ঢাকা, বুধবার   ১২ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

ডেঙ্গু জ্বর হলে কী করবেন...

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:০৬, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | আপডেট: ১৫:০৭, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ যেন দিন দিন বাড়ছেই। ভাদ্র মাসের শেষ দিকে বৃষ্টি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এডিস মশার বংশবিস্তার বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে কোনোভাবেই নিস্তার মিলছে না ডেঙ্গু কিংবা এই রোগবাহী মশা থেকে। তবে  একটু সর্তক থাকলে ডেঙ্গু থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব বলে মনে করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় মেডিসিন ডিন (বিএসএমএমইউ) বিশিষ্ট চিকিৎসক অধ্যাপক এবিএম আব্দুল্লাহ

একুশে টিভি অনলাইনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ডেঙ্গু একটি ভাইরাস জ্বর। এডিস মশা দ্বারা ডেঙ্গু জ্বরের ভাইরাস ছড়ায়। চার ধরনের ডেঙ্গু ভাইরাস আছে। এগুলো হলো ডেন-১, ডেন-২, ডেন-৩ ও ডেন-৪। এর যে কোনো একটির সংক্রমণে আসলেই ডেঙ্গু জ্বর হয়।।   

ডেঙ্গু জ্বর দুই প্রকারের হয়। এর মধ্যে ক্লিনিক্যাল ডেঙ্গু মোটামুটি সহনশীল হলেও হেমোরেজিক ডেঙ্গু বা হেমোরেজিক ফিভার সবচেয়ে মারাত্মক।

সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হলো-

একুশে টিভি অনলাইন: ডেঙ্গু  জ্বরে আক্রান্ত হলে  করণীয় কি ?

অধ্যাপক এবিএম আব্দুল্লাহ: ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরমর্শ দিতে হবে। ঘরে বসে থাকা যাবে না। জ্বর তিন থেকে চারদিন হলো অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। ডেঙ্গু নিয়ে এমন ভয় পাওয়ার কিছু নেই। নিয়ম মেনে চিকিৎসা নিলে ডেঙ্গু ভাল হয়। এখন ভাইরাস জ্বরসহ যে কোন জ্বরে আক্রান্ত হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে হবে।

একুশে টিভি অনলাইন: ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ

অধ্যাপক এবিএম আব্দুল্লাহ: ডেঙ্গু জ্বরে সাধারণত তীব্রতা বেশি থাকে।সেই সঙ্গে শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা দেখা দেয়। জ্বর ১০৫ ফারেনহাইট পর্যন্ত হয়। শরীরে বিশেষ করে হাড়, কোমর, পিঠসহ অস্থিসন্ধি ও মাংসপেশিতে তীব্র ব্যথা হয়। এছাড়া মাথাব্যথা ও চোখের পেছনে ব্যথা হয়।

জ্বর হওয়ার চার বা পাঁচ দিনের সময় সারা শরীরে লালচে রং দেখা যায়। যাকে বলা হয় স্কিন রং, অনেকটা অ্যালার্জি বা ঘামাচির মতো। এর সঙ্গে বমি বমি ভাব এমনকি বমি হতে পারে। রোগী অতিরিক্ত ক্লান্তিবোধ করে এবং রুচি কমে যায়।

এই অবস্থাটা যেকোনো সময় জটিল হয়ে উঠতে পারে। যেমন অন্য সমস্যার পাশাপাশি যদি শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে রক্ত পড়া শুরু হয়। যেমন: চামড়ার নিচে, নাক ও মুখ দিয়ে, মাড়ি ও দাঁত থেকে, কফের সঙ্গে, রক্ত বমি, পায়খানার সঙ্গে তাজা রক্ত বা কালো পায়খানা, চোখের মধ্যে ও চোখের বাইরে রক্ত পড়তে পারে।

এই রোগের বেলায় অনেক সময় বুকে পানি, পেটে পানি ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। অনেক সময় লিভার আক্রান্ত হয়ে রোগীর জন্ডিস,কিডনিতে আক্রান্ত হয়ে রেনাল ফেইলিউর ইত্যাদি জটিলতা দেখা দিতে পারে।

