দি ডক্টরস্ (ভিডিও)
চোখের চাপ জনিত গ্লোকমা রোগ ও প্রতিকার
প্রকাশিত : ১৫:৩৭, ১৭ মার্চ ২০১৮ | আপডেট: ১৫:৫৫, ১৭ মার্চ ২০১৮
২০১৮ সালের মার্চ ১১ থেকে ১৭ তারিখ পর্যন্ত পালন করা হচ্ছে ‘বিশ্ব গ্লোকমা সপ্তাহ’। এই দিবসের উদ্দেশ্য হচ্ছে গ্লোকমার কারণে ঘটা অন্ধত্ব নির্মূল করা। নিয়মিত চক্ষু পরীক্ষা করানো ও অপটিক নার্ভ সম্পর্কিত পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জনগনকে সচেতন করা। কোনো ব্যক্তির ২.৩ শতাংশ গ্লোকমার জীবনব্যাপী ঝুঁকি থাকলে নিকট আত্মীয়দের ক্ষেত্রে (FDRs) তার দশ গুন ঝুঁকি থাকে। সুতরাং, FDRs বিষয়ে সচেতন হতে নিয়মিত চক্ষু পরীক্ষা করানো প্রয়োজন |
একুশে টেলিভিশনের (ইটিভি) ‘দি ডক্টরস্’ অনুষ্ঠানে আজকের আলোচনার বিষয়- ‘চোখের চাপ জনিত গ্লোকমা রোগ’।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন- অধ্যাপক ডা. হারুন-উর-রশিদ (বিভাগীয় প্রধান, চক্ষু বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বাংলাদেশ গ্লোকমা সমিতির কার্যকারী পরিষদের সদস্য)।
‘দি ডক্টরস্’ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন- অধ্যাপক ডা. ইকবাল হাসান মাহমুদ।
শ্রুতিলিখন করেছেন- সোহাগ আশরাফ
প্রশ্ন : চোখের চাপজনিত রোগ গ্লোকমা কি?
উত্তর : গ্লোকমা এমনই একটি অসুখ যে অসুখে চোখের অপটিক স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর সঙ্গে চোখের অভ্যন্তরীণ চাপের একটি গভীর সম্পর্ক রয়েছে। আমাদের চোখের সঙ্গে মস্তিষ্কের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে। প্রায় ১২ লাখ জীবন্ত তার দিয়ে অপটিক স্নায়ু গঠিত। সুস্থ স্বাভাবিক দৃষ্টির জন্য সুস্থ অপটিক স্নায়ু প্রয়োজন। গ্লোকমা রোগটি মূলত এ অপটিক স্নায়ুকেই আক্রান্ত করে। চোখের অভ্যন্তরীণ চাপ বৃদ্ধির কারণে যেসব সূক্ষ্ম রক্তনালিকা অপটিক স্নায়ুকে পুষ্টি যোগায় সেগুলো ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায়। ফলে অপটিক স্নায়ু ধীরে ধীরে দুর্বল থেকে দুর্বলতর হতে থাকে, দৃষ্টির পরিধি বা পরিসীমা সংকুচিত হতে থাকে। একপর্যায়ে দৃষ্টিশক্তি লোপ পায় এবং একজন মানুষ অন্ধত্ব বরণ করে। এটিই হচ্ছে গ্লোকমা রোগ।
প্রশ্ন : প্রতিবছর বিশ্ব গ্লোকমা দিবস (গ্লোকমা সপ্তাহ) পালিত হয়? এবছরও পালিত হয়েছে। এবছর প্রতিপাদ্য কি ছিল?
উত্তর : বিশ্ব গ্লোকমা সমিতি এবং বাংলাদেশ গ্লোকমা সমিতির যৌথ উদ্যোগে প্রতি বছর আমরা বিশ্ব গ্লোকমা সপ্তাহ পালন করে থাকি। এবছর আমরা ১১ মার্চ থেকে ১৭ মার্চ এটি পালন করছি। এ বছর মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে- GREEN= Go get your eyes tested for Glaucoma, Save your sight! অর্থাৎ আপনি একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে গিয়ে আপনার চোখটা পরীক্ষা করে জেনেনিন যে আপনার চোখে গ্লোকমা রোগ আছে কি না? এবং আপনার দৃষ্টি সুরক্ষিত রাখুন। আপনি চিরো সবুজ থাকুন, সতেজ থাকুন।
প্রশ্ন : এবছর গ্লোকমা সপ্তাহে আপনারা সমিতির পক্ষ থেকে কি কি পদক্ষেপ নিয়েছেন?
উত্তর : প্রতিবছর বাংলাদেশ গ্লোকমা সমিতি গ্লোকমা সপ্তাহ পালন করে। সেই সঙ্গে বিশেষ একটি দিনকে বেছে নেয় গ্লোকমা ডে হিসেবে। আজ ১৭ মার্চ এই দিনটি আমরা পালন করছি। আমরা বিনামূল্যে চোখের চাপ পরিমাপ করি। গ্লোকমা রোগ সনাক্ত করি। আমরা একটি র্যালী করি। সবাই মিলে আমরা একটা মতবিনিময় সভার আয়োজন করি। উদ্দেশ্য একটি, আর তা হচ্ছে- সবাইকে গ্লোকমা রোগ সম্পর্কে সচেতন করা।
প্রশ্ন : গ্লোকমা রোগ কাদের হওয়ার আশংকা বেশি?
উত্তর : গ্লোকমা যে কোনো বয়সে হতে পারে। তবে কেউ কেউ আছেন যারা অন্যদের চেয়ে বেশি মাত্রায় ঝুঁকির মধ্যে থাকেন। যেমন-
= যাদের বয়স ৩৫ বছর এর উপরে।
= যাদের পরিবারে গ্লোকমার ইতিহাস আছে। গ্লোকমা একটি পারিবারিক রোগও বটে।
= যারা ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন।
= যারা অতিমাত্রায় প্লাস বা মাইনাস পাওয়ারের চশমা ব্যবহার করেন।
= যাদের চোখের চাপ স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে বেশি থাকে।
= যাদের চোখে আঘাতের ইতিহাস আছে।
= যারা দীর্ঘদিন স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ চোখে প্রয়োগ করছেন অথবা মুখে সেবন করছেন।
= যারা দীর্ঘমেয়াদি চোখের জটিল প্রদাহে ভুগছেন।
= যাদের চোখে টিউমার আছে।
= যাদের চোখে অতীতে অপারেশন হয়েছে।
= দীর্ঘদিন যাদের চোখে ছানি রয়েছে।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ভিডিও ক্লিক করুন :
এসএ/