ঢাকা, রবিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

মাদক ‘খাট’ মানবদেহের জন্য কতটা ক্ষতিকর

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৪:১৪, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | আপডেট: ১৪:৪৩, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

টুকরো টুকরো সবুজ পাতা। দেখে অনেকেই গ্রিন টি ভেবে গুলিয়ে ফেলতে পারেন। কিন্তু এটি কোন চা বা সাধারণ পাতা নয়। এ হল নতুন ধরণের মাদক "খাট"।

ভেষজ এই উদ্ভিদটি অন্যান্য প্রাণঘাতী মাদকের মতোই ভয়ংকর বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

এই উদ্ভিদটি নিউ সাইকোট্রফিক সাবস্টেন্সেস বা এনপিএস নামে পরিচিত। অনেকে একে "আরবের চা" বলে থাকে।

যেটা কিনা আন্তর্জাতিকভাবে সি ক্যাটাগরির মাদক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

মাদকসেবীরা এই পাতাটিকে চিবিয়ে বা পানিতে ফুটিয়ে চায়ের মতো খেয়ে থাকে।

এই মাদক মূলত পূর্ব আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ বিশেষ করে সোমলিয়া ও ইথিওপিয়াতে উৎপন্ন হয়। সেখান থেকে রপ্তানি হয় ইউরোপ আমেরিকা মধ্যপ্রাচ্যসহ অস্ট্রেলিয়ায় ।

সম্প্রতি ঢাকায় এনপিএস এর কয়েকটি চালান বাজেয়াপ্ত করে শুল্ক বিভাগ। তারপরেই শহর জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে নতুন এই মাদকের নাম।

শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো এলাকাসহ রাজধানীর কয়েকটি স্থানে অভিযান চালিয়ে এ পর্যন্ত প্রায় আড়াই হাজার কেজি খাট জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম শিকদার।

সর্বশেষ চালানটি ইথিওপিয়া থেকে দেশের ২০টি ঠিকানায় `গ্রিন টি` হিসেবে আনা হয়েছিল। যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় আড়াই কোটি টাকা।

সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির ডিআইজি মো. শাহ আলম এ তথ্য জানান।

সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে পল্টন থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশকে এই মাদক পাচারের রুট হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল বলে জানা গেছে।

তবে দেশের ভেতর এই মাদকের ভোক্তা আছে কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে বলে জানান নজরুল ইসলাম শিকদার।

তবে বাংলাদেশেও যেকোনো ধরণের মাদকের প্রবেশ ঠেকাতে আইনের মাধ্যমে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এই মাদক মানুষের শারীরিক ও মানসিক দুইভাবেই ক্ষতি করে থাকে।

এ কারণে গত বছরের মধ্যে ১১০টি দেশ এই খাটকে মাদক হিসেবে চিহ্নিত করে তাদের দেশে আমদানি নিষিদ্ধ করেছে। জাতিসংঘের মাদক এবং অপরাধ ইউনিটের প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে আসে।

একসময় ব্রিটেনের শতাধিক ক্যাফেতে এই খাট অবাধে বিক্রি হতো। যার বেশিরভাগ ক্রেতা ছিল সোমালি, ইয়েমেনি ও ইথিওপিয়ান নাগরিকরা।

তবে এর ভয়াবহতার বিষয়টি উপলব্ধি করতে পেরে ২০১৪ সালেই ব্রিটিশ সরকারসহ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ এর আমদানি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

তবে ইথিওপিয়া ও সোমালিয়ার মতো কয়েকটি দেশে এখনও রয়েছে খাটের অবাধ ব্যবহার।

এর প্রাকৃতিক স্টিমুলেটিং উপাদান মুহূর্তেই সেবনকারীকে চাঙ্গা করে তোলায় তারা এটিকে চা কফির মতোই মনে করে।

খাটের বেশ কয়েকটি ভয়াবহ প্রভাব রয়েছে। যেমন-

* বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাট ফলে সেবনকারী নিজের প্রতি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। প্রচুর অর্থহীন কথা বলে।

* বিভ্রান্ত ও নির্লিপ্ত হয়ে যায়। নিজেকে নিঃসঙ্গ মনে করে।

* যৌন ক্ষমতা হ্রাস পায়।

* ঘুমের সমস্যা হয়।

* তীব্র মানসিক উদ্বেগ ও আগ্রাসনে আক্রান্ত হয়।

* বার বার চাবানোর ফলে দাঁত সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়।

* মুখে ক্যান্সার হওয়ারও আশঙ্কা থাকে।

 

সূত্র: বিবিসি বাংলা

 

এমএইচ/

 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি