হার্ট অ্যাটাক রোধে রাখতে হবে ওজন নিয়ন্ত্রণে: ডা. তৌহিদুর রহমান

ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকলে অনেক রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন ডা. তৌহিদুর রহমান ফারুক। তিনি বলেন, অামরা যদি একটু কর্মঠ হই তাহলে অামাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে, ডায়াবেটিস হবে না বা হলেও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারব, উচ্চ রক্তচাপ হবে না। সর্বোপরি অামাদের হার্ট ভালো থাকবে। হৃদরোগ হবে না। হার্টে ব্লক ধরা পরবে না। হার্ট অ্যাটাকও হবে না।

ডা. তৌহিদুর রহমান ফারুক বর্তমানে রাজধানীর মেডিনোভা মেডিকেল সার্ভিসেসের মালিবাগ শাখায় কার্ডিওলজিস্ট হিসেবে মেডিসিন, হৃদরোগ, বাতজ্বর ও ডায়াবেটিক রোগীদের পরামর্শ ও চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন।

তিনি বলেন, অামরা প্রাত্যহিক জীবনে একটু সচেতন হলে চলাফেরায় কিছু নিয়ম মেনে চললে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। যেমন- অামরা কোনো ভবনে দুই তিন তলা উঠতে গেলে সিঁড়ি ব্যবহার না করে লিফট ব্যবহার করি। অাবার যখন পাঁচ-ছয় তলা থেকে নামব তখনো সিঁড়ি দিয়ে না নেমে লিফটের অপেক্ষা করি। অফিসে পানি বা চা খাব? তার জন্য বা চা বেল টিপে পিয়ন ডাকি। অথচ এই কাজগুলো নিজেরা করা সম্ভব। সামান্য এই পরিশ্রমের ফলে ভালো থাকবে অামাদের হার্ট। কেননা, এই পরিশ্রমে অামাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে। উচ্চ রক্তচাপ হবে না। ডায়াবেটিস দূরে থাকবে। সুতরাং হার্টও ভালো থাকবে। হার্ট এ্যাটাক হবে না, হার্টে ব্লকও ধরা পড়বে না।

হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. তৌহিদুর রহমান ফারুক আরও বলেন, অামরা অাগে দেখতাম, যাদের হার্টের সমস্যা হতো, হার্ট এ্যাটাক হতো, হার্ট ব্লক হতো তারা কমবেশী সবাই চল্লিশোর্ধ্ব। অামরা যখন জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে ট্রেনিং করেছি বা কাজ করেছি তখন সাধারণত বয়স্ক রোগীরাই অামাদের কাছে অাসত। কিন্তু এখন খুব অল্প বয়সে এমনকী ২৩ -২৪ বা ২৭-২৮ বছরের রোগীরাও রোজ অাসছে। অনেক ক্ষেত্রে তারা মারাও যাচ্ছে। অনেক রোগী পাই যাদের ডায়াবেটিস নাই, উচ্চ রক্তচাপ নাই, সিগারেটও খায় না। কিন্তুু হঠাৎ করে রাতে বুকে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করছে। এর কারণ তাদের অতিরিক্ত ওজন।

একুশে টেলিভিশন অনলাইনের সঙ্গে অালাপকালে ডা. তৌহিদুর রহমান ফারুক বলেন, কেন তারা এমন সমস্যায় অাক্রান্ত হচ্ছে বা মারা যাচ্ছে? তার অন্যতম প্রধান কারণ হলো ওজন বেড়ে যাওয়া। অত্যাধিক ওজন যাদের বা যাদের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি, অামার দেখায় তারা অল্প বয়সে হার্টের সমস্যায় মারা যাচ্ছেন। তাদের হার্টে ব্লক ধরা পড়ছে। সুতরাং ওজন নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।

ডা. ফারুক অারও বলেন, অামরা যখন অাশেপাশে বাজারে বাজার করতে যাই, তখন যাওয়া অাসার সময় অামরা রিকসা ব্যবহার করছি। তা না করে অামরা নিজের হাতে বাজারটা নিয়ে হেঁটে বাজারে যেতে পারি বা বাজার থেকে হেঁটে বাসায় ফিরতে পারি। নিয়মিত এই চর্চাটাও অামাদের হার্ট ভালো রাখতে পারে।

ডায়াবেটিস বেড়ে যাওয়ার পেছনে লাইফ স্টাইলকে দায়ী করে ডা. তৌহিদুর রহমান ফারুক বলেন, এখন ডায়াবেটিসের প্রকোপ অনেক বেড়ে গেছে। তরুণ বয়সেও অনেকের ডায়াবেটিস ধরা পড়ছে। অামরা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণও করছি না। ডায়াবেটিস বেড়ে যাওয়ার পেছনেও ওজন বৃদ্ধি হওয়া দায়ী। দায়ী অামাদের লাইফস্টাইল।

একুশে টেলিভিশন অনলাইনকে তিনি বলেন, এমন লাইফস্টাইলে অভ্যস্ত হচ্ছি যা অামাদের ইনএ্যাক্টিভ করছে। অামরা সময়ের ব্যবধানে ধীরে ধীরে অলস হচ্ছি। অলস জীবনযাপন অামাদের উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসের জন্য যেমন দায়ী তেমনি দায়ী হার্টে ব্লক হওয়ার জন্য। এ সমস্যা রোধে অামাদেরকে অারেকটু সচেতন ও কর্মঠ হওয়া প্রয়োজন।

অাঅা/ এসএইচ/