হৃদরোগ তথা লাইফস্টাইল ডিজিজ নিরাময়ে প্রয়োজনীয় ইয়োগা—উজ্জীবন
প্রকাশিত : ১৬:১১, ৪ আগস্ট ২০২১
য়োগা হচ্ছে মনোদৈহিক ব্যায়াম। ব্যায়ামের সময় নির্দিষ্ট অঙ্গের সুস্থতার মনছবি শরীরের সাথে মনের শক্তির সংযোগ সাধন করে। এর ফলে চর্চাকারী দ্বিগুণ ফল লাভ করে থাকেন।
উজ্জীবন
ব্যায়াম শুরু করার পূর্বে শরীরটাকে উজ্জীবিত করা বা ‘ওয়ার্ম-আপ’ করে নেয়া ভালো। দেহকে একটু উজ্জীবিত করে নিলে দেহ নমনীয় হবে, পরবর্তী আসনগুলো করা সহজ হবে। ১৫ ধাপে বিভক্ত এ অনুশীলনীর মাধ্যমে পেশি ও জয়েন্টের জড়তা কেটে যাবে, ব্যায়াম ও আসনের জন্যে প্রস্তুত হয়ে উঠবে আপনার শরীর। যে-কোনো ব্যায়ামের আগেই একটু ওয়ার্ম-আপ প্রয়োজন। এই ১৫ ধাপের অনুশীলন শরীরকে সুন্দরভাবে উজ্জীবিত করে বলে একে ‘উজ্জীবন’ বলা হয়। এই অনুশীলনকালে দম স্বাভাবিক থাকবে।
উজ্জীবনের ১৫ ধাপ
পদ্ধতি : দুই পায়ের মাঝখানে চার আঙুল ফাঁক রেখে দুহাত শরীরের দুপাশে রেখে বুক টান করে সোজা হয়ে দাঁড়ান।
১. বুক টান করে সোজা হয়ে দাঁড়ানো অবস্থায় দুহাত সোজা ওপরে তুলুন। খেয়াল রাখুন আপনার শরীরের ওজন যেন দুই পায়ের ওপর সমানভাবে পড়ে। কোনো দিকে কাত হবেন না বা কোনো পায়ে ভর বেশি দেবেন না।
২. ধীরে ধীরে হাত ও মাথা পেছন দিকে নিতে থাকুন। কোমর থেকে মেরুদÐ পেছন দিকে বেঁকে যাবে। হাঁটু ভাঙবে না। পা সোজা থাকবে। ঘাড় থাকবে শিথিল। যতদূর সম্ভব শরীর পেছন দিকে বাঁকিয়ে দিন।
৩. পুরো সামনের দিকে ঝুঁকে পড়–ন। কপাল যতদূর সম্ভব হাঁটুর কাছাকাছি নিয়ে আসুন। হাতের আঙুল মেঝে স্পর্শ করবে।
৪. হাঁটু ভাঁজ করে কোমর ও মাথা মাটির সমান্তরালে নিয়ে আসুন। হাতের আঙুল ও করতল এবার সুন্দরভাবে মেঝে স্পর্শ করবে। হাতের ওপর কিছুটা ওজন থাকবে।
৫. দুহাতের ওপর ভর দিয়ে প্রথমে ডান পা পেছন দিকে নিন।
৬. এরপর বাম পা-ও পেছন দিকে নিন। পুরো শরীরের ওজন হাত ও পায়ের আঙুলের ওপর পড়বে। মাথা ও কোমর মেঝের সমান্তরাল থাকবে।
৭. পা ও ঊরু মাটির সাথে লেগে থাকবে। কোমর থেকে মেরুদন্ড বাঁকিয়ে হাতে ভর দিয়ে মাথা যতদূর সম্ভব পেছন দিকে নিয়ে যান।
৮. সমস্ত শরীর মেঝেতে লাগিয়ে দিন। পা হাঁটু পেট বুক কপাল—সব মেঝেতে লেগে যাবে, হাত দুটো থাকবে মাথার দুপাশে।
৯. হাতের ওপর ভর দিয়ে আবার মেরুদণ্ড বাঁকিয়ে মাথা পেছন দিকে হেলিয়ে দিন। হাঁটু জোড়া লেগে থাকবে। (৭নং অবস্থানের মতো)
১০. আগের মতো দুহাত ও দুপায়ের আঙুলের ওপর ভর দিয়ে কোমর ও মাথা মাটির সমান্তরাল রাখুন। (৬নং অবস্থানের মতো)
১১. প্রথমে ডান পা হাতের সামনে আনুন। অন্য পায়ের পাতা পেছনে মাটিতে লাগানো থাকবে। (৫নং অবস্থানের মতো)
১২. হাঁটু ভাঙা অবস্থায় দুহাতের পাশে দুই পা রাখুন। কোমর ও মাথা মেঝের সমান্তরাল থাকবে। (৪নং অবস্থানের মতো)
১৩. দুই পায়ের ওপর ওজন রেখে হাঁটু সোজা করুন। কপাল হাঁটুর কাছাকাছি থাকবে। হাতের আঙুল মাটি স্পর্শ করবে। (৩নং অবস্থানের মতো)
১৪. হাঁটুর কাছ থেকে মাথা উঠিয়ে মেরুদন্ড বাঁকিয়ে একেবারে পেছন দিকে মাথা হেলিয়ে দিন। হাত দুটো মাথার পেছনে থাকবে। (২নং অবস্থানের মতো)
১৫. এবার বুক টান করে হাত সোজা ওপরের দিকে আনুন। (১নং অবস্থানের মতো)
এবার দুহাত শরীরের দুপাশে রাখুন। আরাম করে দাঁড়ান। এভাবে ৫ থেকে ১০ বার করতে পারেন।
সতর্কতা
যাদের বাইপাস সার্জারি হয়েছে এবং যারা বিভিন্ন কারণে ব্যাকপেইন অর্থাৎ কোমর বা পিঠের ব্যথায় ভুগছেন, তারা উজ্জীবন করা থেকে বিরত থাকুন।
লেখাটি ডা. মনিরুজ্জামান ও ডা. আতাউর রহমান এর লেখা এনজিওপ্লাস্টি ও বাইপাস সার্জারি ছাড়াই ‘হৃদরোগ নিরাময় ও প্রতিরোধ’ শীর্ষক বই থেকে নেয়া।
আরকে//