শ্বেতী রোগ হলে কী করবেন?
প্রকাশিত : ১৯:৫০, ৬ জুন ২০১৯
যে সকল চর্ম রোগের সঙ্গে আমরা পরিচিত তার মধ্যে শ্বেতী রোগ অন্যতম। রোগটির সঙ্গে কমবেশি আমরা সকলেই পরিচিত।
ছোঁয়াচে রোগ না হলেও যে কেউ যেকোন সময় এ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। রোগটি মরণব্যাধি কিংবা ঘাতক নয়, তবে একবার শরীরে বাসা বাধলে তা থেকে মুক্তি পাওয়া দুস্কর।
একবার এ রোগ হলে দ্রুত তা শরীরের অন্য স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিকার পাওয়ার খুব একটা উপায়ও থাকেনা। তবে, আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার ফলে অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
ব্যাতিক্রমধর্মী এ রোগ নিয়ে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি চিকিৎসকদেরও মাথাব্যাথার শেষ নেই। দুনিয়া জুড়েই এই অসুখ নিয়ে বিভিন্ন গবেষণাও চলছে।
ত্বক বিশেষজ্ঞদের মতে, অবহেলা করলে এই অসুখ রোগীর শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। তাই শ্বেতীর দেখা মিললেই দ্রুত চিকিৎসকের শরনাপন্ন হওয়া জরুরি।
এই অসুখে আমাদের ত্বকের রং তৈরি করার কোষ বা মেলানোসাইট নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় বা কমে যায়।
বেশির ভাগ শ্বেতী আজকাল অতিরিক্ত রাসায়নিক ব্যবহার থেকে হয়। রোজকার জীবনে এই সব রাসায়নিক সকলের ত্বক সহ্য করতে পারে না। তখনই শুরু হয় সমস্যা।
চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, কিছু কিছু রাসায়নিক ব্যবহারের পর ত্বকের কোনও রকম পরিবর্তন হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখতে হবে। সাবধান হতে হবে হেয়ার ডাই ব্যবহারের ক্ষেত্রেও। এতে থাকা পি-ফেনিলেনেডিয়ামাইন বা ‘পিপিডি’ শ্বেতী ডেকে আনতে ওস্তাদ।
এ ছাড়া সাবধানতা অবলম্বন করুন ডিও, পারফিউম-স্প্রে, ফরসা হওয়ার বিভিন্ন ক্রিম, ক্ষতিকর রাসায়নিক মেশানো সানস্ক্রিন, অ্যাডহেসিভ রয়েছে এমন কোনও আঠালো দ্রব্য, ডিটারজেন্ট, কড়া অ্যান্টিসেপটিক থেকেও। এইগুলি ব্যবহার করলেই যে শ্বেতী হবে এমনটা নয়, তবে যাদের ত্বক এই সব রাসায়নিকের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে না, বিপদ ঘনাবে তাদেরই।
রাসায়নিকের প্রভাব ছাড়াও সূর্যালোক ও মানসিক চাপও এই অসুখের অন্যতম কারণ।
তবে, ঠিক সময়ে শ্বেতীর চিকিৎসা শুরু করলে তা অবশ্যই কমে। সেরেও ওঠে বেশির ভাগটাই।
এই অসুখ মোটেও ছোঁয়াচে কিংবা বংশগত নয়। স্বামী-স্ত্রীর দৈহিক মিলনের একে অন্যের শরীরের তা ছড়ায় না। তাই, বাবা-মায়ের থাকলেই যে সন্তানদের হবে এমনটা ভাবা সম্পূর্ণ ভুল হবে।
সতর্কতা
প্রথমত, কোনও রাসায়নিক ব্যবহারের ফলে শরীরে কোনও সাদা দাগ হচ্ছে কি না সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। তেনমনটা দেখা দিলেই বন্ধ করতে হবে ক্ষতিকর রাসায়নিক দেওয়া জিনিসের ব্যবহার।
দ্বিতীয়ত, ডিটারজেন্ট ব্যবহারের সময় গ্লাভস ব্যবহার করুন। সাবান, তেল, শ্যাম্পুর বেলায় বিজ্ঞাপনী চমকে প্রভাবিত হয়ে না কিনে, চেষ্টা করুন ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে কিনুন।
তৃতীয়ত, শ্বেতী ধরা পড়লে ছেড়ে দিন প্লাস্টিক বা রবারের জুতো পরা। সার্বিকভাবেই প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করে ফেলতে পারলে ভাল হয়।
চতুর্থত, কোনও রকম ফরসা হওয়ার ক্রিম, হেয়ার ডাই ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিতে হবে।
পঞ্চমত, সানস্ক্রিন ব্যবহারের সময় ইউভি এ ও ইউভি বি দুটোই ব্লক করছে কি না দেখুন। কেবল এসপিএফ-ই নয়, নজর রাখতে হবে পিএফ ফ্যাক্টরেও। এ ক্ষেত্রেও চিকিৎসকের অনুমোদন দেওয়া সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। সাবধানতার সঙ্গে কিছু ওষুধও প্রয়োজন হয়। তাই চিকিৎসায় অবহেলা নয়।
ষষ্ঠত, স্বাস্থ্যকর ডায়েট ও পর্যাপ্ত ঘুম মানসিক চাপ কমায়। দরকারে চাপমুক্ত রাখে এমন কোনও শখ বা নেশার দ্বারস্থ হতে পারেন।
সূত্র : আনন্দবাজার
আই/এসএ/