যে কারণে এবার ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি
প্রকাশিত : ১৫:৫০, ২৪ জুলাই ২০১৯
ডেঙ্গু জ্বর, যা ব্রেকবোন ফিভার নামেও পরিচিত, একটি সংক্রামক ট্রপিক্যাল ডিজিজ যা ডেঙ্গু ভাইরাস-এর কারণে হয়। প্রতিবছরের মতো এবারও বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এক দিনে রেকর্ড সংখ্যক ৪৭৩ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে শুধু রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৬৯ জন। এছাড়া, গতকাল পর্যন্ত ৭ হাজারের বেশি আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
তবে এটি নিয়ে এখনও খুব বেশি উদ্বিগ্ন হতে রাজী নন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক মীরজাদী সাব্রিনা।
তবে পরিস্থিতির যাতে অবনতি না হয় সেজন্য এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসের জন্য বাসাবাড়ি থেকে শুরু করে সবার আরও সচেতনতার ওপর জোর দেন তিনি।
মশা নিয়ে গবেষণা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার। তার মতে, এবার সচেতন হওয়া বেশি জরুরি। কয়েকটি কারণে এবার ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি হওয়ার আশঙ্কা আছে।
‘এবার ফেব্রুয়ারিতে বৃষ্টি হয়েছে। এডিস মশার ডিম ছয়মাস পর্যন্ত শুকনা স্থানে থাকলে বেঁচে থাকতে পারে। এবার আগে বৃষ্টির কারণে ও এখন থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে এডিস মশার ঘনত্ব বাড়ছে।’
আবার ঢাকাসহ সারাদেশে পানির স্বল্পতার কারণে মানুষ বালতি কিংবা ড্রামে পানি জমিয়ে রাখে। আর বিভিন্ন ধরণের নির্মাণ কাজের সাইটগুলোতে চৌবাচ্চা, ড্রাম এডিস মশার বিস্তারে প্রধান ভূমিকা পালন করছে, বলে মনে করেন তিনি।
সে কারণেই দেশজুড়ে জেলা উপজেলা পর্যন্ত নির্মাণকাজ বেড়ে যাওয়ায় বাশার মনে করছেন নির্মাণ সাইটগুলোতে পানি জমে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়িয়ে দিতে পারে।
কিন্তু ঢাকায় ডেঙ্গু নিয়ে প্রচার প্রচারণা কিছু চোখে পড়লেও ঢাকার বাইরে বিশেষ করে মফস্বল এলাকাগুলোতে এ নিয়ে তেমন কোনও উদ্যোগ নেই বললেই চলে।
তবে ঢাকার দুটি সিটি করপোরেশন থেকে সতর্কতামূলক প্রচারের পাশাপাশি মশা মারতে ওষধ দিতে দেখা যায় মাঝে মধ্যে। দুটি করপোরেশন থেকেই বলা হচ্ছে, ডেঙ্গু নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলছেন, মশা প্রতিরোধে সবার সচেতনতাই একমাত্র উপায়। তবে আক্রান্তদের চিকিৎসায় ঢাকাসহ দেশের সর্বত্র চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করেছেন তারা।
‘যে পরিস্থিতি এখন বিদ্যমান তাতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সারা দেশে সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ঢাকা বা ঢাকার বাইরে যেখানেই কারও জ্বর হলেই বিলম্ব না করে হাসপাতালে যেতে হবে আর এটি করা হলে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তির ভয় বা আতংকের কিছু নেই।
(বিবিসি অবলম্বনে)