একুশে টিভি অনলাইন: সাধারণত আমরা জানি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয় এডিস মশার কারণে। এডিস মশা কোন কোথায় জন্ম নেন।

অধ্যাপক এবিএম আব্দুল্লাহ: এসিড মশা নোংরা পানিতে জন্ম গ্রহণ করা করে না। বৃষ্টি হলে বাসা-বাড়ির আঙ্গিনায় কোন পাত্রে পানি জমে থাকলে। এবং তিন থেকে চার দিন তা অতিবাহিত হলে ও পানি থেকে ডেঙ্গুর বংশ বিস্তার লাভ করে । এজন্য লক্ষ রাখতে হবে যাতে বৃষ্টির পানি জমে না থাকে।

একুশে টিভি অনলাইন: ডেঙ্গু মশা বসবাস কোথায় ?

অধ্যাপক এবিএম আব্দুল্লাহ: ডেঙ্গু মশা বাস করে আমাদের বসত বাড়ীতে। বাড়ীর আঙ্গিনা থেকে বেশি মশা বাস করে বড় বড় বাসাগুলোতে। যে কারণে সিটি করপোরেশনের নানা উদ্যোগ তেমন কোন কাজ আসছে না। মানুষের বাসা ফ্রিজের নিচে। ফুলের বাগানের টেবে পানি জমে থেকে এডিস মশা জন্ম গ্রহণ করে। তাই আগে নিজেকে সচেতন হতে হবে। নিজের বাসা বাড়ি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।  তাহলে কিছু  অংশ কমবে।

একুশে টিভি অনলাইন: ধরণ পাল্টিয়েছে ডেঙ্গুর আপনি বলছেন। একটু পরিস্কার করে বলবেন কি

অধ্যাপক এবিএম আব্দুল্লাহ: জ্বর হয় সর্বোচ্চ বেশি মাত্রায়। শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যর্থা অনুভাব করে। ধরণ পাল্টিয়েছে বলতে। এখন  সামান্য একটু জ্বর আসছে। অনেক সময় রোগী নিজেও গুরুত্ব দিচ্ছে না। ফলে অনেক ভাল ধরনের অসুবিধা তৈরি হচ্ছে। তাই আমি বলতে চাই একটু জ্বর হলেই ঘরে বসে না থেকে ডাক্তারের চিকিৎসা নিতে হবে। তাহলে  ঠিক হয়ে যাবে।

একুশে টিভি অনলাইন: চিকনগুনিয়া একবার আক্রান্ত হলে আর হয় না ডেঙ্গুর কি এমন হয়।

অধ্যাপক এবিএম আব্দুল্লাহ: চিকনগুনিয়া একবার আক্রান্ত হলে আর জীবনে আক্রান্ত হয় না। কিন্ত ডেঙ্গু এমন  না। একজন মানুষকে চার বার আক্রান্ত হয়। প্রথমবার আক্রান্ত রোগী তেমন গুরুত্বভাবে আক্রান্ত হয় না। প্রথমবার থেকে দ্বিতীয় বার রোগের তীব্রতা বেশি বাড়তে থাকে। এভাবে চারবারে আরও তীব্রতা বাড়ে।

একুশে টিভি অনলাইন: ডেঙ্গু থেকে রক্ষা পেতে আমাদের করণীয় কি?

অধ্যাপক এবিএম আব্দুল্লাহ: ডেঙ্গু থেকে রক্ষা পেতে প্রথমে নিজেদের সচেতন করতে হবে। এডিস মাশা যাতে বিস্তার লাভ  না করতে পারে। সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। বিশেষ করে মিডিয়াগুলো এবিষয় অনুষ্ঠান সম্প্রচার করতে পারে। বৃষ্টি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির আঙ্গিনা পরিস্কার করে ফেলতে হবে। বাসার কোথাও যাতে পানি না জমে থাকতে পারে সেদিন লক্ষ রাখতে হবে।

একুশে টিভি অনলাইন: মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

অধ্যাপক এবিএম আব্দুল্লাহ: একুশে টিভি পরিবারকেও ধন্যবাদ।

/ টিআর / এআর

 

 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি