শাড়ি ধার দিচ্ছে ‘শাড়ি ব্যাঙ্ক’, হাসি ফুটছে দুঃস্থ নারীদের মুখে
প্রকাশিত : ২১:১৯, ১১ জানুয়ারি ২০২২ | আপডেট: ২১:৫২, ১১ জানুয়ারি ২০২২
করোনা-১৯ মহামারীতে বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন, অথাভাবে কাটিয়েছেন। সেই বহু মানুষের মধ্যে একজন ভারতের গুজরাটের আনন্দ জেলার ভদরান গ্রামের ভাবনা বেন। গত বছর তিনি কোনও বিয়ের অনুষ্ঠানে যেতে পারেননি ভাল শাড়ি না থাকায়। আর নতুন শাড়ি কেনার মতো আর্থিক সামর্থ্যই ছিল না লকডাউন কালে। কিন্তু ভাবনা এবং তার মত অনেক নারীর মুখে হাসি ফুটিয়েছে ভদরানের ‘শাড়ি ব্যাঙ্ক’। যেখানে শাড়ি ধার দেওয়া হয় বিনা পয়সায়। শর্ত হল, অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পর শাড়িটা যে অবস্থায় নেওয়া হয়েছিল, সেই অবস্থায় গুছিয়ে ধুয়ে কেচে ফেরত দিতে হবে।
পরিচিত কেউ একজন এই ব্যাঙ্কের খবর দিয়েছিল ভাবনাকে। এখন ভাবনার মত ভদরান গ্রামের অন্য বাসিন্দারাও এমন উদ্যোগে মহা খুশি।
শাড়ি ব্যাঙ্কের এক মহিলা কর্মী জানিয়েছেন, "দারুণ সাড়া মিলছে। যারা মহামারীর জেরে গত দু'বছর দারুণ আর্থিক কষ্টে ভুগছেন, তাদের সাহায্য করাই আমাদের উদ্দেশ্য।
দুঃস্থ, দুঃখী নারীরা যখন শুভ অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য মনের মতো শাড়িটি খুঁজে নিয়ে বলেন, এটা নেব, তখন আমাদেরও খুব ভাল লাগে। আমরাও তৃপ্তি পাই। দেশ-বিদেশ থেকে প্রায় ১৫০টা শাড়ি পেয়েছে ব্যাঙ্ক। গ্রামের মহিলারা এখান থেকে শাড়ি নিয়ে পরে, কেচে শুকিয়ে ফেরত দিলেই হলো।"
কীভাবে চলে এই ব্যাঙ্ক? একটি শাড়ি ইউজারের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে ক্রেডিট হয়। ভাল কন্ডিশনে শাড়ি ফেরত দিলে ব্যাঙ্ক পরের বার আরেকটি শাড়ি ধার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। যার মানে, ব্যাঙ্কের মতো ক্রেডিট স্কোর হয়।
ভদরানের বয়স্ক বাসিন্দা শৈলেশভাই প্যাটেল কিছুদিন আগে আমেরিকা গিয়েছিলেন। সেখানে তার দেখা হয় পালানপুরের আদি বাসিন্দা অমরভাই শাহের সঙ্গে। বহু বছর হলো অমরভাই আমেরিকায় আছেন। তিনি আমেরিকার শেয়ার অ্যান্ড কেয়ার সংস্থার বোর্ড মেম্বার। শৈলেশভাই বলছেন, "ওরা আমায় ভদরানে এমন একটা ব্যাঙ্ক গড়ার পরামর্শ দেন। আমেরিকা থেকে ফেরার পর গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনা করি। সবাই রাজি হয়।
শাড়ি ডোনেট করেন নিউইয়র্ক, নিউ জার্সি, পেনসিলভানিয়া, কানেক্টিকটের বসবাসরত ভারতীয়রা।
ভদরান ও আশপাশের এলাকার লোকজনও শাড়ি গিফট করেন। শৈলেশভাই জানাচ্ছেন, যে কোনও জায়গার মানুষই শাড়ি দান করতে পারেন। আমরা শুধু যাদের দরকার, তাদের হাতে তুলে দিয়ে মুখে হাসি ফোটাতে চাই।"
সূত্র: ভয়েস অব আমেরিকা
এসবি