ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪

স্তন ক্যান্সার নির্ণয়ের ঘরোয়া পদ্ধতি: ডা. মো. হাবিবুল্লাহ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৪১, ১৭ অক্টোবর ২০১৮ | আপডেট: ১৩:২৬, ২৮ অক্টোবর ২০১৮

ডা. হাবিবুল্লাহ

ডা. হাবিবুল্লাহ

দেশে প্রতিবছর স্তন ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে প্রায় ২২ হাজার নারী প্রাণ হারান। অসচেতনতাই এর মূল কারণ। একটু সচেতন হলেই এই ক্যান্সার থেকে আমরা বাঁচতে পারি। এমনকি ঘরে বসেই আপনিই নির্ণয় করতে পারবেন স্তনে ক্যানসার হয়েছে কি-না? আসুন জেনে নিই সেই পদ্ধতি।

স্তন ক্যান্সার নির্ণয়ের ঘরোয়া পদ্ধতি

প্রতিমাসে ঋতুবতী নারীদের মাসিক শেষ হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে এ পরীক্ষা করলে সবচেয়ে ভালো হয়। কারণ, সে সময়ে স্তন্ কিছুটা হালকা হয়ে থাকে এবং ব্যথা কম হয়। যাদের ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে গেছে অথবা জরায়ু অপারেশন হয়েছে তারা মাসের যেকোনো একটি দিন বেছে নিতে পারেন। মনে রাখার সুবিধার্থে যে কোন একটি উল্লেখযোগ্য তারিখ ঠিক করে নিতে পারেন।

পরীক্ষা স্থানের সীমানা

স্তন্য টিস্যুর উপরের দিকের কণ্ঠহাড থেকে নিচে ব্রা লাইন এবং বুকের মধ্যভাগ হতে বগলের নিচ পর্যন্ত পরীক্ষা করে স্তন ক্যান্সার নির্ণয় করা হয়। প্রতি মাসে নিজে পরীক্ষা করার সময় এই পুরো এলাকাই ভালোভাবে লক্ষ্য করতে হবে।

প্রথমত

আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে পর্যাপ্ত আলোর মাঝে দু’বাহু দেহের দু’পাশে ঝুলিয়ে দাঁড়াতে হবে;

দু’বাহু মাথার উপরে বা পেছনে উচিয়ে ধরতে হবে;

আরও পড়ুন : স্তন সুন্দর ও আর্কষণীয় করার উপায়

দু’হাত কোমরে চেপে দাঁড়াতে হবে;

হালকা করে স্তনের বৃন্ত চেপে দেখতে হবে, কোন রস বের হয় কি-না;

 লক্ষ্য করার বিষয়

স্তনের আকার, আকৃতি ও রং এর পরিবর্তন হচ্ছে কি-না;

স্তনের ত্বকের কোনো পরিবর্তন (পুরু বা পাকা কমলার খোসার মত) আছে কিনা;

স্তনের বোঁটা ভিতরের দিকে ডেবে গেছে কিনা;

স্তনের বোঁটা দিয়ে নিঃসৃত রসের রং কি এবং রক্ত বের হয় কি-না;

এমনটি হলে বুঝতে হবে স্তন ক্যান্সার হয়েছে।  

দ্বিতীয়ত:

স্পর্শ করে অনুভব করুন

দুই অবস্থানে (বিছানায় শুয়ে এবং গোসলের সময়) এ পরীক্ষাটি দুইবার করতে হবে। বিছানায় শুয়ে ডান স্তন্য পরীক্ষা করার সময় ডান কাঁধের নিচে ছোট বালিশ বা তোয়ালে ভাঁজ করে দিতে হবে যাতে বুক ও স্তন্ মোটামুটি একই সমান্তরালে থাকে। তেমনিভাবে বাম স্তন্ পরীক্ষার সময়ও কাঁধের নিচে বালিশ বা তোয়ালে ব্যবহার করতে হবে। আবার গোসলের সময় হাতে সাবান মেখে পরীক্ষা করতে হবে। ডান স্তন্ পরীক্ষা করার সময়ে ডান হাত মাথার উপর রেখে বাম হাত ব্যবহার করতে হবে এবং বাম স্তনের জন্য বাম হাত মাথার উপরে রেখে ডান হাত দিয়ে পরীক্ষা করতে হবে।

কোনো অসঙ্গতি থাকলে তা আঙ্গুলের স্পর্শে সহজেই অনুভূত হয়। প্রথমে একটু হালকা চাপ, পরবর্তীতে আরও একটু ভারী চাপ এবং তৃতীয় পর্যায়ে বেশ জোরে চাপ দিয়ে স্তন্য টিস্যু সম্বলিত পুরো এলাকা পরীক্ষা করতে হবে। স্তন্য টিস্যুতে চাপ রাখা আঙ্গুলের প্যাড (ঘুরন্ত লাটিমের মত) একটি অক্ষের উপর কয়েকবার করে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে অনুভব করুন।

সব ক্যান্সারই টিউমার, সব টিউমার ক্যান্সার নয়. স্তনে পিন্ড বা চাকা হলে যেমন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তেমনি সব চাকাই যে ক্যান্সার, তাও কিন্তু নয়।

পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দেখা  গেছে যে, স্তনের চাকার ক্ষেত্রে শতকরা ১০ ভাগ শেষ পর্যন্ত ক্যান্সার হিসাবে চিহ্নিত হয়, বাকি ৯০ ভাগই বিনাইন টিউমার বা অন্য কোন সাধারণ রোগ যা সহজেই নিরাময় করা সম্ভব। সুতরাং সঠিক পরীক্ষার মাধ্যমে রোগের ধরণ জানা অত্যন্ত জরুরী।

পরামর্শদাতা : ডা. মো. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন

সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান

ক্যান্সার ইপিডেমিওলজি বিভাগ জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইন্সটিটিউট।

আরও পড়ুন : মেনোপোজ হলে স্বামীর সঙ্গে মেলামেশা করা যায় যেভাবে: ডা. কাজী ফয়েজা

মাসিক পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে কী চিকিৎসা: ডা. কাজী ফয়েজা

সাদা স্রাব গেলে কী করবেন : ডা. কাজী ফয়েজা

দীর্ঘদিন পিল খেলে কী পরে সন্তান হয় না: ডা. কাজী ফয়েজা (ভিডিও)


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি