ফ্যাটি লিভার থেকে সিরোসিস
প্রকাশিত : ১১:৫১, ১ জুলাই ২০১৯
লিভার বা যকৃতের খুব সাধারণ একটি রোগ ফ্যাটি লিভার বা যকৃতে চর্বি জমা। বর্তমানে এ রোগে অনেককেই ভুগতে দেখা যায়। তবে সময়মতো চিকিৎসা না নিলে রোগ জটিল হয়ে লিভার সিরোসিসের মতো জটিলতা হতে পারে।
লিভারের মধ্যে সাধারণত ৫ শতাংশ চর্বি শোষণ হতে পারে। যদি ৫ শতাংশের ওপরে চর্বি জমা হয়ে থাকে, তখনই আমরা একে ফ্যাটি লিভার বলে থাকি। ফ্যাটি লিভার স্বাভাবিক থাকলে অর্থাৎ লিভার অ্যানজাইমগুলো যদি না বেরিয়ে থাকে, লিভারে কোনো প্রদাহ না থাকলে তাকে স্ব্বাভাবিক ফ্যাটি লিভার বলা হয়।
তবে ফ্যাটি লিভার থেকে লিভারে প্রদাহ হলে তাকে স্ট্যাটো হেপাটাইটিস। অর্থাৎ ফ্যাটি লিভারের কারণে তার প্রদাহ হয়েছে। ফ্যাটি লিভার রোগের বড় কারণ অ্যালকোহল। এছাড়াও থাইরয়েড হরমোনে কোনো সমস্যা থাকলে ফ্যাটি লিভার হতে পারে। ডায়াবেটিস ওজন আধিক্য, চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণ ফ্যাটি লিভারের ক্ষেত্রে সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আগে ফ্যাটি লিভারকে খুব হালকা চোখে দেখা হতো। তবে বর্তমানে দেখা যাচ্ছে, লিভারে প্রদাহ হয়ে তা আস্তে আস্তে ফাইব্রোসিস হয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ লিভারে যে হেপাটোসাইট, সেগুলোর মধ্যে একটা ফাইব্রোসিস হয়ে যাচ্ছে। একটা ক্ষত ভাব হয়ে পরিবর্তন আসছে। এতে এটি স্বাভাবিক কার্যক্রম করতে পারছে না। প্লিহা বড় হতে পারে। অথবা পেটে পানি আসতে পারে। লিভারের অ্যানজাইমগুলো বেশি বেড়ে গিয়ে থাকলে তা কমানোর জন্য ওষুধ সেবন করতে হবে।
অন্যথায় এক পর্যায়ে তা স্ট্যাটো হেপাটাইটিস হয়ে লিভার সিরোসিস হওয়ার আশঙ্কা থাকে। রোগীর ডায়াবেটিস, থাইরয়েড হরমোন সমস্যা থাকলে সেজন্য চিকিৎসা করাতে হবে। বাড়তি ওজন থাকলে তা কমানোর জন্য রাতের বেলা গরুর মাংস, খাসির মাংস, ডিমের কুসুম এড়িয়ে যাবেন। দিনে কমপক্ষে আধাঘণ্টা হাঁটতে হবে। তবে রোগীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ছে।
ফ্যাটি লিভার আক্রান্তদের শুরুতেই চিকিৎসা ও নিয়ন্ত্রণ করা গেলে এটি নিরাময়যোগ্য। তাই সমস্যা হলে শুরুতেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন, ভালো থাকুন।
লেখক: অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, হেপাটোলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।