ডিভোর্স বাড়ছে সমুদ্রের পাখি অ্যালবাট্রাসের
প্রকাশিত : ১৫:১৫, ৩ ডিসেম্বর ২০২১ | আপডেট: ১৫:২০, ৩ ডিসেম্বর ২০২১
ডিভোর্স বা বিচ্ছেদ কখনই কাম্য নয়, তবু বর্তমান সমাজে বিচ্ছেদের হার বাড়ছেই। শারীরিক কিংবা মানসিক, যেকোনও কারণেই হতে পারে বিচ্ছেদ। মানুষের এই স্বভাবটিই যখন কোনও পাখির মাঝে, তখন ব্যাপারটা বিষ্ময়েরই বটে। সম্প্রতি নিউজিল্যান্ডভিত্তিক সংগঠন রয়্যাল সোসাইটির এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে,সামুদ্রিক পাখি অ্যালবাট্রাসদের মধ্যে বিচ্ছেদের হার অনেক বেড়ে গেছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, অ্যালবাট্রাস মানুষের মতই মনোগ্যামি, অর্থাৎ এক সঙ্গীকে নিয়ে জীবন পার করে দেওয়া স্বভাব তার। আলবাট্রসদের প্রেম এত গভীর হওয়ার কারণ জানতে দীর্ঘদিন ধরেই চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা।
তবে সেই উত্তর মেলার আগেই জানা গেলো,তাদের প্রেমে ফাটল ধরছে। তাই বিচ্ছেও বাড়ছে দিন দিন।
সাধারণত এক শতাংশ অ্যালবাট্রাস তাদের জোড়া ভাঙে। তবে এখন গবেষণায় দেখা গেছে, জোড়া ভাঙার হার আট শতাংশ। ১৫ বছর ধরে ফকল্যান্ড দ্বীপের প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার পাখির ওপরে গবেষণা চালিয়েই এই তথ্য পেয়েছেন গবেষকরা। যা এখন উদ্বেগের কারণ।
সাধারণত যখন কোনও অ্যালবাট্রস যুগল সন্তান জন্ম দিতে পারেনা , বা মিলিত হতে পারেনা, কেবল তখনই বিচ্ছেদের পথে এগোয় তারা। তবে এখন এমন কারণ ছাড়াও বিচ্ছেদ হচ্ছে।
এর কারণ হিসাবে মূলত পানির উষ্ণতা বেড়ে যাওয়াকেই দায়ী করছেন গবেষকরা,বলছেন উষ্ণ পানি মানেই কম মাছ, কম খাবার ও প্রতিকূল পরিবেশ।
এমন পরিস্থিতিতে তাদের খুব কম বাচ্চাই বাঁচে। এতে বেড়ে যায় পাখিদের স্ট্রেস হরমোন। তাই খাবার যোগাড়ে আরও দূরে পাড়ি দেয় তার ফলে প্রজনন মৌসুমে সময়মতো ফিরতে পারেনা অনেকেই। এদিকে তাদের সঙ্গীরা অপেক্ষায় থাকতে থাকতে হতাশ হয়ে খুঁজে নেয় অন্য সঙ্গী।
অ্যালবাট্রস বিশাল ডানার পাখি। পাখিদের মধ্যে এরই সবচেয়ে বড় ডানা, দৈর্ঘ্য ১২ ফুট পর্যন্ত হতে পারে। আশ্চর্য ভালো উড়াল দেওয়ার ক্ষমতা রাখে এই পাখি। সমুদ্রের উপর শয়ে শয়ে মাইল উড়ে যেতে পারে। কিন্তু খুব কম শক্তি খরচ করে। এই কৌশল রয়েছে এদের ডানায় লুকিয়ে।
সমুদ্রের হাওয়ায় ওড়ার পর ডানা দুটিকে সম্পূর্ণ প্রসারিত করে আটকে দিতে পারে ঘাড়ে থাকা কলকব্জার মাধ্যমে। ফলে ডানা না নাড়িয়েই সমুদ্রের হাওয়ার স্রোতে ভাসতে ভাসতে তরঙ্গিত এরা উড়ে যায়, শক্তি এর ফলেই সামান্য খরচ হয়।
সূত্র: বিবিসি
এসবি