ছুটির পর অফিসের ইমেল-ফোন অগ্রাহ্য করতে পারবে অস্ট্রেলিয়ার কর্মীরা
প্রকাশিত : ১৪:৪৫, ২৭ আগস্ট ২০২৪
একবার ভাবুন তো, ছুটির দিনে বস আপনাকে ইমেল করছেন, অথচ আপনি তা দেখেও দেখছেন না। কাজ শেষে অফিস থেকে বের হয়েছেন ঠিক তখন কোনো কাজের মেসেজ, অথচ আপনি তার উত্তর দিচ্ছেন না। এমন হলে পরদিন নির্ঘাত বসের ঝাড়ি খেতে হবে। কিন্তু না, এখন থেকে অস্ট্রেলিয়ায় এমনটা আর চলবেনা। অফিস টাইমের বাইরে আপনি অফিসের ফোন রিসিভ না করলে অথবা মেইলে সাড়া না দিলেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবে না অফিস কর্তৃপক্ষ।
দেশটিতে সোমবার চালু হওয়া নতুন আইন বলছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কাজের সময়ের বাইরে পাঠানো ইমেল না পড়লে বা ফোন না ধরলে সেই কর্মীকে কোনো শাস্তি দেওয়া যাবে না৷
এই আইনের সমর্থকদের মতে, কাজের ফোন বা ইমেল যেভাবে কারো ব্যক্তিগত সময়ে ব্যাঘাত ঘটায়, তার বিরুদ্ধে একটা কড়া বার্তা দেবে৷ করোনা অতিমারির সময়ে সবচেয়ে বেশি ঘেঁটে যায় ঘর ও কাজের স্থলের মধ্যের সীমানা৷ এই ধারাটি বিশেষ করে তার পর থেকে আরো গতি পেয়েছে৷
অস্ট্রেলিয়ার সুইনবার্ন প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর জন হপকিন্স বলেন, ‘‘ডিজিটাল প্রযুক্তি আসার আগে এমন কোনো অনধিকার চর্চা ছিলনা৷ মানুষ কাজ শেষ করে বাসায় যেতেন আর পরের দিন কাজে ফেরা পর্যন্ত কোনো যোগাযোগ থাকত না৷ কিন্তু এখন, ইমেল, মেসেজ, ফোন কল সবই আসতে থাকে কাজ শেষ হবার বহু পরেও, এমনকি ছুটির দিনেও৷’’
অস্ট্রেলিয়া ইন্সটিটিউট গত বছর একটি জরিপ চালায়, যেখানে দেখা যায় যে ২০২৩ সালে অস্ট্রেলিয়ানরা গড়ে ২৮১ ঘন্টা বাড়তি, বেতনহীন কাজ করেছেন৷ এই কাজের আর্থিক মূল্য দাঁড়ায় ১৩০ বিলিয়স অস্ট্রেলিয়ান ডলার অথবা ৮৮ বিলিয়ন মর্কিন ডলার।
ইউরোপ ও ল্যাটিন অ্যামেরিকার কয়েকটি দেশে এমন আইন আগে থেকেই রয়েছে, এই তালিকায় এবারে যুক্ত হলো অস্ট্রেলিয়াও৷
২০১৭ সালে এমন আইন চালু করে ফ্রান্স৷ ২০১৮ সালে একটি সংস্থাকে এই আইনের আওতায় ৬৬ হাজার ইউরো জরিমানাও দিতে হয় এক কর্মীকে তার ফোন সর্বক্ষণ চালু রাখতে বলায়৷
কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার কিছু উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী সংস্থাদের মতে, এই নিয়ম কর্মী ও তাদের উর্ধ্বতন কর্মীদের জন্যেও অস্পষ্টতা সৃষ্টি করবে৷ এতে কাজে বৈচিত্র্য কমবে ও এতে অর্থনীতির ওপর খারাপ প্রভাব পড়বে, বলে তাদের ধারণা৷
সমালোচনা থাকলেও কর্মীদের বেশ কয়েকটি সংগঠন জানান যে, এই আইন কর্মীদের অধিকার নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে৷
সূত্র: ডচে ভেলে
এসবি/