ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৫ নভেম্বর ২০২৪

বিক্রি কমেছে অন্তর্বাস, মন্দার শঙ্কা আমেরিকায়

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:৪১, ৩ আগস্ট ২০২২

পর পর দুই ত্রৈমাসিকে আমেরিকার জিডিপিতে উদ্বেগজনক ভাবে পতন দেখা দিয়েছে। এর আগে অতিমারি আবহে অর্থনৈতিক মন্দার মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছিল দেশটি। পরে দেশটি ঘোষণা করেছিল মন্দা কাটিয়ে উঠেছে তারা। তবে আবারও জিডিপির পতনে প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কী আবারও অর্থনৈতিক মন্দার পথে রয়েছে বিশ্বের এই উন্নত দেশ? ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করে।

প্রযুক্তিগতভাবে কর্মসংস্থান, ভোক্তা ব্যয়, ব্যক্তিগত আয় এবং উৎপাদনের মাপকাঠি পর্যবেক্ষণ করে বিশেষজ্ঞদের একটি দল জানিয়েছে শীঘ্রই অর্থনৈতিক মন্দার মুখোমুখি হচ্ছে আমেরিকা। একই সঙ্গে বিগত চার দশকের তুলনায় বর্তমানে মূল্যস্ফীতি সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকায় আমেরিকার অনেক বাসিন্দাও মনে করছেন , ইতোমধ্যেই মন্দা দেখা দিয়েছে দেশটিতে।

ফেডারেল রিজার্ভের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অ্যালান গ্রিনস্প্যানের তত্ত্ব অনুযায়ী, আমেরিকায় অর্থনৈতিক মন্দা আসবে কীনা তা বোঝা যায় সে দেশের পুরুষদের অর্ন্তবাস কেনার অভ্যাস দেখে। 

অ্যালানের মতে, আমেরিকার পুরুষেরা যদি হঠাৎ করে অর্ন্তবাস কেনা উল্লেখযোগ্য ভাবে কমিয়ে দেন বা বন্ধ করে দেন তা হলে বুঝতে হবে, দেশে শীঘ্রই মন্দা আসতে চলেছে।

আমেরিকায় ২০০৮ এবং ২০২০ সালের আর্থিক সঙ্কটের সময়ও এই লক্ষণ দেখা গিয়েছিল বলে জানান অ্যালান।

সমীক্ষায় দেখা যায়, বিগত কয়েক মাসে সে দেশের পুরুষদের অর্ন্তবাস কেনার সংখ্যা অনেক কমেছে। আর তা দেখেই মন্দা আসার আশঙ্কা করছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

আমেরিকার জনপ্রিয় পানীয়গুলির মধ্যে অন্যতম শ্যাম্পেন। বাসিন্দারা যে কোনও আনন্দ শ্যাম্পেনের বোতল খুলে উদ্‌যাপন করতে পছন্দ করেন। 

বিশেষজ্ঞদের মতে, শ্যাম্পেন বিক্রি দেখেও বোঝা যায় যে, আমেরিকায় মন্দা আসতে পারে কীনা।

১৯৮০-র দশকের মাঝামাঝি আমেরিকার ওয়াল স্ট্রিট জুড়ে শ্যাম্পেনের বিক্রি বেড়ে গিয়েছিল। ১৯৮৭ সালে সারা বছর ধরে ১ কোটি ৫৮ লক্ষ বোতল শ্যাম্পেন বিক্রি হয়েছিল। এর পরই ১৯৯২ সালে অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখে শ্যাম্পেনের বিক্রি বেশ খানিকটা কমে যায়। এই একই জিনিস বারবার ঘটেছে।

২০০৬ সালেও শ্যাম্পেনের বোতলের বিক্রি অনেক বেড়ে যায়। তবে ২০০৯ সালে বোতলের বিক্রি প্রায় এক কোটি কমে যায়। শ্যাম্পেনের বোতল বিক্রি কমে যায় ২০১২ সালের অর্থনৈতিক মন্দার সময়ও।

২০০০ সালে আমেরিকার অর্থনৈতিক মন্দার সময় প্রসাধন সংস্থা এস্টি লওডার প্রথম ‘দ্য লিপস্টিক এফেক্ট’ শব্দটি ব্যবহার করে। 

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই আর্থিক সঙ্কটের মুখে পড়ে সে দেশের নারীদের মধ্যে লিপস্টিক কেনার প্রবণতা বেড়ে গিয়েছিল।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অর্থনৈতিক মন্দার মুখে আমেরিকার নারীরা দামি দামি প্রসাধন সামগ্রী কেনা বন্ধ করে দিলেও লিপস্টিক কেনার পরিমাণ বাড়িয়ে দেন। যদিও ২০০৮ সালের মন্দার সময়ে এই যুক্তির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। 
দেখা যায়, এই মন্দার সময়ে লিপস্টিকের বিক্রি তিন শতাংশ অবধি কমে গিয়েছিল।

কেউ কেউ এ-ও বিশ্বাস করেন যে, আমেরিকায় বাবা-মায়েরা সন্তানদের ডায়পার কম পরিবর্তন করলে বুঝে যেতে হবে যে, সেই দেশ আর্থিক মন্দার মুখে রয়েছে। আমেরিকায় বাবা-মায়েরা সাধারণত খুব ঘন ঘন বাচ্চাদের ডায়পার বদল করেন। কিন্তু এই ভাবে তারা টাকা বাঁচানোর চেষ্টা করলে বুঝতে হবে পরিবারগুলোর আয় কমেছে এবং খুব শীঘ্রই দেশে অর্থনৈতিক সঙ্কট আসতে চলেছে।

এ ছাড়াও আমেরিকায় কত মানুষ চাকরি হারাচ্ছেন তার উপরও নির্ভর করে সে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কোন জায়গায় রয়েছে। যদি আমেরিকায় খুব বেশি সংখ্যক মানুষ খুব কম সময়ের ব্যবধানে চাকরি হারান, তা হলে ধরে নিতে হবে সে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে পতন দেখা দিয়েছে। এমনটাই মত সে দেশের বিশেষজ্ঞদের।

এমএম/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি