বর্ষায় পেটের নানা সমস্যা থেকে সন্তানকে বাঁচানোর উপায়
প্রকাশিত : ১৩:১৭, ১২ জুলাই ২০১৯
ছবি: প্রতীকী
বর্ষায় চারদিকে কাঁদা, পানি থেকে খুব সহজেই ছড়াতে পারে জীবাণু। আর সেখান থেকেই বাঁধতে পারে পেটের নানা অসুখ। তবে শুধু বড়দের নয়, এই ঋতু পরিবর্তনের সময় ছোটদের প্রতিও বাড়তি নজর রাখতে হয়। কিন্তু কীভাবে শিশুর থেকে দূরে রাখবেন অসুখ?
এ ক্ষেত্রে প্রথমেই জেনে রাখা ভাল, কোন কোন অসুখের হানায় শিশু বিব্রত হতে পারে। অমাশয় বা ডিসেন্ট্রি, যা বাড়াবাড়ির পর্যায়ে গেলে রক্তপাতও ঘটায়।
এ ছাড়া ডায়রিয়াও এই মৌসুমের অন্যতম রোগ। শুধু খাবার বা পানীয় থেকেই নয়, অপুষ্টির কারণে ভিটামিন এ ও জিঙ্কের অভাবও অসুখ ডাকে। এ ছাড়া সর্দি-কাশি কমাতে অনেক সময় কিছু অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়, যা থেকে ডায়রিয়া হতে পারে। কৃমি ও বদহজমও বাসা বাঁধে এই সময়।
তাই চলতি এই অসুখগুলোর ক্ষেত্রে প্রথম থেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। অবহেলা তো চলবেই না এমনকি, অসুখ যাতে বাসা না বাঁধে শরীরে, সে দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। কী কী মেনে চললে অসুখ এড়াতে পারবেন?
আসলে বর্ষা মানেই আবহাওয়ায় জলীয় ভাবের সঙ্গে পানি-কাদা বাড়বে। নোংরাও বাড়বে। তাই প্রথমেই বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার রাখুন। খাবার বানানোর সময় যে পানি বা পাত্র ব্যবহার করছেন তা যেন খুব পরিচ্ছন্ন হয়।
আর হাত ভাল করে ধুয়ে খাওয়ান শিশুকে। সন্তান নিজে হাতে খেলেও নজর রাখুন ওর হাইজিনের দিকে।
এছাড়া, শিশুর বয়স এক বছরের মধ্যে হলে তাকে অন্য খাবার দেওয়ার চেয়ে মাতৃদুগ্ধ পান করান। বদহজম ঠেকাতেও এই দাওয়াই উপকারী।
ডায়রিয়া হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে শিশুকে জিঙ্ক সিরাপ এবং প্রোবায়োটিক ক্যাপসুল দেওয়া যেতে পারে। তবে পেটের সমস্যায় সবার আগে স্যালাইন ওয়াটার দিন।
পাঁচ বছর বা তার কম বয়সী বাচ্চাদের ভাইরাল ডায়রিয়া হওয়ার প্রবণতা বেশি। শিশুর দেড় থেকে আড়াই মাস বয়স পর্যন্ত ডায়রিয়া আটকানোর বিশেষ ভ্যাকসিন নেওয়ান।
শিশুর খাবার পাতে সবুজ শাক-সবজি ও ফলমূল রাখুন। তবে কাটা ফল দেবেন না। রাস্তার পানীয় ও খাবার থেকে দূরে রাখুন।
শিশুর স্কুলের টিফিনের প্রতি নজর দিন। বর্ষায় সংক্রমণ বাড়ার ভয় তাকে। তাই পেটে সয় না এমন খাবার একেবারেই দেওয়া যাবে না। খুব ভাজাভুজি বা তেল-মশলার খাবার এড়িয়ে চলুন। টিফিনের খাবার ঠাণ্ডা হয়ে যায়। তাই এমন কিছু দেবেন না যা ঠাণ্ডা হওয়ার পর আরও বিষাক্ত। এড়িয়ে চলুন নুডলস বা প্রিজারভেটিভ মেশানো খাবার। শিশু খুব বায়না করলে বরং দুই-এক দিন বাড়িতে বানিয়ে গরম গরম খাইয়ে দিন সে সব।
অন্তত পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত পানীয় ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করে খাওয়ান। পানি পরিশোধনের ব্যবস্থা থাকলে সেই যন্ত্রটিও নিয়মিত পরিষ্কার করুন। এলাকায় ডেঙ্গু ধরা পড়লে পানি পরিশোধনের পরেও শিশুকে সেই পানি গরম করে বাড়তি সুরক্ষা নিয়ে পান করান।
পর্যাপ্ত ঘুম ও পানি খাওয়ার পরিমাণ মাথায় রাখুন, কিছুতেই শরীর থেকে পানির পরিমাণ কমতে দেওয়া যাবে না। এতে ডিহাইড্রেশন রোখা সহজ হবে।
কোনও কোনও খাবারে শিশুর গ্যাস-অম্বলের সমস্যা থাকলে তা এড়াতে হবে।
বাড়ির পানির ট্যাঙ্ক নিয়মিত পরিষ্কার করুন।
পেটে ব্যথা হলে নিজেরা চিকিৎসা না করে ঘরোয়া স্যালাইন ওয়াটার দিয়েই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
(আনন্দবাজার অবলম্বনে)