চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গু জ্বরে সতর্কতা
প্রকাশিত : ২৩:০৭, ৬ জুলাই ২০১৮ | আপডেট: ২৩:১০, ৬ জুলাই ২০১৮
ডেঙ্গু বা চিকুনগুনিয়া দুটিই ভাইরাস জনিত রোগ। ডেঙ্গু জ্বর আর চিকুনগুনিয়া জ্বরের মূল পার্থক্য হচ্ছে ডেঙ্গু জ্বর চারটি ভাইরাসের দ্বারা চারবার হতে পারে। আর চিকুনগুনিয়া একটি ভাইরাসের দ্বারা একবারই হতে পারে। ডেঙ্গু জ্বর ৪ থেকে ৫ দিন বেশি মাত্রায় থাকে। ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যে জ্বর স্বাভাবিক হয়ে যেতে পারে। কিন্তু চিকুনগুনিয়া ১০ থেকে ১২ দিন পর মারাত্মক গিট ব্যাথা করে।
ভাইরাস জনিত এ দুটি রোগ থেকে বাঁচতে করণীয় সম্পর্কে কথা বললেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদ বিভাগের ডীন অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ ও বাংলাদেশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. সানিয়া তাহমিনা।
অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, এ জ্বরের রোগীকে সম্পূর্ণ বিশ্রামে রাখতে হবে এবং প্রচুর পানি বা অন্যান্য তরলজাতীয় খাবার খেতে হবে। চিকুনগুনিয়া পরীক্ষার জন্য অপেক্ষা না করে জ্বর হলে প্যারাসিটামলজাতীয় ওষুধই যথেষ্ট। এর সঙ্গে সঙ্গে পানি দিয়ে শরীর মুছিয়ে দিতে হবে। তীব্র ব্যথার জন্য অন্য ভালো ওষুধ প্রয়োজন হতে পারে, তবে এসপিরিন ব্যবহার না করাই ভালো। রোগীকে আবার যেন মশা না কামড়ায়, এজন্য তাকে মশারির ভেতরে রাখাই ভালো। কারণ, আক্রান্ত রোগীকে মশায় কামড় দিয়ে অন্য কোনো সুস্থ লোককে ওই মশা কামড়ালে ওই ব্যক্তিও এ ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন। এছাড়া চিকুনগুনিয়া জ্বরের কোনো প্রতিষেধক নেই, কোনো ভ্যাকসিন বা টিকাও নেই। তাই রোগ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হলো এডিস মশা প্রতিরোধ। চিকুনগুনিয়া ভালো হয়ে গেলেও রোগী প্রায় দুই-এক মাসের মতো ক্লান্তি, অবসাদ, দুর্বলতা ও গিঁটে ব্যথার উপসর্গে ভোগেন।
অধ্যাপক ডা. সানিয়া তাহমিনা জানান, ব্যক্তিগত সচেতনতাই চিকুনগুনিয়া ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ সম্ভব। তিনি বলেন, মশার কামড় থেকে সুরক্ষাই চিকুনগুনিয়া থেকে বাঁচার সবচেয়ে ভালো উপায়। রাতের বেলায় মশারি টানিয়ে ঘুমানো, জানালায় নেট ব্যবহার করা, প্রয়োজন ছাড়া দরজা-জানালা খোলা না রাখা। তিনি বলেন, ডেঙ্গু বা চিকুনগুনিয়া রোধে মশার জন্মস্থান, আবাসস্থল ও এর আশপাশে মশার প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস করতে হবে। বাসার আশপাশে ফেলে দেয়া মাটির পাত্র, কলসি, বালতি, ড্রাম, ডাবের খোসা— মোট কথা, পানি জমতে পারে এমন কোনো উপকরণই রাখা যাবে না। কারণ জমে থাকা পানিতেই এডিস মশা প্রজনন করতে পারে।
তিনি আরো বলেন, গত বছর চিকুনগুনিয়াতে অনেকেই আক্রান্ত হয়েছিলেন। আমরা গত বছরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এবার অনেক প্রস্তুতি নিয়েছি। আমরা মে মাস থেকে শুরু করে বর্ষার আগে, পরে ও বর্ষাকালীন তিন ধাপে চিকুনগুনিয়ার মাত্রা ও এডিস মসার উপদ্রব পর্যবেক্ষণ করে প্রতিবেদন করছি। ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া সম্পর্কে সতর্কতামূলক বাণী প্রতিদিন বিভিন্ন দৈনিকে প্রকাশ করছি।
আরকে//