ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

স্ত্রী রোগ ও গর্ভবতী মায়ের রোজা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৩৫, ২৯ এপ্রিল ২০২০

আত্মশুদ্ধির মাস মাহে রমজান। এমাসে সকল মুসলিম নরনারীর উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে। তবে অনেক সময় রোগের কারণে রোজা রাখা যায় না। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে গর্ভবতী অবস্থায়। গর্ভবতী মায়েরা রোজা রাখতে পারবেন কি না, সে ব্যাপারে চিন্তিত হন অনেকেই। হয়তো গর্ভবতী মা রোজা রাখতে চাইলেন, কিন্তু বাদ সাধলেন আপনজনেরা। ফলে হবু মা এবং তাঁর অনাগত সন্তানের সুস্থতা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন সবাই। গর্ভাবস্থায় রোজা রাখলে কোনো ক্ষতি নেই। তাই এ নিয়ে খুব দুশ্চিন্তারও কিছু নেই।

গর্ভবতী মায়েরা কিভাবে রোজা রাখবেন? এসময় স্ত্রী রোগ ও গর্ভবতী মায়েদের করণীয় কী? এ বিষয় নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা কমিউনিটি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. সারিয়া তাসনিম। 

তিনি বলেন, আসলে গর্ভকালীন সময়ের ওপর নির্ভর করে একজন গর্ভবতী মা রোজা রাখতে পারবেন কি না। সহজভাবে যদি বলতে হয়- গর্ভবতী মায়েরা চাইলে রোজা রাখতে পারেন। তবে তাকে অবশ্যই খাবারের বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। খাবারের চাহিদা পূরণ হচ্ছে কি-না, তা দেখতে হবে।

এছাড়া প্রস্রাবে সমস্যা হচ্ছে কি-না তাও মাথায় রাখতে হবে। তাহলে রোজা রাখা সম্ভব। গর্ভবতী মায়েদের ৫০০ ক্যালোরির বেশি খাবার খেতে হয়। তাই এ ক্ষেত্রে রোজা রাখলেও ভাত ও সবজি খেতে হবে পরিমাণ মতো। এসব খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হবে না। তবে এটা বেশি খেয়াল রাখা দরকার যতো বেশি ধরনের খাবার খাওয়া সম্ভব ততো বেশি ভিটামিন পাওয়া যাবে। প্রাণীজ ও ভেষজও আমিষ খাবার খেতে হবে। ফলিক এসিডও খাওয়া যেতে পারে। যা গর্ভপাত রোধ করবে।

এছাড়া মাসিকের সময় রোজা রাখার বিধান ইসলামে না থাকলেও কেউ যদি চায় পুরো মাস সে রোজা রাখেবে। তাহলে সে ক্ষেত্রে সে মাসিক শুরু হওয়ার ১০ দিন আগে থেকে ওষুধ খেয়ে রোজার মাসে মাসিক বন্ধ রাখতে পারবে। যার মাধ্যমে ৩০টি রোজায় মাঝে গ্যাপ না দিয়ে পুরো মাস রোজা রাখা সম্ভব। তবে মাসিক বন্ধ রাখার জন্য ওসুধ খেলে, কেউ এটা সহ্য করতে পারবে কি-না সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। তবে এর কারণে পরবর্তী মাসিকের সময় পেটে ব্যাথা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া বা প্রস্রাবে ইনফেকশান অথবা পেটে ব্যাথা হলে সে ক্ষেত্রে কিডনির সমস্যা হতে পারে। তাই এ ক্ষেত্রে কেউ রোজা রাখতে চাইলে অবশ্যই তাকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। 

এছাড়া আরও কিছু বিষয় নিচে দেওয়া হলো—

♦ গর্ভকালীন প্রথম তিন মাস ও শেষের তিন মাস একটু ঝুঁকিপূর্ণ বলে এই সময় রোজা না রাখাই ভালো। তবে কেউ ইচ্ছা করলে মধ্যবর্তী তিন মাসে রোজা রাখতে পারেন।

♦ গর্ভাবস্থায় যাঁরা রোজা রাখতে চান, সাহরিতে তাঁরা একজন স্বাভাবিক মানুষের খাদ্যতালিকা অনুযায়ী খাবার খাবেন। তবে ক্যালরি ও আঁশযুক্ত খাবারের দিকে বেশি খেয়াল রাখতে হবে।

♦ রোজার সময় বেশি বিশ্রাম নিন। দুশ্চিন্তা এড়িয়ে চলুন।

♦ গর্ভকালীন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপের রোগী বা যাঁরা হাই রিস্ক প্রেগন্যান্সি বা ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভধারণ করা অবস্থায় রয়েছেন, তাঁদের একটু বেশি সতর্ক থাকা উচিত। হাই রিস্ক প্রেগন্যান্সি মায়েদের রোজা না রাখাই ভালো।
এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি