ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪

মুসলিম পরিবারের পূজা দিয়ে শুরু হয় যে দুর্গাপূজা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:০৪, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২

মুসলিম পরিবারের দানে পূজার বোধন, ৫১৯ বছর ধরে সম্প্রীতির চিহ্ন বইছে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের কোদাখাকি দুর্গা। 

এই দুর্গাপূজায় সবচেয়ে আগে পূজা দেয় কোনও না কোনও মুসলিম পরিবার। জনশ্রুতি,  পূজার আগে কোনও না কোনও মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যকে দেবী স্বপ্নে দর্শন দেন।

প্রায় ৬০০ বছর আগে মুসলিম সম্প্রদায়ের এক সদস্যকে স্বপ্নাদেশ দিয়েছিলেন দেবী। আজও সে নিয়মে ছেদ পড়েনি। দুর্গাপূজার বোধনের আগের দিন দেবীর দর্শন পান কোনও না কোনও মুসলিম পরিবারের সদস্য। মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের ‘কোদাখাকি দুর্গাপুজো’ ঘিরে এমনই নানা জনশ্রুতি রয়েছে।

রঘুনাথগঞ্জের লক্ষ্মী জনার্দনপুরের বহুরা গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা রবিউল আলমের দাবি, ‘‘অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্যি। ৫১৯ বছর ধরে এ পূজার বোধনের ঠিক আগের দিন দেবীকে স্বপ্নে দর্শন পায় এলাকার কোনও না কোনও মুসলিম পরিবার।’’ দীর্ঘ দিন পূজার সঙ্গে যুক্ত বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের সদস্য রমেন বন্দ্যোপাধ্যায়। তার দাবি, ‘‘কোন পরিবার থেকে পূজায় কী দান আসবে, স্বপ্নে তা-ও নির্দেশ দেন মা।’’

বস্তুত, ‘কোদাখাকি দুর্গাপূজায়’ সম্প্রীতির চিহ্ন স্পষ্ট। ৫১৯ বছর ধরে পূজার উপাচারেও বদল ঘটেনি। ঐতিহ্য মেনে আজও মুসলিম পরিবারের দেওয়া ভোগ বা কোনও দান প্রথমে দেবীকে উৎসর্গ করা হয়। তার পর অন্যেরা ভোগ ও পূজার দানসামগ্রী উৎসর্গ করতে পারেন দেবীকে।

এই পূজার নামকরণ নিয়েও লোকগাথা রয়েছে। কথিত, এক মহালয়ায় প্রবল বর্ষণে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল এলাকায়। বিঘার পর বিঘা ধানের জমি ডুবে গিয়েছিল। সে রাতেই এক মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যকে দেবী স্বপ্নাদেশ দেন, ভুরুর (কাউন) চালের ভোগ দিয়েই পূজা করতে হবে। সঙ্গে থাকবে কাঁঠাল, ডাঁটা এবং গঙ্গার ইলিশ মাছ। প্রসঙ্গত, ভুরুর আর এক নাম কাউন। তবে প্রাচীনকালে একে কোদা বলেও ডাকা হত। কোদার চালে দেবীর ভোগ দেওয়া হয় বলে এই দুর্গা ‘কোদাখাকি’ নামে পরিচিত।

এই দুর্গাপূজায় সবচেয়ে আগে পূজা দেয় কোনও না কোনও মুসলিম পরিবার। জনশ্রুতি, পূজার আগে কোনও না কোনও মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যকে দেবী স্বপ্নে দর্শন দেন। আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী চলতি বছর স্বপ্নাদেশ পেয়ে ঢাকা থেকে কাউনের চাল নিয়ে গেছেন মুসলিম সম্প্রদায়ের এক সদস্য। বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের সদস্য স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের পূজার এখনও কিছু রেওয়াজ রয়েছে। বোধনের সময় বলি দিয়ে দুর্গাপূজা শুরু হয়। প্রতি দিন ছাগ বলি দেওয়া হয়। ভোগে কাউনের চাল আবশ্যিক। সন্ধ্যায় কোনও আরতি হয় না। প্রদীপের শিখা উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে ঘুরলে সন্ধিপূজা শুরু হয়।’’

সূত্র: আনন্দবাজার 

এসবি/ 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি