২০১৯ সালে যেসব তারকাদের হারিয়েছি
প্রকাশিত : ১০:০৮, ১ জানুয়ারি ২০২০ | আপডেট: ১০:২৬, ১ জানুয়ারি ২০২০
মৃত্যু বলতে জীবনের সমাপ্তি বুঝায়। জন্ম নিলেই মরতে হবে। কিন্তু কিছু কিছু মৃত্যু আছে যা অপ্রত্যাশিত। বিশেষ করে পছন্দের মানুষটি যখন হঠাৎ করে না ফেরার দেশে চলে যান, তখন আমরা খুব বেশি আহত হই। ২০১৯ সালে চলচ্চিত্র, সংগীত ও সংস্কৃতি অঙ্গনের অনেকেই চলে গেছেন না ফেরার দেশে। যাদের শূন্যতা কখনও পূরণ হওয়ার নয়।
বিদায়ী বছরে চলে যাওয়া বরেণ্য তারকাদের নিয়ে এই প্রতিবেদন-
আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল :
২০১৯ সালের ২২ জানুয়ারি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান মুক্তিযোদ্ধা, প্রখ্যাত গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। তিনি ৭০ দশকের শেষ লগ্ন থেকে আমৃত্যু সংগীতজগতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। নিজের এই কৃতিত্বপূর্ণ জীবনে পেয়েছেন একুশে পদক ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
শাহনাজ রহমতউল্লাহ :
২০১৯ সালের ২৩ মার্চ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে নিজ বাসায় মারা যান শাহনাজ রহমতউল্লাহ। দীর্ঘ ৫০ বছরের সংগীতজীবনে অসংখ্য কালজয়ী গান গেয়েছেন। সংগীতে অবদানের জন্য একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, বাচসাস পুরস্কারসহ বহু সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন তিনি।
টেলি সামাদ :
বরেণ্য কৌতুক অভিনেতা টেলি সামাদ ২০১৯ সালের ৬ এপ্রিল মারা যান। শুধু অভিনয় নয়, গান ও ছবি আঁকাতেও পারদর্শী ছিলেন তিনি।
সালেহ আহমেদ :
টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রের বর্ষীয়ান অভিনেতা সালেহ আহমেদ মারা যান ২৪ এপ্রিল। ৮৩ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এ তারকা। ১৯৯১ সালে হুমায়ূন আহমেদের নাটক ও চলচ্চিত্রে নিয়মিত অভিনয় শুরু করেন তিনি। এরপর অসংখ্য নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। পেয়েছেন স্বাধীনতা পদক।
আনিসুর রহমান আনিস :
২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল রাজধানীর টিকাটুলীর অভয় দাস লেনের বাসায় মারা যান কৌতুক অভিনেতা আনিসুর রহমান আনিস। আনিস চলচ্চিত্রে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন অভিনেতা নয়, চিত্রসম্পাদক হিসেবে।
সুবীর নন্দী :
একই বছর ৭ মে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের এমআইসিইউতে মারা যান বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী সুবীর নন্দী। বর্ণাঢ্য সংগীত ক্যারিয়ারে অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। দীর্ঘ ৪০ বছরের ক্যারিয়ারে আড়াই হাজারেরও বেশি গান গেয়েছেন সুবীর নন্দী।
মায়া ঘোষ :
এই একই বছর ১৯ মে না ফেরার দেশে চলে যান অভিনেত্রী মায়া ঘোষ। ২০০০ সালে মায়া ঘোষের ক্যান্সার ধরা পড়ে। ২০০৯ সালের দিকে অনেকটা সুস্থ হয়ে ওঠেন। এরপর কিডনি, লিভার ও হাঁটুর সমস্যা দেখা দেয়।
খালিদ হোসেন :
বরেণ্য নজরুলসংগীত শিল্পী খালিদ হোসেন ২০১৯ সালের ২২ মে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তিনি একুশে পদক, নজরুল একাডেমি পদক, শিল্পকলা একাডেমি পদকসহ অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছেন।
মমতাজউদদীন আহমেদ :
প্রখ্যাত নাট্যকার, অভিনেতা ও ভাষাসংগ্রামী মমতাজউদদীন আহমেদ না ফেরার দেশে চলে যান ২ জুন। নাটকে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ১৯৭৬ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ও ১৯৯৭ সালে একুশে পদক লাভ করেন।
নাজমুল হুদা মিন্টু :
চলচ্চিত্র নির্মাতা নাজমুল হুদা মিন্টু ২০১৯ সালের ২ জুন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ‘সূর্য ওঠার আগে’, ‘চৌধুরী বাড়ী’, ‘ডাক পিয়ন’, ‘অনেক প্রেম অনেক জ্বালা’, ‘দিনের পর দিন’, ‘সংঘর্ষ’, ‘মধুমালতি’, ‘ঘরে বাইরে’সহ বেশ কিছু সিনেমা নির্মাণ করেন।
বাবর :
চলচ্চিত্র অভিনেতা, প্রযোজক ও পরিচালক বাবর মারা যান ৬ আগস্ট। তার মৃত্যু হয় ৬৭ বছর বয়সে। তিনি ‘বাংলার মুখ’, ‘রংবাজ’সহ তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।
হুমায়ুন সাধু :
তরুণ নাট্য নির্মাতা ও অভিনেতা হুমায়ুন সাধু। মস্তিস্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর।
আজিজ :
অভিনেতা আজিজ ৬৫ বছর বয়সে বছরের শেষ সময় ২৩ নভেম্বর উত্তরায় নিজ বাসায় মারা যান। তিনি চলচ্চিত্রে ‘কালা আজিজ’ নামে পরিচিত ছিলেন।
মোবারক হোসেন খান :
প্রখ্যাত সংগীতব্যক্তিত্ব মোবারক হোসেন খান মারা যান ২০১৯ সালের ২৪ নভেম্বর। বার্ধক্যজনিত কারণে দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন তিনি। ১৯৬২ সালের ২০ অক্টোবর বাংলাদেশ বেতারের অনুষ্ঠান প্রযোজক হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু হয়। পরে তিনি বাংলাদেশ বেতারের পরিচালক হিসেবে ৩০ বছর কর্মরত ছিলেন। তিনি একুশে পদক ছাড়াও পেয়েছেন স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার ও বাংলা একাডেমি পুরস্কার।
মাহফুজুর রহমান :
দশবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রগ্রাহক মাহফুজুর রহমান খান মারা যান ২০১৯ সালের ৬ ডিসেম্বর। অসংখ্য জনপ্রিয় সিনেমার চিত্রগ্রাহক হিসেবে কাজ করেছেন তিনি।
পৃথ্বীরাজ :
বছরের একেবারে শেষের দিকে না ফেরার দেশে চলে যান তরুণ শিল্পী, সুরকার, সংগীত পরিচালক পৃথ্বীরাজ। তিনি মারা যান ১৫ ডিসেম্বর।
এ ছাড়াও চলচ্চিত্র নির্মাতা হাসিবুল ইসলাম মিজান, মোহাম্মদ জাকির খান, সাইফুল আজম কাশেম, শাহেদ চৌধুরী, মঞ্চ ও ছোট পর্দার অভিনয়শিল্পী তমা খান, মডেল অভিনেত্রী সূচনা ডলি, গীতিকার আহমেদ কায়সার, প্রযোজক ইফতেখারুল আলম, প্রযোজক আওলাদ হোসেন চাকলাদারও একই বছর মৃত্যুবরণ করেছেন।
এসএ/