ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪

সকালের নাস্তায় কার্বোহাইড্রেটের অভাবে অ্যালজাইমারে আক্রান্ত হবেন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:০৭, ১০ ডিসেম্বর ২০১৮ | আপডেট: ১৬:২২, ১০ ডিসেম্বর ২০১৮

ইসরাত জাহান 

ইসরাত জাহান 

সুপ্রিয় পাঠক, আমরা এর আগে সকালের নাস্তার গুরুত্ব নিয়ে আলাপ করেছি। সকালের নাস্তা শরীরের জন্য কেমন দরকার, নিয়মিত সকালের নাস্তা না খেলে কী কী ক্ষতির আশংকা থাকা সেসব নিয়ে কথা বলেছিলাম সে আলোচনায়। আজ আমরা আলাপ করবো সকালের নাস্তায় কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা কেন দরকার।  

আমরা যারা কর্মজীবী, আমাদের জন্য সকালটা খুব তাড়াহুড়ার সময়। এসময় আমরা কোনোভাবে একটা চা ও দুটি বিস্কিট বা শুধু একটা চা খেয়েই অফিসের দিকে দৌড়াই। অফিসে গিয়ে কাজের ভীড়ে সকালের নাস্তাটা করতেই ভুলে যাই। যেসব বাচ্চারা সকালে স্কুলে যায় তারাও অনেক সময় সকালের নাস্তা খেতে চায়না। খালীপেটে তারা স্কুলে চলে যাচ্ছে এবং চার পাঁচ ঘন্টা পর তাদের টিফিন টাইম শুরু হয়। অনেক বয়স্ক লোক আছেন যারা নানা ধরনের শারিরীক সমস্যার (বমি বমি ভাব) কারণে সকালের নাস্তা এড়িয়ে যান। উঠতি বয়সের অনেক ছেলেমেয়ে আছে যারা সকালে ঘুম থেকে উঠতে পারেনা। দশটা এগারোটার সময় উঠে কিন্তু তখন অলরেডী ব্রেকফাস্টের সময় শেষ। 

কিন্তু স্বাস্থ্যবিজ্ঞান বলছে দিনের প্রথম খাবার অর্থাৎ সকালের নাস্তায় কার্বোহাইড্রেট থাকা আবশ্যক। কার্বোহাইড্রেট ভেঙ্গে গ্লুকোজ তৈরী হয় যা ব্রেনের একমাত্র খাবার। ব্রেন সচল ও কর্মক্ষম রাখতে হলে আপনাকে অবশ্যই কার্বোহাইড্রেট নিতে হবে যেখান থেকে ভেঙ্গে সুগার ও গ্লুকোজ আসছে। তাই কার্বোহাইড্রেট বাদ দেওয়া যাবেনা।

যারা রুটি পছন্দ করেন তারা রুটি খেতে পারেন। পাস্তা বা নুডলস খেতে পারেন। চাইলে আপনি ওটস খেতে পারেন। লাল চিড়া খেতে পারেন। অর্থাৎ রুচির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একটা শর্করা আপনাকে নিতেই হবে যেখান থেকে ব্রেন তার প্রয়োজনীয় পুষ্টি নিতে পারে।

দিনের কখন কী খাবেন কতোটুকু খাবেন : ইসরাত জাহান

না বললেই নয়, ব্রেন যখন সকালে গ্লুকোজ পায়না তখন সারাদিন ব্রেনে একটা প্রেসার পড়ে যায়। ফলে ব্রেন স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা হারায়। স্মৃতিশক্তির যে সেল তা আস্তে আস্তে নষ্ট হয়ে যেতে থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা দীর্ঘদিন ধরে সকালের নাস্তা খাচ্ছেন না তাদের মধ্যে অ্যালজাইমার বা ভুলে যাওয়া রোগ তৈরী হয়। এই রোগ হলে মস্তিষ্ক ও স্নায়ুর কার্যক্ষমতা দিন দিন লোপ পায়। যার ফলে বিভিন্ন প্রকার মানসিক ও পরে শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। অ্যালজাইমার আক্রান্তদের মানসিক অবসাদ ও সব কিছু ভুলে যাওয়া, দুশ্চিন্তা, মানসিক ভারসাম্য নষ্ট হওয়া, স্মৃতিশক্তি বিলুপ্ত হওয়া, খাওয়ার প্রতি অনীহা, স্বাভাবিক কাজকর্মে উদ্দ্যমহীনতা, পারিবারিক ও সামাজিক আচরণ পরিবর্তন হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। যা একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের থেকে কখনো কাম্য নয়।

সুস্থ, সুন্দর, স্বাভাবিক কর্মক্ষম থাকার জন্য আপনার ব্রেনকে সতেজ রাখতে হবে। ব্রেন তখনই সতেজ থাকবে যদি রাতে একটা ভাল ঘুম দিয়ে সকালে একটা স্বাস্থ্যসম্মত নাস্তা নেন যেখানে কার্ডোহাইড্রেট থাকবে। সবাই স্বাস্থ্যের নিয়মকানুন মেনে চলুন, সুস্থ থাকুন সেটাই প্রত্যাশা।  

লেখক: ইসরাত জাহান, ডায়াটেশিয়ানিস্ট ও নিউট্রিশিয়ানিস্ট, বিআরবি হসপিটাল, ঢাকা।

আআ/এসি

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি