অনিদ্রায় বাড়ে মৃত্যু ঝুঁকি
প্রকাশিত : ১১:১৬, ৩১ মার্চ ২০২২
বর্তমানে অনেক মানুষের মধ্যেই দেখা দেয় দিন দিন ঘুম কমে যাওয়ার প্রবণতা। কিন্তু প্রত্যেকটি মানুষের জীবনে ঘুমের প্রয়োজন অপরিসীম। বিশেষজ্ঞদের মতে এক জন পূর্ণবয়স্ক মানুষের প্রতি দিন অন্তত ৬ ঘণ্টা নিরবিচ্ছিন্ন ঘুম প্রয়োজন। কিন্তু অনিদ্রার সমস্যায় আক্রান্ত মানুষ সহজে ঘুমাতে পারেন না।
আর পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব ডেকে আনতে পারে বহুবিধ বিপদ। পাশাপাশি, নিরবিচ্ছিন্ন ঘুম না হলেও দেখা দিতে পারে একই রকমের সমস্যা।
তা ছাড়া, অনেক ক্ষেত্রে কাজের চাপ বা সময়ের অভাবে বহু মানুষ বেশি রাত পর্যন্ত জেগে থাকতে বাধ্য হন। আর এগুলোয় ডেকে আনতে পারে অনেক রোগকে।
দেখে নেওয়া যাক অনিদ্রার কারণে কী কী সমস্যা হতে পারে-
ব্রিটেনের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, অনিদ্রা বাড়িয়ে দেয় মৃত্যুর আশঙ্কা। গবেষকরা বলছেন, যাদের পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব রয়েছে তাদের মৃত্যুর হার সাধারণ মানুষের তুলনায় বেশি।
এমনকি, যাদের ঘুম অনিয়মিত তাদের মধ্যেও একই সমস্যা দেখা যায়। ঘুমের অভাবে ভুগছেন এমন রোগীদের সংবহনতন্ত্রের রোগ হওয়ার ঝুঁকি আশঙ্কাজনক ভাবে বেশি হয়।
পর্যাপ্ত ঘুম না হলে যৌন জীবনেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বিশেষত পুরুষদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা অনেক বেশি। যারা দেরি করে শুতে যান ও পর্যাপ্ত ঘুম থেকে বঞ্চিত হন, তাদের শরীরে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমে যেতে পারে। এটি একটি যৌন হরমোন, এই হরমোনের মাত্রা কমে গেলে কমে যায় যৌন মিলনের ইচ্ছা।
রাত জাগা মানসিক অবসাদের মধ্যে একটি চক্রাকার সম্পর্ক রয়েছে। অর্থাৎ, একটি সমস্যা অন্যটিকে ডেকে আনে।
২০০৫ সালের একটি সমীক্ষা বলছে, উদ্বেগ বা মানসিক অবসাদে আক্রান্ত বেশির ভাগ মানুষই গড়ে ছ’ঘণ্টার কম ঘুমোন। অনিদ্রার ফলে যেমন মানসিক অবসাদ তৈরি হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায় তেমনিই অবসাদের ফলে রোগীর ঘুমিয়ে পড়তে অসুবিধা হতে পারে।
মস্তিষ্কের ‘নিওকর্টেক্স’ ও ‘হিপ্পোক্যাম্পাস’ নামক দু’টি অঞ্চলের সহায়তায় অস্থায়ী স্মৃতি স্থায়ী স্মৃতিতে রূপান্তরিত হয়। কাজেই এই প্রক্রিয়াটি ঠিক ভাবে সম্পন্ন হতে গেলে নিবিড় ঘুমের প্রয়োজন। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে এই প্রক্রিয়াটি সঠিক ভাবে সম্পন্ন হয় না। ফলে ভুলে যাওয়ার সমস্যা দেখা যায়।
ঘুম কম হলে বেশ কিছু দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, যারা অনিদ্রায় ভুগছেন তারা একই সঙ্গে অন্য কোনও বিপজ্জনক দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যাতেও ভুগছেন।
ডায়াবেটিস, স্ট্রোক, অনিয়মিত হৃদ্স্পন্দন, হৃদ্রোগ বা উচ্চ্ রক্তচাপের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগ ঘুমের অভাবের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বৃদ্ধি পেতে পারে।
সূত্রঃ আনন্দবাজার অনলাইন
আরএমএ