ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

রাতে কম ঘুমালে বাড়বে ভুঁড়ি : তামান্না চৌধুরী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:৫৬, ২৪ নভেম্বর ২০১৮

তামান্না চৌধুরী

তামান্না চৌধুরী

স্বাস্থ্য সচেতন নারী পুরুষদের বড় বিড়ম্বনা ভুঁড়ি। ভুঁড়ি একদিকে যেমন শরীরের সৌন্দর্য্য নষ্ট করে তেমনি তেমনি নানা রকম রোগের ঝুঁকিও বাড়ায়। কিন্তু ভুঁড়ি বাদ দিতে চাইলেই বাদ দেওয়া যায় না। এরজন্য নিয়মিত কিছু নিয়ম মেনে চলা প্রয়োজন। পাশাপাশি দরকার সচেতনতা।

অাজকে অামরা এ বিষয়ে অালাপ করব। অামরা ( পুষ্টিবিদ) অনেক সময় অনেক রোগী পেয়ে থাকি যাদের ওজন উচ্চতার তুলনায় ঠিক অাছে কিন্তু ভুঁড়ি বেড়ে যাওয়ায় তারা অামাদের কাছে অাসে। অামরা অনেকেই জানি না ভুঁড়ি বেড়ে যাওয়ার কারণটা কী? এই কারণটা জানলেই বাঙালি হিসেবে অামরা অামাদের স্বাস্থ্যকে সুন্দর রাখতে পারি।

ভুঁড়ি বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে অনিয়ম বা অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা। যার মধ্যে একটি বড় কারণ হচ্ছে রাতের ঘুম কম হওয়া। যারা রাত জাগেন ও যাদের রাতের ঘুমের সমস্যা অাছে, অধিকাংশের ক্ষেত্রে খেয়াল করবেন তাদের ভুঁড়ি দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। রাত জাগার কারণে অামাদের শরীরের ভেতরে অনেক ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। এর ফলে খাওয়া দাওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। সকালে সঠিক সময়ে ব্রেকফাস্ট করা হয়ে উঠে না। বা অনেক রাতে খেয়ে শুয়ে পড়লেও ঘুম ঠিক মতো হয় না এবং ভুঁড়ি বেড়ে যাচ্ছে।

ভুঁড়ি বেড়ে যাওয়ার অারেকটি কারণ হচ্ছে, অতিভোজ করা। অর্থাৎ সারাদিন কম খেয়ে একবেলায় অনেক বেশী খেয়ে ফেলা। এরকম যারা করে তাদের ভুঁড়ি বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। অাবার অনেকে অাছে খাওয়ার সময় বেশি পানি খাচ্ছে বা খাওয়ার পরপর অনেক পানি খেয়ে কাৎ হয়ে শুয়ে পড়ছে- তাদেরও ভুঁড়ি বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা লক্ষ করা যায়।

যারা ভাত ও মিষ্টি জাতীয় খাবার বেশি খায়, যাদের ভাজাপোড়া খাওয়ার প্রবণতা বেশি তাদেরও ভুঁড়ি বেড়ে যায়। শুধু খাওয়া নয়, বসার পজিশন ভুল হলে বা না হাঁটার কারণেও অনেকের ভুঁড়ি বেড়ে যাচ্ছে। লিভারের সমস্যা থাকলেও ভুঁড়ি বেড়ে যেতে দেখা যায়।

অর্থাৎ, অামি এতোক্ষণ যে কারণগুলো বললাম এগুলো পরিহার করতে পারলে বা অভ্যাস পাল্টাতে পারলে ভুঁড়িবিহীন একটি স্বাস্থ্য পাওয়া সম্ভব। এখন প্রশ্ন হলো ভুঁড়িহীন স্বাস্থ্যের জন্য কী করতে হবে?

প্রথমত, পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে এবং তা সঠিক সময়েই ঘুমাতে হবে। সঠিক সময়ে পরিমিত খাবার খেতে হবে। অল্প খাবার বারে বারে খেলে সেটা অামাদের শরীরে কাজে লেগে যায় এবং অামাদের মেটাবোলিজম অনেক ইমপ্রুভ করে। ভুঁড়ি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। যারা খাওয়ার পরপর শুয়ে যান তাদের বলব, খাওয়ার পরপর একটু নড়াচড়া করলে বা পায়চারি করলে ভুঁড়ি বেড়ে যাওয়ার সমস্যা রোধ করা সম্ভব। রাতে ঘুমানোর কমপক্ষে দুই ঘণ্টা অাগে রাতের খাবার খেয়ে ফেলা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। খাবারের সঙ্গে সঙ্গে পানি না খেয়ে অাধাঘণ্টা পর পানি পান করা ভালো। অর্থাৎ, ছোট খাট কিছু নিয়ম-ঘুমের পাশাপাশি খাবারের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রতিদিন ত্রিশ-চল্লিশ মিনিট হাঁটা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো।

অনেকে মনে করে থাকে, শুধু ডায়েট করলেই ভুঁড়ি কমে। অাসলে কিন্তু তা না। ভুঁড়ি কমানোর জন্য অাপনাকে পেটের কিছু হালকা ব্যায়াম করতে হবে। ফিটনেসের জন্য ডায়েটের পাশাপাশি ব্যায়ামের প্রয়োজন অবশ্যই রয়েছে। তাই শুধু ডায়েট করে শরীরকে পুষ্টিহীন না করে বরং প্রপার ব্যালেন্স ডায়েট করে, হেঁটে ও কিছু নিয়ম কানুনের মাধ্যমে অাপনি অাপনার ভুঁড়িকে সমতল বা ফ্ল্যাট করতে পারেন। ভুঁড়ি নিয়ে বেশি টেনশন না করে অাজ থেকে ভুঁড়ি ঠিক রাখার নিয়ম মানা শুরু করুন।

লেখক: প্রধান পুষ্টিবিদ, অ্যাপোলো হাসপাতাল লি.।

অা অা// এসএইচ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি