শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে (ভিডিও)
প্রকাশিত : ২২:০৩, ২৯ জানুয়ারি ২০২২
বাড়ছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার প্রবনতা। শুধু ২০২১ সালেই শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। যা মোট আত্মহত্যা সংখ্যার ৬০ শতাংশ। এক সমীক্ষায় এসব তথ্যই উঠে আসে। সম্পর্কের বিচ্ছিন্নতা, পারিবারিক ও মানসিক সমস্যার পাশাপাশি আর্থিক সংকট, মাদকাসক্তিসহ আত্মহত্যার নেপথ্যে রয়েছে আরো বেশ কিছু কারণ।
বিগত বছরে ১০১ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করে।
মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত এক সমীক্ষা বলছে :
পুরুষদের মধ্যেই আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি, ৬৪ দশমিক ৪ শতাংশ। বয়স বিবেচনায় ২২-২৫ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের সংখ্যাই বেশি। ৫৯ দশমিক ৪১ শতাংশ। প্রতিষ্ঠানের তুলনায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহননকারীর সংখ্যা ৬১ দশমিক ৩৯ শতাংশ। সুনির্দিষ্টভাবে এ বছরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এর হার ২১ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
সমীক্ষার সূত্র ধরে শিক্ষার্থীদের তথ্য-উপাত্ত নিয়ে গবেষণা করে আঁচল ফাউন্ডেশন। ভার্চুয়াল সেমিনারে উঠে আসে এসব তথ্য।
ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা তানসেন রোজ বলেন, "২০২১ সালে আত্মহত্যা করেছে ১০১জন, ২০২০ সালে আত্মহত্যা করেছে ৭৯ জন। কিন্তু ২০১৮ সালে মাত্র ১১ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। ২০১৭ সালে যেটা ছিল ১৯ জন। হঠাৎ করে এটা বেড়ে গেছে, এর একটি কারণ করোনার প্রভাব বলে ধারণা করছি আমরা।"
অনুষ্ঠানে যুক্ত শিক্ষার্থীরা আত্মহত্যার প্রবণতাকে বড় ঝুঁকি হিসেবেই দেখছেন।
একজন শিক্ষার্থী বলেন, "করোনা যেখানে মহামারি হয়ে দাঁড়িয়েছে সেখানে আত্মহত্যার বিষয়টিও কিন্তু আমাদের কাছে মহামারির চেয়ে কম নয়।"
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, "পরিবারের কাছে অনেক কিছু শেয়ার করতে না পেরে অনেক সময় ডিপ্রেশন তৈরি হয়। এটি যদি প্রাথমিক পর্যায়ে বন্ধুবান্ধব কিংবা পরিবারের সদস্যদের মানসিক সাহায্যে কাটিয়ে ওঠা যায় তাহলে অনেক সহজেই এর সমাধান সম্ভব।"
কোভিডকালীন পরিস্থিতির বাইরেও শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়ার কারণগুলো তুলে ধরেন বিশেষজ্ঞরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. কামাল আহমেদ চৌধুরী বলেন, "বিশেষকরে বিষন্নতা, ব্যক্তিত্বের সমস্যা ও মাদকাশক্তি এই তিনটি মানসিক রোগকে যদি দ্রুত শনাক্ত করে চিকিৎসা করা যায় তাহলে আত্মহত্যা কমানো সম্ভব।"
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের সহযোগি অধ্যাপক ড. হেলালউদ্দিন আহমেদ বলেন, "কোভিড ১৯ না থাকলে যে তারা আত্মহত্যা করতেন না ব্যাপারটা এমন নয়। কারণ বাংলাদেশে বরাবরই প্রতি বছর আত্মহত্যার রেকর্ড রয়েছে।"
সংকট সমাধানে আর্থিক ব্যবস্থাপনা, আবেগ নিয়ন্ত্রণ, পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নসহ আরো বেশ কিছু বিষয়ে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল ভূমিকার তাগিদ দিলেন বিশেষজ্ঞরা।
এসবি/