ঢাকা, বুধবার   ০৫ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

মাদক ছেড়ে দাবার নেশায় মত্ত, বদলে গেল গ্রামের নাম!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:১৬, ১৫ মার্চ ২০২২

Ekushey Television Ltd.

গ্রামটির নাম মারোত্তিচাল, যার অবস্থান ভারতের কেরালায়। এই গ্রামের পতন ও উত্থান অবিশ্বাস্য। এককালের মাতাল আর জুয়াড়িদের গ্রামে আজ ঘরে ঘরে দাবা খেলা হয়৷ ক্লাবে, দোকানে, মাঠেঘাটেও৷ হ্যাঁ, একজন মানুষই এই বিপ্লব করেছেন। যুবক উন্নিকৃষ্ণন বদলে দিয়েছেন তার জন্মভূমি গ্রামটিকে। 

পুরো ঘটনা বুঝতে যেতে হবে ফ্ল্যাশব্যাকে। জানতে হবে যুবক উন্নিকৃষ্ণনের ব্যক্তি জীবনের কথাও। আসলে একটা সময় গ্রাম ছেড়ে অল্প দূরের ছোটো শহর কল্লুরে থাকতেন উন্নিকৃষ্ণন।

মারোত্তিচাল সেই সময় মাদকাসক্তের গ্রাম বলেই পরিচিত ছিল৷ কিন্তু কল্লুরে থাকাকালীন দাবা শিখলেন উন্নিকৃষ্ণন৷ মনে মনে ছিল এক সংকল্প! তবে ছোটবেলাতেই দাবার প্রেমে পড়েন তিনি৷  আসলে দাবা শিখবেন বলেই গ্রাম ছাড়েন। থাকতে শুরু করেন কল্লুরে। সংকল্প পূরণ হল যুবকের। ফিরে এলেন গ্রামে৷

স্বপ্ন আর বাস্তব তো এক না, অতএব আয়-উপায়ের জন্য বাড়ির কাছেই একটা চায়ের দোকান খোলেন উন্নিকৃষ্ণন৷ এখান থেকেই বিপ্লবের শুরু। স্থানীয়রা সেই দোকানে চা খেতে আসা-যাওয়া করতেন। এই সুযোগে দাবা নিয়ে নানা মজার গল্প করতেন উন্নিকৃষ্ণন৷

এভাবেই গ্রামবাসীদের অজান্তে তাদের দাবা খেলাটা সম্পর্ক প্রাথমিক ধারণা দিতে থাকেন৷ যদিও শুরুতে যুবক চা বিক্রেতাকে খুব বেশি পাত্তা দেয়নি স্থানীয়রা৷ কিন্তু হাল ছাড়ার পাত্র নন উন্নিকৃষ্ণনও৷

শেষ অবধি কাজে দিল যুবকের গ্রাম বদলের স্ট্র্যাটেজি। শুরুতে এক-দু’জন আগ্রহী হলেন দাবায়৷ তারা দাবা খেলাও শুরু করলেন। ওদের দেখে আরও কয়েকজন, তাদের দেখে আরও অনেকে দাবার নেশায় পড়লেন।

জানা গেছে, উন্নিকৃষ্ণন একাই তার গ্রামের প্রায় সাতশো জনকে দাবা খেলার প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন৷ তাতেই ম্যাজিক ঘটে! মদ, জুয়ার নেশা ছাড়েন মারোত্তিচালের মানুষ, উন্নিকৃষ্ণননের মতোই দাবার প্রেমে পড়ে যান সকলে৷

এমন অবস্থা হয় যে একদিনও দাবা না খেলে থাকতে পারেন না গ্রামের মানুষ৷ ঘটে যায় ‘দাবা’নল! দেখতে দেখতে গ্রামের প্রবীণরাও দাবা খেলার মজা নিতে শুরু করেন। শামিল হন নারীরাও। একেকজন হয়ে ওঠেন পাকা খেলোয়াড়৷

আজ আর চায়ের দোকান নেই। উপার্জনের জীবনেও উন্নতি হয়েছে ‘বিপ্লবী’ উন্নিকৃষ্ণনের। বর্তমানে তিনি একটি রেস্তরাঁর মালিক। তবে নিজের গ্রামেই রেস্তরাঁটি৷ চা-কফি আর টুকটাক খাবার পাওয়া যায় সেখানে। আর? যে কোনও সময় খুলে বসা যায় দাবার বোর্ড। দেওয়া যায় রাজা-মন্ত্রী-হাতি-ঘোড়ার মেধাবী চাল। ইচ্ছে থাকলে কী না হয়! একক প্রচেষ্টাতেও হয়। দেখিয়ে দিয়েছেন ভারতের কেরালার মারোত্তিচালের যুবক।  

সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন

এসবি/ 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি