লাগামহীনভাবে বেড়েছে সিজারিয়ান অপারেশনে বাচ্চা প্রসব (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১০:৫৮, ২৯ জুন ২০১৯
দেশে লাগামহীনভাবে বেড়েছে সিজারিয়ান অপারেশনে বাচ্চা প্রসবের হার। হাসপাতাল, ক্লিনিকগুলো অর্থলোভের পাশাপাশি ডাক্তারদের আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি, প্রসব বেদনায় ভয় এবং জ্ঞানের অভাবে কমছে স্বাভাবিক প্রসবের হার। সেভ দ্যা চিলড্রেনের তথ্য অনুযায়ী দেশে যে পরিমান সিজার হচ্ছে তার সাতাত্তোর শতাংশই অপ্রোয়জনীয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যেগ না নিলে মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়তে পারে দেশের স্বাস্থ্য খাত।
প্রসবকালীন জটিলতা ও নবজাতকের মৃত্যু রোধে সিজারিয়ান অপারেশন বা সি সেকশন কার্যকর একটি পদ্ধতির নাম।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদন্ড অনুযায়ী একটি দেশের মোট প্রসবের সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১৫ শতাংশ সিজার হতে পারে। বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক এন্ড হেলথ সার্ভের পরিসংখ্যান বিশ্লেষন করে সেভ দ্যা চিলড্রেন বলছে, প্রতিবছর জন্ম নেয়া ৩৭ লাখের মধ্যে ১১ লাখেরও বেশী শিশুর জন্ম হচ্ছে সি-সেকশনে। প্রাইভেট ক্লিনিকে এ হার ৮০ শতাংশ। অপ্রোয়জনীয় সিজারের জন্য প্রতি বছর ৪ হাজার কোটি টাকারও বেশী ব্যয় হচ্ছে।
রাজধানীর প্রায় ডজন খানেক হাসপাতাল সরেজমিন অনুসন্ধানে অন্তত ৫০টি নবজাতকের খোঁজ পাওয়া গেলেও এর সবগুলোই সিজারিয়ান।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রসুতি মায়ের শারিরীক পরিস্থিতি ঠিকমত বুঝতে না পারা, স্বাভাবিক প্রসবের দীর্ঘ প্রক্রিয়া ও চিকিৎসকদের মুনাফা করার মানসিকতাই বিপুল পরিমান সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য দায়ী।
সিজার নাকি স্বাভাবিক প্রসব বিষয়টি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মাঝে।
অপারেশনে মাধ্যমে প্রসবে মায়ের শরীরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ও মানসিক অবসাদসহ কিছু জটিলতা দেখা দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর সন্তানের ক্ষেত্রে শ্বাসজনিত সমস্যা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ারও আশংকা থাকে। অন্যদিকে স্বাভাবিক প্রসবের রয়েছে বেশ কিছু প্রাকৃতিক উপকারিতা।
এরইমধ্যে দেশে চালু হয়েছে ব্যাথামুক্ত প্রসব পদ্ধতি। ডাক্তাররা বলছেন এ পদ্ধতি মা ও নবজাতক দুজনের জন্যই নিরাপদ।
তবে আশার কথা হচ্ছে স্বাভাবিক প্রসবের হার বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষিত মিড ওয়াইফ তৈরির উপর গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার।
প্রসব একটি জটিল, কঠিন প্রক্রিয়া। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপ্রয়োজনীয় সিজার রোধে প্রসবকালীন যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ ও মায়েদের কাউন্সিলিং দরকার ।
আরআইবি//