পাউরুটির এক অদ্ভূত জাদুঘর
প্রকাশিত : ০৯:৫০, ২৯ জানুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ১০:৩৫, ২৯ মার্চ ২০১৮
পাউরুটির জাদুঘর। সেটি আবার কেমন? অবাক হলেন? ঘটনা কিন্তু সত্যি। পাউরুটির ইতিহাস নিয়ে একটা জাদুঘর রয়েছে অস্ট্রিয়ায়। যেটি দেখতেও অসাধারণ। অনেকটা পাউরুটির মতো। জাদুঘরটির নান্দনিক স্থাপত্যশৈলী নজর কাড়ে দর্শনার্থীদের। প্রায় ১ হাজার বর্গমিটারজুড়ে একটি পাউরুটি তুলে ধরা হয়েছে এতে।
অদ্ভূত এই জাদুঘরটি অস্ট্রিয়ার লিনৎস শহরের উপকণ্ঠে আস্টেন জেলায় অবস্থিত। এর নাম ‘পানেউম’ জাদুঘর। এর প্রতিষ্ঠাতা পিটার আউগেনডপলার। তিনি মূলত বেকিং কোম্পানির মালিক।
পিটার বলেন, আমরা দর্শকদের দেখাতে চাই, পাউরুটি কিভাবে বিগত ছয় থেকে আট হাজার বছর ধরে মানবজাতির ইতিহাসের ওপর প্রভাব রেখেছে। শুধু খাদ্য নয়- কৃষি, শিল্প, সংস্কৃতি, ধর্মসহ মানুষের জীবনের সব ক্ষেত্রেই রুটির ভূমিকা রয়েছে।
প্রায় ৯ হাজার বছর প্রাচীন ‘গ্রেন স্ল্যাব’ বা শস্যের ফলকের মাধ্যমে মিউজিয়ামে রুটির আদি যুগও ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বিভিন্ন ধর্মীয় ঐতিহ্যে রুটিকে কিভাবে সম্মান দেখানো হয়েছে মিউজিয়ামে তারও দৃষ্টান্ত দেখা যায়।
যেমন, দক্ষিণ আমেরিকা বা প্রাচীন মিসরীয় সভ্যতায়। শিল্পের ক্ষেত্রেও রুটি তৈরির প্রক্রিয়া কিভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, তারও দেখা মেলে এখানে।
জাদুঘর তৈরির উদ্দেশ্য নিয়ে তিনি গণমাধ্যমে বলেন, যে মুহূর্তে কিছুই ছিল না, তখন রুটিই ছিল সম্বল। তা সে যতই খারাপ হোক না কেন। সেটা খেয়ে বেঁচে থাকার উপায় ছিল। পাউরুটি না থাকলেই লোকে বুঝত, আর কিছুই নেই। এটাই পাউরুটির বৈশিষ্ট্য। এ জন্যই তিনি এটি নির্মাণ করেন।
ভিয়েনার আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন স্থপতি সংস্থা কোয়প হিমেলবাউ এ জাদুঘরের নকশা তৈরি করেন। কোয়প হিমেলবাউ সংস্থা তাদের উদ্ভাবনী নকশার জন্য গোটা বিশ্বেই পরিচিত। ফ্রাংকফুর্ট শহরে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সদর দফতর থেকে শুরু করে মিউনিখ শহরের বিএমডব্লিউ ওয়ার্ল্ড, ফ্রান্সের লিয়ঁ শহরে বিজ্ঞান ও নৃতত্ত্ব জাদুঘর ভবনও তাদেরই সৃষ্টি।
‘পানেউম’ জাদুঘর ভবনটি সংগ্রাহকের ব্যক্তিগত প্রদর্শনীর মঞ্চ করে তোলাই ছিল লক্ষ্য। প্রদর্শনীর বস্তুগুলো শুধু কাচের কেসের আড়ালে রাখা হয়নি, দেয়াল ও সিলিংয়েও কিছু শোভা পাচ্ছে। পিটার আউগেনডপলার নিজেই বেশ কয়েক বছর ধরে প্রায় ১ হাজার ২০০ নমুনা সংগ্রহ করেছেন। যেগুলো স্থান পেয়েছে এতে। ভবনের ভেতরে ঘোরানো সিঁড়ি দিয়ে দর্শকরা চারতলার ওপর জাদুঘরের মূল কাঠের কামরায় পৌঁছতে পারেন।
সূত্র : ডেইলি মেইল।
/ এআর /