কাশ্মীরের গোলাপি চা, কী করে তৈরি হয়?
প্রকাশিত : ১৯:১৪, ১০ জানুয়ারি ২০২২
স্বাদে-গন্ধে চেনা চায়ের মতো নয়, বেশ আলাদা। কাশ্মীরের উপত্যকা ছাড়িয়ে যা পাড়ি দিয়েছে পাকিস্তান-আফগানিস্তান, চীনসহ দক্ষিণ এশিয়ার নানা দেশে। এমনকি, সুদূর আমেরিকার মাটিতেও গোলাপি চায়ে চুমুক দিচ্ছেন অনেকে। কী ভাবে তৈরি হয় এই চা? কালো বা দুধসাদার বদলে এটি গোলাপি রঙের হলই বা কী ভাবে?
হিমালয়ের উপত্যকা ছেড়ে দক্ষিণ এশিয়ার বহু রান্নাঘরেই পা রেখেছে গোলাপি চা। কেউ বা আবার একে চেনেন ‘গুলাবি চায়’ বলে। কাশ্মীরের স্থানীয়দের মতে, গোলাপি চা-পানে বেশ উপকারিতাও রয়েছে। এতে মূল উপকরণ বলতে গ্রিন টি, লবণ এবং বেকিং সোডা। চায়ে লবণ থাকার ফলে তা পান করলে পাহাড়ি এলাকায় ডিহাইড্রেশন কম হয়।
গোলাপি চায়ে লবণ এবং বেকিং সো়ডা ছাড়াও আর কী কী উপকরণ রয়েছে? অনেকেই এই চায়ের কাপে ছড়িয়ে দেন স্টার আনিস। অনেকে আবার এতে আধভাঙা বাদাম ছড়িয়ে দেন।
যারা এখনও গোলাপি চায়ে চুমুক দিতে পারেননি, তাদের জন্য এর স্বাদ বর্ণনা করা যাক! খানিকটা তেতো হলেও তাতে রয়েছে নোনতা ভাব। ফলে নিত্যদিনের লিকার টি, বা দুধ-চিনি দিয়ে চায়ে চুমুক দিতে অভ্যস্তদের কাছে এটি অবশ্যই অন্য স্বাদের মনে হবে।
গোলাপি চায়ের স্বাদ যেমন অপরিচিত, তা তৈরির পদ্ধতিও আলাদা মনে হতে পারে অনেকের কাছে। প্রথমে একটি পাত্রে পরিমাণ মতো পানিতে গ্রিন টি এবং এক চিমটি বেকিং সোডা দিয়ে বেশ অনেকক্ষণ ধরে ফোটাতে হবে। বেকিং সোডার কারণেই চায়ের রং গোলাপি হয়। তবে সঙ্গে সঙ্গে তা হয় না। গ্রিন টিতে বেকিং সোডা দিয়ে পানি ফোটালে তা রং বদলে প্রথমে পীতাভ বাদামি রঙের হয়ে যায়। এর পর চায়ে গাঢ় মেরুন রং ধরতে থাকে।
গোলাপি চা তৈরি করতে যেমন পাকা হাতের প্রয়োজন, তেমন এর পিছনে বিজ্ঞানও রয়েছে। বৈজ্ঞানিকেরা জানিয়েছেন, হালকা অ্যাসিডিক এই চায়ে অম্লরোধে সাহায্য করে সোডিয়াম বাইকার্বোনেট। সেই সঙ্গে এর কষাটে ট্যানিনের ঝাঁঝও কমিয়ে দেয়।
গোলাপি চায়ের রং কী করে পরিবর্তিত হয়?
একটি আন্তর্জাতিক পত্রিকার দাবি, 'কাশ্মীরি চায়ে পলিফেনল অনেকটা ফেনোলসালফথালেইন-এর মতো কাজ করে। যেটি ফেনল রেড বলেও পরিচিত।'
চায়ের রং বদলে বার্গন্ডি হওয়ামাত্র সেই রং ধরে রাখতে পাত্রে বরফ বা ঠাণ্ডা পানি ঢালা হয়। এর পর তাতে দুধ মেশালে গোলাপি রং দেখা যায়।
চায়ের রং বদল হওয়ামাত্রই সঙ্গে সঙ্গে তা পরিবেশন করা হয় না। এর পরেও চা তৈরি বাকি। এ বার একটি গর্ত চামচে এই পানীয় ভরে তা চায়ের পাত্র থেকে অন্য পাত্রে বার বার উঁচু-নিচু করে ঢালা হয়। বার বার একই পদ্ধতিতে চা ঢালার ফলে তাতে বাতাস ঢুকে বেশ ফেনা ফেনা হয়ে ওঠে। অনেকটা কফি মেশিনে তৈরি কফির মতো।
গোলাপি চা তৈরি করতে কতটা সময় লাগে?
লন্ডনের এক চা-বিক্রেতার দাবি, পানীয় তৈরির পর তা চামচে ভরে উঁচু-নিচু করে চার ঘণ্টা ধরে বার বার ঢালা না হলে এর নাকি আসল স্বাদই পাওয়া যাবে না!
সূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন
এসবি/