বিশ্ব শিশু ক্যান্সার দিবস পালিত
প্রকাশিত : ২২:৩৯, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
সারা বিশ্বে প্রতি বছর ১৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব শিশু ক্যান্সার দিবস পালন করা হয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারিভাবে দিবসটি পালন করা হয়। প্রতিবছরের মতো এবারও দেশের বিভিন্ন জায়গায় দিবসটি পালিত হয়েছে।
ক্যান্সার বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বড়দের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শিশুরাও মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু অনকোলজি বিভাগে ২০১০ থেকে পরবর্তী তিন বছর পর্যন্ত ৪৫৫ শিশুকে ক্যান্সার আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। চিকিৎসকরা বলেছেন, সঠিক ডায়াগনস্টিক করা গেলে এ সংখ্যা আরও বাড়বে।
জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মোশারফ হোসেন বলেন, বড়দের পাশাপাশি শিশু-কিশোরদের মধ্যে ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। শিশুদের মধ্যে কোলন ও লিভার ক্যান্সার বেশি হয়। এর অন্যতম কারণ তারা শাক-সবজি খুব কম খায়। ফাস্টফুড ও কোমল পানীয় বেশি খায়। কোমল পানীয়র মধ্যে টক্সিন নামের একটি উপাদান লিভার ক্যান্সার সৃষ্টির জন্য দায়ি। এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে।
জানা যায়, শিশু ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ২০০২ সালে চাইল্ড ক্যান্সার ইন্টারন্যাশনাল (সিসিআই) কর্তৃক এ দিবসটি পালন শুরু হয়। সচেতনতা সৃষ্টি ছাড়াও এ দিবসটির অন্যতম লক্ষ্য হল মৃত্যুহার হ্রাস করা, এবং ক্যান্সার সম্পর্কিত ব্যথা এবং এই রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করা শিশুদের দুর্দশা হ্রাস করা। এ লক্ষ্যে ২০৩০ সালের মধ্যে সারা বিশ্বে ক্যান্সার নির্ণয় করা শিশুদের মধ্যে অন্তত ৬০ শতাংশ বেঁচে থাকার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়।
প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরে শিশুদের জন্য আইসিসিডির থিম হলো `নো মোর পেইন` এবং `নো মোর লস`, তাদের এবং পরিবারের জন্য বেঁচে থাকা।
শিশু ক্যান্সার সম্পর্কে নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-
১. সিসিআই অনুযায়ী, সারা বিশ্বে প্রতি বছর, তিন লাখেরও বেশি শিশুর জন্মের ১৯ বছরের মধ্যে ক্যান্সার ধরা পড়ে। এই শিশুদের মধ্যে প্রায় ১০ জনের ৮ জনই অল্প এবং মধ্যম আয়ের দেশে বাস করে যেখানে তাদের বেঁচে থাকার হার মাত্র ২০ শতাংশ।
২. সারা বিশ্বে প্রতি ৩ মিনিটে একটি শিশু ক্যান্সারে মারা যায়, যদিও ৮০ শতাংশেরও বেশি শিশু ক্যান্সারের সঙ্গে বেঁচে থাকতে পারে এবং মানসম্মত যত্নের সঙ্গে পূর্ণ ও সুস্থ জীবনযাপন করতে পারে।
৩. শিশু ক্যান্সারের মধ্যে সবচেয়ে বেশির ভাগই হলো লিউকেমিয়া (শিশুদের মধ্যে সব ক্যান্সারের এক তৃতীয়াংশ লিকিমিয়া), কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের টিউমার, নিউরোব্লাস্টোমা, নেফ্রাব্লাস্টোমা, মেডেলোব্লাস্টোমা এবং রটিনোব্লাস্টোমা ধরনের।
৪. শিশু ক্যান্সারের মাত্র কয়েকটি পরিচিত ঝুঁকি চিহ্নিত করা হয়েছে এবং এর মধ্যে রয়েছে- গর্ভ, চিকিৎসা পরিস্থিতি, সংক্রমণের সঙ্গে সংক্রমণ, বিকিরণের সঙ্গে যোগাযোগ, পূর্ববর্তী ক্যান্সারের চিকিত্সা, ইত্যাদি।
ডাক্তাররা বিশ্বাস করে, দ্রুত এবং কার্যকর চিকিত্সার মাধ্যমে অধিকাংশ শিশু ক্যান্সার চিকিত্সাযোগ্য। প্রাপ্তবয়স্ক ক্যান্সারের তুলনায়, সাধারণভাবে, শিশুদের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে আরও সফলভাবে চিকিত্সা করা শিশুদের বৃহত্তর অনুপাতের সঙ্গে চিকিত্সা করা হয়। এটি বিশ্বাস করা হয় যে, এই পার্থক্য শৈশবের ক্যান্সার থেরাপির জন্য বেশি প্রতিক্রিয়াশীল এবং এটির কারণে, যখন প্রয়োজন হয় তখন একটি শিশু আরও তীব্র থেরাপি সহ্য করতে পারে।
এসএইচ/