ঢাকা, বুধবার   ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪

রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে পানি পানের উপকারিতা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:৩৯, ২৮ অক্টোবর ২০১৭

শরীরকে আদ্র রাখা খুব জরুরি। আর সে কারণেই পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খাওয়া প্রয়োজন। কিন্তু দিনের কোন কোন সময় পানি খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়, সে সম্পর্কে আমরা হয়তো অনেকেই জানিনা।

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, শরীরকে ডিহাইড্রেশনের কবল থেকে বাঁচাতে দিনে কম করে ৩-৪ লিটার পানি খাওয়ার প্রয়োজন।

কিন্তু এখানেই বিজ্ঞানীরা থেমে থাকেননি। তারা আরও কয়েকধাপ এগিয়ে এটা জানার চেষ্টা করেছেন যে দিনের কোনো বিশেষ সময়ে পানি পান করলে তার কোনো সুফল পাওয়া যায় কিনা। আর এমনটা জানার চেষ্টায় যে তথ্য উঠে এসেছে, তা বেশ চমকপ্রদ! জানা গেছে, রাতে শুতে যাওয়ার আগে যদি এক গ্লাস পানি খাওয়া যায়, তাহলে দারুন উপকার মেলে। এক্ষেত্রে যে যে ঘটনাগুলি ঘটে থাকে, সেগুলি হল...

১. শরীরের ভেতরে পানির ঘাটতি দূর হয়

একথা নিশ্চয় জানা আছে যে, আমাদের শরীরের সিংহভাগই পানি দিয়ে তৈরি। তাই তো দৈহিক সক্ষমতা বজায় রাখতে দেহের ভেতরে পানির  ঘাটতি যাতে না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি। আর এই একই কারণে শুতে যাওয়ার আগে পানি খাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। আসলে এমনটা করলে সারা দিন ধরে কাজ করতে করতে দেহে যে পানির  ঘাটতি হয়ে থাকে, তা দূর হয়। সেই সঙ্গে শরীরের সক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।

২. ওজন কমায়

একথার মধ্যে কোনো ভুল নেই যে রাতে পেট ভর্তি করে পানি খেয়ে শুলে সকাল পর্যন্ত ওজন বেশ অনেকটাই কমে। কারণ ক্যালরি খোয়াতে পানির বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে ঠান্ডা জল খাওয়ামাত্র শরীরের তাপমাত্র হঠাৎ করে কমে যায়। ফলে সেই সময় তাপমাত্রা বাড়াতে শরীরকে অতিরিক্ত কাজ করা শুরু করতে হয়। আর এমনটা হওয়ার কারণে স্বাভাবিকবাবেই বেশি মাত্রায় জ্বালানির প্রয়োজন পরে। ফলে ওজন কমতে সময় লাগে না।

প্রসঙ্গত, রাতে শুতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস পানি খেলে আরেকটি ঘটনা ঘটে। এই সময় মেটাবলিক রেট স্বাভাবিক মাত্রার থেকে অনেকটাই বেড়ে যায়। এই কারণেও ওজন কমার পথ প্রশস্ত হয়।

৩. অনিদ্রা দূর হয়

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, শুতে যাওয়ার আগে জল খেলে দেহের ভেতরে হরমোনাল ইমব্যালেন্স দূর হয়। সেই সঙ্গে পেশির ক্লান্তিও কমতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শরীর এবং মন এতটাই চাঙ্গা হয়ে ওঠে যে ঘুম আসতে দেরি হয় না। আর ঘুম ঠিকমতো হলে সকালটা যে বেশ মনোরম হয়ে ওঠে, তা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে।

প্রসঙ্গত, পানি খেয়ে শুয়ে পরামাত্র, তা শরীরের প্রতিটি কোনায় পৌঁছে যায়। ফলে একদিকে যেমন দেহের প্রতিটি অঙ্গের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, তেমনি অনিদ্রার সমস্যাও দূরীভূত হয়।

৪. শরীর থেকে বিষ বেরিয়ে যায়

সারা দিন ধরে নানাভাবে আমাদের শরীর একাধিক টক্সিক উপাদান প্রবেশ করতে থাকে। এদের যদি ঠিক সময়ে শরীর থেকে বের করে দেওয়া না য়ায়, তাহলে কিন্তু বেজায় বিপদ! সেই কারণেও চিকিৎসকেরা ঘুমানোর আগে পানি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। আসলে এমনটা করলে ডাইজেস্টিভ সিস্টেম, পেশী এমনকি ত্বকের ভেতরে জমে থাকা টক্সিক উপাদান শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রোগ ভোগের আশঙ্কা হ্রাস পায়।

৫. ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়

বেশ কিছু কেস স্টাডির পর একথা প্রামাণিত হয়ে গেছে যে রাত্রে শোয়ার আগে পর্যাপ্ত পরিমান পানি পান করলে ত্বকের শুষ্কতা দূর হয়। ফিরে আসে আদ্রতা। ফলে স্বাভাবিকভাবেই স্কিন উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। সেই সঙ্গে বলিরেখাও কমতে শুরু করে।

৬. কনস্টিপেশনের মতো সমস্যা কমে

রাতে শুতে যাওয়ার আগে এবং সকালে উঠে যদি প্রতিদিন এক গ্লাস করে গরম পানি  খেতে পারেন, তাহলে দেখবেন নিমিষে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা কমে যাবে। আসলে এমনটা করলে বাওয়েল মুভমেন্টের উন্নতি ঘটে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বেরিয়ে যেতে কোনো অসুবিধাই হয় না।

৭. রক্ত চলাচলে উন্নতি ঘটে

রাতে শুতে যাওয়ার আগে গরম পানি পান করতে পারলে আরেকটি উপাকার পাওয়া যায়। এমনটা করলে সারা শরীরে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের সরবরাহ বেড়ে যায়। ফলে দেহের ভাইটাল অর্গ্যানদের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে ধমনীতে জমে থাকা বর্জ পদার্থও শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। ফলে নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।

 কেআই/ডব্লিউএন

 

 

 

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি