হজমশক্তি বাড়াতে বহেড়া
প্রকাশিত : ১৫:৪৭, ২৪ মার্চ ২০১৮ | আপডেট: ১৫:০৭, ২৫ মার্চ ২০১৮
এ গাছের ফল দু’রকমের হয়-এক প্রকার গোল, আরেকটি ডিম্বাকৃতির। এর ফল ও ফলের শাস ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ড. তপন কুমার দে তার ‘বাংলাদেশের প্রয়োজনীয় গাছ-গাছড়া’ বইয়ে এর ওষুধী গুণাগুণ তুলে ধরেছেন।
ওষুধী ব্যবহার-
১) রক্ত আমাশয় কিংবা পুরাতন আমাশয়ে প্রতিবারে তিন-চার গ্রাম বহেড়া খোসা চূর্ণ প্রত্যহ ২-৩ বার ঠাণ্ডা পানিসহ সেবন করে গেলে বিশেষ ফলপ্রদ।
২) পাতলা পায়খানায় এক গ্রাম পরিমাণ নাগরমুথা চূর্ণ ও তিন গ্রাম পরিমাণ বহেড়ার খোসা চূর্ণ একত্রে দিনে তিন-চার বার ঠাণ্ডা পানিসহ খেয়ে গেলে পাতলা পায়খানা দ্রুত প্রশমিত হয়।
৩) শরীরে কোন স্থান কেটে রক্ত বেরুতে থাকলে উক্ত কাটা স্থানে বহেড়ার মিহি চূর্ণ প্রলেপ দিলে দ্রুত রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়ে যায়।
৪) হজমশক্তি বৃদ্ধি ও ক্ষুধামন্দায় : প্রতিবার পাঁচ-ছয় গ্রাম বহেড়ার খোসা চূর্ণ আহারের পর দিনে দুই বার সেবন করে গেলে হজমশক্তি বৃদ্ধি ও ক্ষুধামন্দায় বিশেষ উপকার হয়।
৫) প্রতিবার পাঁচ গ্রাম বহেড়ার খোসা চূর্ণের সঙ্গে তিন-চার চা চামচ মধু সেবন করলে মাথা ব্যথা ও মস্তিষ্কের দূর্বলতায় বিশেষ ফলপ্রদ।
৬) বহেড়া বীজের শ্বাস অল্প পানি দিয়ে মিহি করে মুখে রাখলে দাঁতের মাড়ির ক্ষত ভালো হয়।
৭) ফুলে যাওয়া কিংবা কেটে গেলে : কোথাও ফুলে গেলে বা কেটে গেলে বহেড়া মিহি করে বেটে প্রলেপ দিলে উপকার পাওয়া যায়।
৮) এই গাছের ফল কোষ্টকাঠিন্য, জন্ডিস, কাঁশি এবং রক্তক্ষরণ বন্ধে ব্যবহৃত হয়।
৯) ফলের ভিতরের অংশ ডায়রিয়া, আমাশয় এবং পাইলস নিরাময়ের জন্য বেশ কার্যকরী।
১০) বীজ থেকে উৎপাদিতে তৈল মালিশ করলে বাত সেরে যায়। বহেড়ার ফল ত্রিফলার একটি উপাদান।
১১) বিরোচক ও সংকোচন ওষুধ হিসেবেও এটি ব্যবহৃত হয়।
১২) দীর্ঘস্থায়ী জ্বর ও শ্বাসনালীর প্রদাহের জন্য এটি ব্যবহার করা হয়।
১৩) চোখের অসুখ এবং বিষাক্ত পোকা-মাকড়ের কামড় ইত্যাদিতে বহেড়া ব্যবহার হয়।
পরিচিতি : বৃহদাকার পত্রমোচি বৃক্ষ। উচ্চতায় ৪০ মিটার। পাতা একান্তর ও ডালের শীর্ষে জড়োভাবে থাকে। পাতা লম্বাটে ১৮-২০ সে.মি.। পাতার বোটা লম্বা। বাকল নীলাভ বা ধূসর ছাই বর্ণের লম্বা, সরু ফাটলযুক্ত। ফুল সবুজাভ সাদা, ডিম্বাকৃতির ৮ সে.মি. লম্বা। শীতকালে পাতা ঝরে যায়। বসন্তকালে পাতা গজায় এবং এ সময় ফুল আসে।
কেএনইউ/এসএইচ/