ঢাকা, বুধবার   ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

বিশ্ব হার্ট দিবস: প্রতিবছর হৃদরোগে ২ লাখ ৭৭ হাজার মৃত্যু দেশে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৫৮, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ | আপডেট: ০৮:৫৯, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২

বিশ্ব হার্ট দিবস আজ ২৯ সেপ্টেম্বর। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য, ‘ইউজ হার্ট ফর এভরি হার্ট।’ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হবে।

চিকিৎসা শাস্ত্রের পরিভাষায় হৃদরোগকে বলা হয় মাইয়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন। চিকিৎসকেরা বলে থাকেন সচল থাকতে গোটা শরীরের মতো হৃদ্যন্ত্রের অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। আর করোনারি ধমনি হৃদ্যন্ত্রে ওই অক্সিজেন সরবরাহ করে। কিন্তু অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, অনিয়মিত জীবনযাপনে করোনারি ধমনির ভেতরের দেওয়ালে চর্বি জমে যায়। 

এর ফলে সময়ের সঙ্গে অক্সিজেন সরবরাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফুসফুসে রক্তের সরবরাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে কার্ডিয়াক ইস্কেমিয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়, যাতে হৃদ্যন্ত্রে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়। বেশ কিছু সময় পর্যন্ত বুঝতে না পারলে, বা চিকিৎসায় দেরি হলে হৃদযন্ত্রের কোষগুলোর একে একে মৃত্যু ঘটে। তাতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হন মানুষ।

পৃথিবীব্যাপী সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটে হৃদরোগে, যার অন্যতম প্রধান কারণ তামাক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতিবছর বিশ্বে ১৯ লাখ মানুষ তামাক ব্যবহারজনিত হৃদরোগে মৃত্যুবরণ করে। বাংলাদেশে প্রতিবছর ২ লাখ ৭৭ হাজার মানুষ হৃদরোগে মারা যায়, যার ২৪ শতাংশের জন্য দায়ী তামাক। 

গ্লোবাল বারডেন অফ ডিজিজ স্টাডি (জিবিডি) ২০১৯’র তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে মৃত্যু এবং পঙ্গুত্বের প্রধান চারটি কারণের একটি তামাক। বর্তমানে প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীর ৩৫.৩ শতাংশ (৩ কোটি ৭৮ লাখ) তামাক ব্যবহার করছে যা হৃদরোগ পরিস্থিতিকে আরও উদ্বেগজনক করে তুলছে।

এই পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সংশোধনীর মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। খসড়া সংশোধনীতে সকল পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ রাখার বিধান বিলুপ্ত করা, বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্য বা প্যাকেট প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করাসহ সব ধরনের খুচরা বা খোলা তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় নিষিদ্ধ করাসহ বেশ কিছু প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। 

ইতিমধ্যে খসড়াটি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে অংশীজনের মতামত গ্রহণ করা হয়েছে।

বিশ্ব হার্ট দিবস উপলক্ষে এক প্রতিক্রিয়ায় গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা’র (প্রগতির জন্য জ্ঞান) নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বলেন, ‘তামাকজনিত হৃদরোগ ঝুঁকি হ্রাসে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আইন সংশোধনের পদক্ষেপ অত্যন্ত সময়োপযোগী। তামাক কোম্পানির অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে খসড়াটি দ্রুত চূড়ান্ত করতে হবে।’

হার্ট বা হৃৎপিণ্ড সুস্থ–সবল রাখতে খাদ্যাভ্যাস বেশ বড় ভূমিকা পালন করে। এ জন্য বিশেষজ্ঞরা খাদ্যাভ্যাসের দিকে বিশেষভাবে নজর দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। আঁশযুক্ত খাবার যেমন শাকসবজিতে প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেল আছে। এটি হার্টের জন্য ভালো। আর চর্বিযুক্ত খাবার, গরু বা খাসির মাংস কম করে খেতে হবে। 

রান্নার সময় উদ্ভিজ্জ তেল ব্যবহার করতে হবে। তবে একবার তেল দিয়ে রান্না করার পর দ্বিতীয়বার সেই একই তেল ব্যবহার করা যাবে না। অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবার, ফাস্টফুড পরিহার করতে হবে। 

বিশেষজ্ঞদের মতে ভাত, চিনি, লবণ—এই তিন ধরনের খাবার হার্টের জন্য খারাপ। এ জন্য পুষ্টিবিদেরা এই খাবারগুলোকে ‘সাদা বিষ’ বলে থাকেন। এ খাবারগুলো একেবারে কম পরিমাণে খেতে পারলেই ভালো।

এছাড়া হার্টের সুস্থতার জন্য অবশ্যই উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। ধূমপান, গুল, জর্দা থেকে দূরে থাকতে হবে। নিয়মমাফিক হাঁটাচলা ও ব্যায়াম করতেই হবে।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি