মেডিটেশন হৃদরোগ নিরাময়ে কার্যকর
প্রকাশিত : ১৯:২০, ১৭ জুলাই ২০২১ | আপডেট: ১৯:২৯, ১৭ জুলাই ২০২১
অসুস্থ মানুষের প্রধান চাওয়া থাকে একটাই—সুস্থতা। নিরাময়ের জন্যে আসলে প্রথম প্রয়োজন সুস্থতার এই আকুতি। দেখা গেছে, এই আকুতি যার মধ্যে যত তীব্র ও প্রবল, তার নিরাময়ও ঘটে তত দ্রুত।
খ্যাতনামা মেডিকেল জার্নাল ল্যানসেট-এ প্রকাশিত একটি নিবন্ধে বলা হয়েছে, ক্যান্সারে ভুগছিলেন এমন রোগীদের মধ্যে যারা তাদের ক্যান্সার নিয়ে তেমন আতঙ্কিত ছিলেন না কিংবা ক্যান্সারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্যে যাদের ভেতর এক ধরনের লড়াকু মনোভাব পরিলক্ষিত হয়েছে, তাদের সেরে ওঠার হার অন্যদের চেয়ে তুলনামূলক বেশি।
এমনই একজন হলেন জিম। কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে জিমের অপারেশন করলেন ডা. বার্নি সিজেল। কেমোথেরাপি দেয়া হলো। তারপরও চিকিৎসকদের মতে তার বাঁচার সম্ভাবনা আর বড়জোর ছয় মাস। কিন্তু জিম ছিলেন ভীষণ লড়াকু মনের এক মানুষ। তিনি ব্যাপারটাতে তেমন ভয়ই পেলেন না এবং সমস্ত পরিসংখ্যানকে মিথ্যা প্রমাণ করে তিনি বেঁচে ছিলেন পরবর্তী কয়েক দশক।
ডা. বার্নি সিজেলের আরেকজন রোগী আর্ভিং। পেশায় তিনি ছিলেন একটি প্রতিষ্ঠানের ফিন্যান্সিয়াল এডভাইজার। পেশাগত কারণে পরিসংখ্যান নিয়েই ছিল তার কাজ-কারবার। লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে একসময় অনকোলজিস্টের কাছে গেলেন তিনি। অনকোলজিস্ট সব শুনে পরিসংখ্যান দেখে বললেন, এ রোগে খুব বেশিদিন বাঁচার সম্ভাবনা নেই।
এমনিতেই এ ধরনের কথা শুনে রোগীরা হতোদ্যম হয়ে পড়েন। আর্ভিংয়ের ক্ষেত্রে সেটা হলো আরো প্রকট। বেঁচে থাকার জন্যে ন্যূনতম চেষ্টা বা নিরাময়ের সম্ভাবনা—এ দুটোই অযৌক্তিক মনে হলো তার কাছে।
পরিসংখ্যানটাই তার কাছে হয়ে উঠল একমাত্র সত্য এবং সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য। তিনি ভাবলেন, আমার পুরো জীবনটাই কেটেছে পরিসংখ্যান নিয়ে আর সেই পরিসংখ্যানই বলছে যে, আমার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ, তবে আর বাঁচার উপায় কী? হাল ছেড়ে দিয়ে একসময় তিনি বাড়ি ফিরে যান এবং এর অল্প কদিন পরই মারা যান।
এই যে বেঁচে থাকার ইচ্ছা, বেঁচে থাকার স্বপ্ন এবং আকুতি—সুস্থতার জন্যে এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। আর এ কারণেই নিরাময়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকরী প্রক্রিয়া হচ্ছে ইমেজ থেরাপি বা নিরাময়ের মনছবি।
লেখাটি ডা. মনিরুজ্জামান ও ডা. আতাউর রহমান এর লেখা এনজিওপ্লাস্টি ও বাইপাস সার্জারি ছাড়াই ‘হৃদরোগ নিরাময় ও প্রতিরোধ’ শীর্ষক বই থেকে নেয়া।
আরকে//