ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

প্রয়োজন ছাড়াই অস্ত্রোপচার, রোগ বাড়ছে নবজাতকের (ভিডিও)

শিউলি শবনম, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:৫৭, ২৪ জানুয়ারি ২০২৩

বাড়ছে সিজারিয়ান শিশুর সংখ্যা। প্রয়োজন ছাড়াই অস্ত্রোপচারও করেন অনেক ডাক্তার। তাতে অ্যাজমা, কাশি, জ্বরসহ বহু ধরণের রোগ বেড়েছে নবজাতকের। 

লিমা খাতুন, তিন মাসের নবজাতককে নিয়ে ভর্তি আছেন রাজধানীর শিশু হাসপাতালে। নড়াইলের লোহাগড়া থেকে আসা লিমা খাতুনের মুক্তি মিলবে কবে তা তার অজানা। সি সিকশনের মাধ্যমে জন্ম নেয়া লিমার সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকেই ভুগছে শ্বাসকষ্টে। 

হাসপাতালের এইচডি আইসোলেশনে ভর্তি হওয়া বেশিরভাগ শিশুই সিজারিয়ান। এদের প্রত্যেকেই আক্রান্ত কোনো না কোনা সমস্যায়। 

শিশু হাসপাতালের এইচডি আইসোলেশন রেজিস্টার ডা. ফেরদৌসী বেগম বলেন, “অনেক সময় সিজারিয়ান সেকশন করার ফলে বাচ্চাদের অক্সিজেন সাপ্লাই ব্রেনে কমে যাচ্ছে। এর ফলে বাচ্চা নীল হয়ে যেতে পারে এবং বাচ্চার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।”

সিজারের মাধ্যমে জন্ম নেয়া শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অন্যদের চেয়ে কম, অভিমত চিকিৎসকদের। ফুসফুস অপরিপক্ক থাকায় স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস বাধাগ্রস্ত হয় এদের। 

শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. কামরুজ্জামান বলেন, “বুকের দুধ খাওয়া থেকে বাচ্চার দেরি হয়ে যায় কিন্তু হাল দুধটা বাচ্চার ক্ষেত্রে টিকার কাজ করে। তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। বাচ্চার জন্মের পর পরই যদি মায়ের বুকের সঙ্গে বা মায়ের স্কিনের কন্ট্রাক্টে নিয়ে আসা যায় তাতে তার ভেতর কিছু এন্টিবডি জন্মায়।”

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ, দেশে সিজারিয়ান শিশুর সংখ্যা ১৫ শতাংশের বেশি হওয়া উচিত নয়। যদিও বাংলাদেশে এটির আধিক্য ৫১ শতাংশের ওপরে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পপুলেশন রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং বা নিপোর্ট বলছে, বেসরকারি হাসপাতালে ৮৩ শতাংশ শিশুর জন্ম হচ্ছে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে। 

অস্ত্রোপচারের কারণ হিসেবে ক্লিনিক মালিকদের মুনাফা, অভিভাবকদের অতি উৎসাহ, গর্ভকালীন মায়ের পরিচর্যার অভাবকে দায়ী করছেন অনেকে। 

চিকিৎসক নেতাদের পরামর্শ, উপজেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষিত ধাত্রীর সংখ্যা বাড়ালে অস্ত্রোপচার অনেকাংশে কমতো।

বিএমএ সাবেক মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান বলেন, “আন-ট্রেইন্ড দাই অথবা যারা ডেলিভারি করান গ্রামগঞ্জে তাদেরকে সরকারিভাবে প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে, তাদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। তারা যদি প্রশিক্ষিত হন এবং তাদেরকে যদি ব্যবহার করতে পারি তবে এই সংখ্যাটা দিনে দিনে আমাদের দেশে কমে আসবে।”

সিজার কমাতে জনসচেতনতার বড় বেশি প্রয়োজন বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎকেরা।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি