টকে কষ্ট মনে করিনি। সেই জন্যই এটি আমার জীবনের সেরা মুভি। আমি এই ছবির জন্য দুই মাস চুল দাঁড়ি কাটি নাই। ঠিকমতো খাই নাই। গায়ে তেল মেখে নিজের শরীরের রং পুড়িয়েছি। সব কিছু মিলে আগামী ১৫ ডিসেম্বর দর্শক পর্দায় নতুন এক জায়েদ খানকে খুঁজে পাবে।
ইটিভি অনলাইন: শুনেছি ছবির জন্য আপনি দুই দিন না খেয়ে ছিলেন, সেটা কিভাবে সম্ভব?
জায়েদ খান: আমি আগেই বলেছি এই ছবির জন্য সব কিছু করতে প্রস্তুত ছিলাম। আমাকে যখন মালেক আফসারী ভাই বললো ছবির রিয়েল দৃশ্যের জন্য দুই দিন শুধু পানি খেয়ে থাকতে হবে। অন্য কোনো খাবার খাওয়া যাবে না। ক্ষুধার্ত থাকতে হবে। ক্ষুধার্ত একটা ছেলে দুই দিন না খেয়ে বসে আছে। এমন দৃশ্যের জন্যই এমন আয়োজন। এবং শুট এর সময় তিনটা টেকে শট ওকে করেছি। সো এই কষ্টকে ছবির জন্য আমি মেনে নিয়েছি। আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি ভালো কিছু করার। বাকিটা দর্শক বলতে পারবে। বাবার সঙ্গে করা এই সিনটা যখন আসবে তখন কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারবে না। আমরা তো খুবই ইমোশনাল আমিও ধরে রাখতে পারি নাই।
ইটিভি অনলাইন: এই ছবির মধ্যে এমন কি আছে যে, দর্শক দেখবে?
জায়েদ খান: এই চলচ্চিত্রে একজন দর্শক নিজেকে খুঁজে পাবে। আমরা এই শহরে বা মফস্বলে যেখানেই থাকি না কেন আমাদের জীবনে কিছু না কিছু স্মৃতি আছে। শিশুকাল বা শৈশবের স্মৃতি আছে। এই ছবি মানুষের সেই স্মৃতিকে নাড়া দিবে। সে ছবির মধ্যে নিজেকে খুঁজে পাবে। সে তার অতীতকে দেখতে পাবে।
আর একটি বিষয় বলবো সেটা হলো এই ছবিতে মানুষ নায়ক মান্না ভাইকে খুঁজে পাবে। কোনো সিনেমায় এভাবে একজন আর্টিষ্টকে কেউ তুলে ধরে না। কেউ সে সুযোগও দেয় না। এই ছবিতে সেটা করা হয়েছে। আশা করি দর্শকের ভালো লাগবে। এর গানগুলোও হয়েছে অসাধারণ।
ইটিভি অনলাইন: এই ছবি নিয়ে আপনি কতটুকু আশাবাদী?
জায়েদ খান: আমি শুধু এটুকুই বলতে চাই, ‘অন্তর জ্বালা’ দেখে মানুষকে কাঁদতে হবে। আমিও অভিনয় করতে গিয়ে কেঁদেছি। আমি বিশ্বাস করি ‘অন্তর জ্বালা’ দেখে মানুষের অশ্রু ঝরবে। একজন মানুষ ছোটবেলা থেকে যেভাবে বড় হয়েছে ছবিতে সেটাই দেখানো হবে। এটি একদম মাটি ও মানুষের গল্প। বলতে পারি গ্রামের গল্প এককথায় দেশের গল্প। এখন ছবিটা কেমন হবে সেটা দর্শক বলতে পারবে। তবে এই ছবি করে আমি তৃপ্ত। আমি জানিনা ছবিটা সুপার হিট হবে না মেগা হিট হবে। তবে লাইফে এটুকু বলতে পারবো ‘অন্তর জ্বালা’ ছবিটা আমার।
ইটিভি অনলাইন: আপনার কো-আর্টিষ্টদের সঙ্গে সম্পর্ক কেমন ছিল?
জায়েদ খান: প্রত্যেকের সঙ্গেই ভালো হৃদ্য ছিল। সবাই ভালোটি দেওয়ার চেষ্টা করেছে। সবাই কাজের ক্ষেত্রে ছিল খুবই সহযোগী। অর্থাৎ প্রত্যেকেরই ভালো করার একটা চেষ্টা ছিল। আর আমার ব্যাপারে তো পরিমনি তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেছে এই ছবিতে অন্য এক পরিপক্ক জায়েদকে দেখা যাবে। আমি চেষ্টা করেছি। কাদামাটি ছিলাম, আফসারি ভাই গড়ে নিয়েছেন। সব কৃতিত্ব তার। সর্বশেষ আমি বলবো এই ছবির প্রতিটা সিন কথা বলবে।
/ এআর /