কোলন ক্যানসার চিকিৎসায় নতুন পদ্ধতির উদ্ভাবন
প্রকাশিত : ১২:১৩, ১১ নভেম্বর ২০১৯
বিশ্বে প্রতিবছর কোলন ক্যানসারে মৃত্যু হয় প্রায় ৬ লাখ মানুষ। আবার ক্যানসারে মোট মৃত্যুর ৮ শতাংশের জন্যই দায়ী কোলন ক্যানসার। এই কোলন ক্যানসার চিকিৎসায় নতুন এক পদ্ধতি আবিষ্কার করলেন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা। শরীরে বিশেষ ব্যাকটেরিয়া ঢুকিয়ে প্রতিরোধী ব্যবস্থা সক্রিয় করে ধ্বংস করা হয় ক্যানসারে আক্রান্ত কোষগুলোকে। এ পদ্ধতি শরীরের অন্য অংশেও ক্যানসারের কোষগুলো ছড়িয়ে পড়তে দেয় না।
ইন্ডিয়ান ইনস্টিটউট অব সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইসার)-এর বিজ্ঞানীরা ‘প্রোবায়োটিক থেরাপি’ নামে অভিনব একটি পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন। এই পদ্ধতির মাধ্যমে কোলন ক্যানসার সারিয়ে তোলা সম্ভব। সম্প্রতি আমেরিকার বস্টনে অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল জেনেটিক্যালি ইঞ্জিনিয়ারড মেশিন (আইজেম) গ্লোবাল কম্পিটিশনে এই আবিষ্কার স্বর্ণপদক লাভ করেছে।
গবেষক দলের অন্যতম ভবেশ কুমার ত্রিপাঠি বলেছেন, বিশেষ একটি ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে ল্যাকটেট জাতীয় একটি রাসায়নিক যৌগকে শরীরে ঢুকিয়ে দেহের প্রতিরোধী ব্যবস্থাকে সক্রিয় করে তুলতে পেরেছি আমরা। সেই প্রতিরোধী ব্যবস্থা ক্যানসারে আক্রান্ত কোষগুলোকে মেরে ফেলতে সক্ষম হয়েছে। দেহের অন্যান্য অংশে ক্যানসারের কোষগুলো ছড়িয়ে পড়তেও দিচ্ছে না এই প্রতিরোধী ব্যবস্থা।
প্রোবায়োটিক থেরাপি সম্পর্কে গবেষক দলের আরেক সদস্য মেঘা মারিয়া জ্যাকব বলেছেন, সব ধরনের ক্যানসারে আক্রান্ত কোষের মতো কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত কোষগুলোকেও আলাদাভাবে চেনা যায়। এগুলোকে বলা হয় ‘স্পেশাল মার্কার’। আমরা যে ব্যাকটেরিয়া বেছেছি, তা কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত কোষের স্পেশাল মার্কার চিনতে পারে। আর সেই কোষগুলো যাতে দেহের অন্য অংশে ছড়িয়ে না পড়তে পারে, সেজন্য তাদের বেঁধে ফেলতে পারে। এটাই হলো ‘প্রোবায়োটিক থেরাপি।’
এবার জানা যাক প্রোবায়োটিক থেরাপি কিভাবে কাজ করে, সে সম্পর্কে...
ক্যানসারের কোষগুলোতে বেশি পরিমাণে ল্যাকটেট থাকে। এই ধারণা থেকে শরীরে যে ব্যাকটেরিয়া ঢুকানো হয় তাতেও প্রচুর পরিমাণে ল্যাকটেট দিয়ে থাকেন গবেষকরা। এই ল্যাকটেট দেখে ক্যানসারের কোষগুলো আকৃষ্ট হতেই ব্যাকটেরিয়ার মধ্য থেকে বেরিয়ে আসে একটি রাসায়নিক যৌগ। এর কারণে সক্রিয় হয়ে ওঠে দেহের প্রতিরোধী ব্যবস্থা। তারপর সেই প্রতিরোধী ব্যবস্থাই মেরে ফেলে কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত কোষগুলোকে।
এএইচ/