ঢাকা, শুক্রবার   ১৪ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

অ্যারিদমিয়া কী, প্রতিকার কীভাবে : ডা. সোহরাবুজ্জামান

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:০৮, ২৯ অক্টোবর ২০১৮ | আপডেট: ১৫:২২, ২৯ অক্টোবর ২০১৮

ডা. সোহরাবুজ্জামান

ডা. সোহরাবুজ্জামান

Ekushey Television Ltd.

প্রতি মিনিটে স্বাভাবিক হৃদস্পন্দনের মাত্রা ৬০ থেকে ১০০- এর কম বা বেশি হলে কিংবা দুটিই যদি ঘটে, তবে সেটি অ্যারিদমিয়ার লক্ষণ। সাধারণত হৃদস্পন্দন উৎপাদনকারী বৈদ্যুতিক সংকেত কোনোভাবে বাধা পেলে বা দেরি হলে তখনই এই জটিল হৃদস্পন্দনের উদ্ভব হয়।

বৈদ্যুতিক সংকেত যে বিশেষ কোষ থেকে উৎপন্ন হয়, তা ঠিকমতো কাজ না করলে বা হৃদয়ের ভেতর দিয়ে ঠিকমতো প্রবাহিত হতে না পারলে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়। শুধু এ রোগের আমেরিকাতেই প্রতি বছর প্রায় ৩ লাখ রোগী মারা যায়। একটু সচেতন হলে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

অ্যারিদমিয়ার উপসর্গ

এই রোগে আক্রান্ত হলে নানা উপসর্গ লক্ষ্য করা যায়। যেমন- বুক ধড়ফড়: এক্ষেত্রে হৃদস্পন্দন খুব দ্রুত হয়। যা অনেক ক্ষেত্রে তেমন ক্ষতিকারক হয় না এবং চিকিৎসা নেওয়ার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু এ ধরনের সমস্যা যদি বারবার দেখা দেয় তখন বুঝতে হবে যে এটা হৃদয়ের অস্বাভাবিক বৈদ্যুতিক সর্ট সার্কিট-এর কারণে হচ্ছে। এলেকট্রেফিজিওলজি স্টাডির মাধ্যমে তার সঠিকভাবে নির্ণয় করে ওষুধ বা রেড়িও ফ্রিকুয়েনসি অ্যাবলেশন এর মাধ্যমে চিকিৎসা করা দরকার।

অজ্ঞান  হওয়া/ মুর্ছা যাওয়া:

অজ্ঞান হওয়া বা মুর্ছা যাওয়া অনেক রোগীর সাধারণ ঘটনা, এবং অনেক ক্ষেত্রে একে স্নায়ুরোগ মনে  করা হয়। কিন্তু এতে হৃদয় ও রক্ত প্রবাহ কমে যাওয়া। এবং অস্থায়ীভাবে অজ্ঞান হওয়া। এক্ষেত্রে স্নায়ু সমস্যার চিকিৎসা খুবই কম কার্যকরী কয়। এই সময় রোগীর মধ্যে কিছু লক্ষণ দেখা যেতে পারে। যেমন মাথা ব্যাথা, হালকা বোধ করা। অবসাদ প্রচুর ঘাম হওয়া। বুক ধড়ফড় করা, দুর্বলতা এবং রোগী পানিশূণ্যতা রক্তস্বল্পতা ইত্যাদি উপসর্গগুলোকে আরো বাড়িয়ে দেয়।

কেন হয় অ্যারিদমিয়া

ব্যক্তিবিশেষে কিছু কাজের কারণে এই উপসর্গগুলো লক্ষ করা যায়। যেমন দীর্ঘক্ষণ ধরে একইভাবে দাঁড়িয়ে থাকলে। এককথায় লাইনে দাড়িয়ে থাকার মতো। দীর্ঘক্ষণ উষ্ণ ও আর্দ্র পরিবেশে থাকলে। মানসিক আঘাত পাওয়া- যেমন ভয় পাওয়া, দু:খের সংবাদ শোনা, রক্তাক্ত অবস্থা দেখা ইত্যাদি। কারো কারো খাওয়ার পরপরই  এই উপসর্গ দেখা দেয়। কারণ তখন পাকস্থলিতে রক্ত সরররাহ বেশি প্রয়োজন হয়। ফলে মস্তিক রক্ত প্রবাহ বেরে যায়।

হার্টে ব্লক দেখা দেয়

অবশ্যই এরোগের কারণে হার্ট ব্লক দেখা দিতে পারে। স্বাভাবিক তড়িৎ প্রবাহের গতিপথে তড়িৎ সংকেতের ধীরগতি বা বাধাপ্রাপ্ত হলে হার্ট ব্লক বল হয়ে থাকে। এবং এতে হৃদস্পন্দন কমে যায়। অনেক ক্ষেত্রে দুর্বলতা, অবসন্নতা এবং অজ্ঞান হওয়া ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এই ধরনের রোগীর হৃদযন্ত্রে পেসমেকার স্থাপন করা উচিত।

যারা বেশি আক্রান্ত হয়

ধূমপান, অতিরিক্ত মদ্যপান, বিশেষ কিছু ওষুধ সেবন, ক্যাফেইন, প্রেসক্রিশপন ছাড়া ওষুধ সেবন ইত্যাদি অ্যারিদমিয়ার মূল কারণ।

চিকিৎসা

এ ধরনের রোগীর ক্ষেত্রে চিকিৎসা ছাড়াই সাধারণ কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চললে এবং জীবনযাপনে পরিবর্তন আনলেই হৃস্পন্দনের মাত্রা ঠিক হয়ে যায়। কারো কারো ক্ষেত্রে শুধু ওষুধ সেবনে ফল পাওয়া যায়। তবে কোনো কোনো অ্যারিদমিয়া সত্যি ভয়ঙ্কর। সেসব ক্ষেত্রে রোগীর সার্জারির প্রয়োজন ।

পরামর্শদাতা : ডা: আ প ম সোহরাবুজ্জামান

 ল্যাবএইড হাসপাতালের সিনিয়র কন্সালটেন্ট ও কার্ডিওলজিস্ট

কার্ডিয়াক ক্যাথ ল্যাব ও হার্ট রিদম সার্ভিসেসের পরিচালক।

টিআর/ এআর


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি