রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন
আবেগাপ্লুত অ্যাঞ্জেলিনা জোলি
প্রকাশিত : ১১:১৬, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ | আপডেট: ১৫:২৭, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। যিনি এখন বাংলাদেশে। গতকাল রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দেখতে বাংলাদেশে এসেছেন তিনি। বাংলাদেশে এসেই কক্সবাজারের টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন অভিনেত্রী। ৪ ফেব্রুয়ারি, সোমবার দুপুর ২টার দিকে টেকনাফ উপজেলার চাকমারকুল রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন জোলি। সেখানে প্রায় তিনঘণ্টা অবস্থানকালে নির্যাতিত রোহিঙ্গা নারী-পুরুষদের সঙ্গে কথা বলেন এবং রোহিঙ্গা শিশুদের সঙ্গে কিছু সময় কাটান জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) এই বিশেষ দূত।
আজ মঙ্গলবার (৫ ফেব্রুয়ারি) কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করছেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কুতুপালং এক্সটেনশন-৪ ক্যাম্পে পৌঁছান এবং সেখানকার শিক্ষা কেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করেন তিনি। পরে কুতুপালং ৩নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের রিলিফ ইন্টান্যাশনাল পরিচালিত স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। একই ক্যাম্পে নির্যাতিত রোহিঙ্গা নারীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের দুর্দশার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেন। দুপুরে কুতুপালং ৪নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হোপ ফাউন্ডেশন পরিচালিত হাসপাতাল পরিদর্শন করার কথা রয়েছে। এছাড়া বিকাল ৩টার দিকে কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-৫ ব্লকে প্রেসব্রিফিংয়ে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
পাঁচ দিনের বাংলাদেশ সফরে তার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও দেখা করার কথা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, এ কার্যক্রমে যোগ দিতে এবং রোহিঙ্গাদের দুর্দশা দেখতে গত বছর বলিউড অভিনেত্রী প্রিয়াংকা চোপড়া এসেছিলেন রোহিঙ্গা শিবিরে। এবার এলেন জনপ্রিয় হলিউড অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি।
ইউএনএইচসিআরের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন শেষে ঢাকায় এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এবং সরকারের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করবেন জোলি। রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে ইউএনএইচসিআর কীভাবে বাংলাদেশ সরকারকে আরো সহযোগিতা করতে পারে, তা নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করবেন এ অভিনেত্রী।
উল্লেখ্য, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমরা জীবন বাঁচাতে ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে ছুটে আসে বাংলাদেশে। কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ার কুতুপালংয়ের রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে আশ্রয় নেয় লাখ লাখ রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশু। এরপর বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠতে থাকে নিরাপদে নিজ দেশে তাদের ফিরিয়ে নেয়ার।
শরণার্থী হিসেবে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া নিপীড়িত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর এ সদস্যদের গল্প সারা বিশ্বের কাছে পৌঁছে দিতে ও তাদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে নানা পদক্ষেপও নেয়া হয়েছে।
টেকনাফের চাকমারকুল ২১নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-ব্লকের বাসিন্দা রোহিঙ্গা নেতা রশিদ উল্লাহ জানান, ‘হলিউডের এই অভিনেত্রী সোমবার দুপুরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-ব্লকে ৩০ জন রোহিঙ্গা নারীর সঙ্গে কথা বলেছেন। এ সময় আবেগাপ্লুত হয়ে ধর্ষণের শিকার নারীদের বুকে জড়িয়ে ধরেন তিনি। জোলি তাদের ধৈর্য ধরার পরামর্শ দেন। একইসঙ্গে রোহিঙ্গা শিশুদের সঙ্গেও কিছুক্ষণ সময় কাটান।’
ওই ক্যাম্পের জি-ব্লকে অবস্থানরত রোহিঙ্গা যুবক জহির আহমদ জানান, ‘অ্যাঞ্জেলিনা জোলি প্রথমে ক্যাম্পে এসে ব্র্যাকের একটি কমিউনিটি সেন্টার পরিদর্শন করেন। সেখানে ব্র্যাকের কর্মকর্তা, রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতা ও বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন তিনি। পরে নির্যাতনের শিকার কিছু রোহিঙ্গা নারীর সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের ছবি তুলে নিয়ে যান। জোলি প্রায় তিনঘণ্টা ক্যাম্পে অবস্থান শেষে হোটেলের উদ্দেশে রওনা হন।’
এসএ/