ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ফিস্টুলা রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:৪৬, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | আপডেট: ১০:২৭, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৮

ডা. এস এম ফজলুল হক

ডা. এস এম ফজলুল হক

পায়ুপথে বিভিন্ন রোগ হয়। ফিস্টুলা বা ভগন্দর এর অন্যতম। এ রোগটি বিভিন্ন কারণে হতে পারে। পায়ুপথের ভেতরে অনেকগুলো গ্রন্থি বা গ্লান্ড থাকে। এই গ্রন্থিতে সংক্রমণের কারণে মলদ্বারের পাশে ফোঁড়া হয়। এই ফোঁড়া একসময় ফেটে গিয়ে ফিস্টুলা হয়।

পায়ুপথের ক্যান্সার অনেকদিন চিকিৎসাবিহীন থাকলে তা ফিস্টুলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে। আবার ফিস্টুলা অনেক দিন চিকিৎসাবিহীন থাকলেও তার মধ্যে ক্যান্সারও হতে পারে।

এই রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তি সর্তক থাকলে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব বলে মনে করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কলোরেকটাল সার্জারী বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. একেএম ফজলুল হক। সম্প্রতি একুশে টিভি অনলাইনকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি একথা বলেন। সাক্ষাতকার নিয়েছেন একুশে টিভি অনলাইন প্রতিবেদক তবিবুর রহমান

একুশে টেলিভিশন অনলাইন:ফিস্টুলা কি?

অধ্যাপক ডাঃ একেএম ফজলুল হক: পায়ুপথে বিভিন্ন রোগ হয়। ফিস্টুলা বা ভগন্দর এর অন্যতম। ডায়ারিয়া, কলেরাসহ মলদ্বালের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে এই রোগ হতে পারে। এছাড়া ইনফেকশন বা ব্যাকটেরিয়া আক্রান্ত হলে এই রোগ হয়ে থাকে। ব্যাকটেরিয়া বা ইনফেকশন কারণে বিভিন্ন সময় ব্যথা অনুভাব করে। দিনে দিনে পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। এতে করে রোগীর উঠতে বসতে কষ্ট হয়।

একুশে টিভি অনলাইন: ফিস্টুলা কি কারণে হয়ে থাকে?

অধ্যাপক ডাঃ একেএম ফজলুল হক: এ রোগটির উৎপত্তি হয় মলদ্বারের বিশেষ ধরনের সংক্রমণের কারণে। মলদ্বারের ভেতরে অনেক গ্রন্থি রয়েছে এগুলোর সংক্রমণের কারণে ফোড়া হয়।এফোড়া এক সময় ফেটে গিয়ে মলদ্বারের চতুর্দিকের, কোনো এক স্থানে একটি ছিদ্র দিয়ে বের হয়ে আসে এবং পুঁজ নির্গত হতে থাকে। এ সংক্রমণের কারণে মলদ্বারে প্রচুর ব্যথা হয়। রোগী সারা দিন ব্যথায় কাতরাতে থাকে।পুঁজ বের হওয়ার পর ব্যথা কমতে থাকে।মলদ্বারে পার্শ্বস্থিত কোনো স্থানে এক বা একাধিক মুখ দিয়ে মাঝে মধ্যে পুঁজ বের হয়ে আসাকে আমরা ফিস্টুলা বা ভগন্দর বলে থাকি।

একুশে টিভি অনলাইন: পাইলসের মতো ফিস্টুলা রোগীর মলদ্বার থেকেও কি রক্ত বের হয়?

অধ্যাপক ডাঃ একেএম ফজলুল হক: ফিস্টুলা আক্রান্ত ব্যক্তির মলদ্বারে আশে পাশে ফোড়া হয়।এটা থেকে পুঁজ বা রক্ত বের হয়।এছাড়া মাঝে মাঝে মলদ্বার থেকেই মাঝে মাঝে রক্ত বের হতে পারে। রক্ত বা পুঁজ বের হলে রোগী একটু আরামবোধ করে। এটা দুই মাস পর পর এই ফোড়া হতে দেখা দেয়। এ রোগে দ্রুত চিকিৎসা না নিলে জটিল আকার ধারণ করে।

একুশে টিভি  অনলাইন: ফিস্টুলা আক্রান্ত হলে কি ধরণের পরীক্ষা-নিরিক্ষা করতে হয়?

অধ্যাপক ডাঃ একেএম ফজলুল হক:শুরুতেই আমরা রোগীর কাছ থেকে রোগের  ইতিহাস জেনে তারপর পরীক্ষা-নিরিক্ষা দিয়ে থাকি। এ রোগ চিকিৎসার আগে প্রক্টোস্কপি, সিগময়ডসকপি, কোলনস্কপি, বেরিয়াম এক্সরে, ফিস্টুলোগ্রাম (খুব গুরুত্বপূর্ণ নয়), আল্ট্রাসনোগ্রাফি ও মলদ্বারের ভেতরে আঙুল দিয়েও পরীক্ষা করা হয়।

একুশে টিভি অনলাইন: শিশুদের ক্ষেত্রে কোলনস্কপি করলে কোনো ধরনের সমস্যা হয় কি না?

অধ্যাপক ডাঃ একেএম ফজলুল হক: ফিস্টুলা আক্রান্ত শিশুদের ক্ষেত্রে কোলনস্কপি করলে কোনো ধরনের সমস্যা হবে না। আমি নিজেই রোজ ৬ থেকে ৭টি শিশুকে কোলনস্কপি করে থাকি। আমরা অভিজ্ঞতার আলোকে আমি বলতে পারে কোন ধরনের সমস্যা হয় না। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে বাবা-মা অনেক ভয় পায়। কোলনস্কপিতে কোনো ধরনের ভয় পাওয়ার কারণ নেই।

একুশে টিভি অনলাইন: ফিস্টুলা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় কি?

অধ্যাপক ডাঃ একেএম ফজলুল হক: মলদ্বারের ভেতরে ফোঁড়া হওয়ার জন্য ফুলে যায় এবং ব্যথা হয়। নিঃসরণ বা পুঁজ পড়া সাধারণত মাঝে মাঝে হয়। কখনও কখনও দু’এক মাস রোগটি সুপ্ত অবস্থায় থাকে। ফোঁড়া দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তার কাছে আসতে হবে। ফোঁড়া ফেটে পুঁজ বের হলে অনেকটা  আরাম বোধ হয়। কিন্তু রোগ ভাল হয় না। আবার দুই মাস পরে এ সমস্যা আবার দেখা দেয়। এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের কাছে আসলে দ্রুত এ রোগ থেকে মুক্তি মেলে।

/ টিআর /

 

 

 

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি