ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

নদীতে মেডিকেল বর্জ্য, ঝুঁকিতে স্বাস্থ্য 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৩৭, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২

নদীতে মেশা মেডিকেল বর্জ্যের কারণে বিশ্বের পরিবেশ ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়ছে বলে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে। 

বিভিন্ন নদীর পানি নিয়ে ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের চালানো ওই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নদীতে ফেলা মেডিকেল বর্জ্যের মধ্যে বেশি পাওয়া গেছে নিকোটিন, ক্যাফেইন ও মৃগী এবং ডায়াবেটিসের ওষুধ। 

পাকিস্তান, বলিভিয়া ও ইথিওপিয়ার নদীগুলো সবচেয়ে দূষিত। সর্বোচ্চ মেডিকেল বর্জ্যের ঘনত্বের তালিকায় রয়েছে তিউনিসের নীল নদ। 

নদীতে ফেলা অনেক পরিচিত মেডিকেল বর্জ্যের প্রভাব সম্পর্কেও এখন পর্যন্ত অনেক তথ্য অজানাই রয়ে গেছে। তবে এটা প্রমাণিত, মেডিকেল বর্জ্য নদীর পানিতে মিশে গেলে তা মাছের প্রজনন বা উৎপাদনে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। 

১০০টি দেশের এক হাজার জায়গার পানি নমুনা নিয়ে গবেষণাটি চালানো হয়েছে। যেখানে দেখা গেছে ২৫৮টি নদী, অর্থাৎ এক চতুর্থাংশ নদীতেই পানির এমন স্তরে সক্রিয় মেডিকেল বার্জ্য পাওয়া গেছে, যা জলজ প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর হিসেবে ধরা হয়। 

এই গবেষণায় নেতৃত্ব দেওয়া চিকিৎসক জন উইলকিনসন বলেন, “সাধারণত আমরা এই রাসায়নিকগুলো গ্রহণ করি, সেগুলো আমাদের শরীরে কাজ করে এবং এরপর তা আমাদের দেহ ছেড়ে চলে যায়।

“আমরা এখন জানি, আধুনিক ও কার্যকর শোধনাগারও এসব মেডিকেল বর্জ্য ধ্বংস করতে পুরোপুরি সক্ষম নয়।”

এসব বর্জ্যের মধ্যে যে দুটি উপাদান সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে তা হলো কারবামাজেপিন এবং মেটফরমিন। কারবামাজেপিন মৃগীরোগ ও স্নায়ুর ব্যথার চিকিৎসায় এবং মেটফরমিন ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।   

ভাবনার বিষয় হল, এগুলোর পাশাপাশি ক্যাফেইন, নিকোটিন এবং ব্যথানাশক প্যারাসিটামলের অস্তিত্বও পাওয়া গেছে। আফ্রিকায় ব্যবহৃত ম্যালেরিয়াবিরোধী ওষুধও পাওয়া গেছে অতিমাত্রায়। 

এদিকে যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অফ হার্টফোর্ডশায়ারের পরিবেশবিদ ড. ভেরোনিকা এডমন্ডস-ব্রাউন বিবিসিকে বলেন, “আমরা বলতে পারি, নদীতে পাওয়া এসব মেডিকেল বর্জ্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তাই এগুলো নিয়ে আলাদাভাবে পরীক্ষা করতে হবে।“ 

নতুন গবেষণাটি বলছে, নদীর পানিতে অ্যান্টিবায়োটিকের অতিরিক্ত উপস্থিতির কারণে ওষুধের কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে সক্ষম ব্যাকটেরিয়াও বেড়ে গেছে। এর ফলে এক পর্যায়ে ওষুধের কার্যকারিতা বন্ধও হয়ে যেতে পারে, যা বিশ্ব পরিবেশ এবং স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি। 

এই দূষণে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে নিম্ন আয়ের দেশগুলো এবং দুর্বল পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা ও ওষুধ কারখানা রয়েছে এমন এলাকা। 

ভেরোনিকা আরও বলেন, “আমরা নাইজেরিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকার দূষিত নদী দেখেছি, যেখানে ওষুধের উপাদানের ঘনত্ব খুব বেশি, আর এ কারণ হল, দুর্বল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা।“ 

শঙ্কাজনক এমন পরিস্থিতিতে করনীয় কী- এমন প্রশ্নে হতাশার কথাই শুনিয়েছেন গবেষক উইলকিনসন। 

“অল্প যা উপায় আছে তার মধ্যে একটি হচ্ছে ওষুধের সঠিক ব্যবহার। “
এর অর্থ দাঁড়াচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিকের মতো ওষুধ তৈরি এবং ব্যবহার কঠোরহাতে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। 

এসবি/এএইচএস


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি