ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ৩১ অক্টোবর ২০২৪

লিভারে ফোড়া কেন হয়: ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:০২, ৮ নভেম্বর ২০১৮ | আপডেট: ১৭:৩২, ১০ নভেম্বর ২০১৮

অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল

অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল

লিভার অ্যাবসেস অর্থ লিভারের ফোড়া। আৎকে ওঠার মত বিষয়ই বটে। ছোট ফোড়াতেই যখন কত বিড়ম্বনা সেখানে খোদ লিভারের ফোড়া বলে কথা। কথাটা আসলে আংশিক সত্যি। কারণ একথা ঠিক যে, লিভারের ফোড়া ফেটে গিয়ে তা রোগীর মৃত্যুর কারণও হতে পারে। তবে আজকের দিনে সঠিক ব্যবস্থাপনার কারণে এ ধরণের ঘটনা খুবই বিরল।

লিভারের ফোড়া কেন হয়
লিভারে মুলতঃ দুধরণের ফোড়া হয়, পায়োজেনিক ও এ্যমিবিক। ইকোলাই, স্টাফাইলোকক্কাই, স্ট্রেপ্টোকক্কাই, ক্লেবসিয়েলা ইত্যাদি ব্যাকটেরিয়া পায়োজেনিক লিভার এ্যাবসেসের জন্য দায়ী, আর এ্যমিবিক লিভার এ্যাবসেস হয় এ্যমিবা থেকে। তবে এসব জীবাণু ঠিক কি কারণে লিভারে ফোড়া তৈরী করে তা সবসময় জানা যায় না।

ডায়াবেটিস, এপেন্ডিসাইটিস, গ্যাস্ট্রোএন্টারাইটিস, রক্তের ইনফেকশন, নবজাত শিশুর নাভির ইনফেকশন, অতিরিক্ত মদ্যপান, পেটে আঘাত পাওয়া ইত্যাদি নানা কারণে লিভারে ফোড়া হতে পারে। একজন রোগীর লিভারে একটি বা একাধিক ফোড়া থাকতে পারে।

রোগের লক্ষণ
লিভারের ফোড়ার কোন বিশেষ লক্ষণ নেই। রোগীদের সাধারণতঃ খাবারে অরুচি, জ্বর ও পেটে ব্যাথা থাকে। আনেক সময় কাশি কিংবা ডান কাধে ব্যাথা থাকতে পারে। বিরল ক্ষেত্রে রোগীর জন্ডিস হতে পারে।

রোগ নির্ণয়
রক্ত পরীক্ষা লিভার এ্যাবসেস নির্ণয়ে খুব বেশী কার্য্যকর নয়। কোন কোন ক্ষেত্রে বেøড কালচারে জীবাণু ধরা পড়তে পারে। লিভার এ্যাবসেসের জন্য মুল পরীক্ষা হলো পেটের আল্ট্রাসনোগ্রাম। কোন কোন ক্ষেত্রে রোগের শুরুতে আল্ট্রাসনোগ্রামে এ্যাবসেস ধরা পরে না।

এজন্য ৭-১০ দিন পর আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপিট করলে ভাল। সিটি স্ক্যান ও এম আর আই আল্ট্রাসনোগ্রামের চেয়ে ভাল হলেও এসব পরীক্ষায় খরচ বহুগুণ বেশী। আর বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই অপ্রয়োজনীয়ও বটে।

লিভার এ্যাবসেসের চিকিৎসা
লিভার এ্যাবসেস সাধারণতঃ এন্টিবায়োটিকেই সেরে যায়। তবে লিভার থেকে পুজ বের করে দেয়াটা জরুরী - বিশেষ করে লিভারে যদি বড় বা একাধিক এ্যাবসেস থাকে। একসময় এজন্য অপারেশনের প্রয়োজন পরলেও আজ আর তার দরকার পরে না।

এখন আমরা লোকাল এনেসথেসিয়া করে খুব অল্প খরচে আল্ট্রাসনোগ্রাফি গাইডেনন্সে লিভার থেকে পুজ বের করতে পারি। আর এরপর এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করলে লিভারের ফোড়া অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেরে যায়।

শেষ কথা
আমাদের মত দেশে লিভার এ্যাবসেস বেশ কমন। তবে চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতির কল্যাণে এটি আজ আর কোন মারাত্বক ব্যাধি নয়। শুধু যা জরুরী তা হলো সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করা। কারণ লিভার এ্যাবসেস ফেটে গিয়ে পুজ হার্ট, ফুসফুস কিংবা পেটের ভিতরে যেয়ে জীবণ সংশয়ের কারণও হতে পারে।

পরামর্শদাতা: ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল

অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান

হেপাটোলজি বিভাগ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

/ এআর /

আরও পড়ুন : জন্ডিসের লক্ষণ ও চিকিৎসা : ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল

ফ্যাটিলিভার থেকে বাঁচতে কী করবেন : ডা. মামুন আল-মাহতাব স্বপ্নীল


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি