রমজানে শরীর সুস্থ রাখতে চিকিৎসকের পরামর্শ
প্রকাশিত : ১৩:১৬, ৬ মে ২০২০ | আপডেট: ১৩:১৬, ৬ মে ২০২০
রমজান মাসে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকেন। তবে রোজার সময়ে হঠাৎ করেই আমাদের দৈনন্দিন জীবনের রুটিন পরিবর্তন হয়ে যায়, যার ফলে অনেকেরই এসময় বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এ সময় সমস্যা এড়াতে কি করতে হবে? কি কি সতর্কতা অবলম্বন করলে রোজায় সুস্থ থাকা সহজ হবে?
এ নিয়ে ‘রমজানে শরীরের বিভিন্ন সমস্যা ও তার প্রতিকার’ নিয়ে আলোচনা করেছেন অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুর রহিম, ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।
অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুর রহিম বলেন, সারাদিন রোজা থাকার পর ইফতারের সময় অনেকেই একসাথে অনেক খাবার খেয়ে ফেলেন। মনে রাখবেন একসাথে বেশি খাবার খাওয়ার ফলে উচ্চরক্তচাপসহ অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এসময় পরিমিত খাবার খেতে হবে।
অপরদিকে সারাদিন না খেয়ে থাকার পর গরম, ভাজাপোড়া কিংবা তৈলাক্ত খাবার খেলে পেট ব্যথা, বুক জ্বালাপোড়া, বমিভাবসহ নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
পেপটিক আলাসারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, রমজানে পেপটিক আলসার প্রভাব বিস্তার করতে পারে। তবে আলসার যদি কম থাকে এবং খাবার যদি পরিমিত খাওয়া হয় তাহলে রোজা রাখতে সমস্যা নেই।
রমজানের সময় মাথা ব্যাথার বিষয়ে ডা. মো. আব্দুর রহিম বলেন, মাথাব্যথা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। তাই অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নিতে হবে। অনেকের আবার দুশ্চিন্তার কারণে মাথা ব্যথা হয়। তাই এ সময় দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত থাকতে হবে।
ইতেকাফকারীদের সম্পর্কে তিনি বলেন, ইতেকাফে যারা বসবে তাদের যদি কোনো নির্দিষ্ট রোগ থাকে তাহলে তারা সঙ্গে করে ওই রোগের ওষধ নিতে পারে। সাধারনভাবে আপনি চাইলে মাথা ব্যাথা ও গ্যাসটিকের ওষধ সঙ্গে রাখতে পারেন।
ডায়াবেটিস রোগীদের সম্পর্কে তিনি বলেন, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য রমজান একটি আশীর্বাদ। তারা এই সময় পরিমিত খাবার খাওয়ার মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন।
ডায়াবেটিস রোগীদের ওষধ খাওয়ার ব্যপারে তিনি বলেন, ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে তারা ওষধ খাওয়ার নতুন তালিকা করবেন। যাদের পিত্তথলির সমস্যা রয়েছে ও স্টোন রয়েছে তাদের জন্য পরিমিত খাবার খেতে হবে।
উচ্চরক্তচাপ যাদের আছে তারা রোজা রাখতে পারেন। তবে তাদেরকে নিয়মিত ওষধ খেতে হবে। তাহলেই তারা রোজা রাখতে পারবেন। ইউরিক এসিড থাকলে ডালের তৈরি খাবার কম খেতে হবে। এখন বাজারে ইউরিক এসিডের নতুন ভালো ওষধ পাওয়া যায়।
এ সময় অনেকের শরীর শুকিয়ে যায়। পেটের দু’পাশে ব্যথা হয়। আমাশয় থাকে। পায়খানা পরিষ্কার হয় না। এ সমস্যাগুলো বিভিন্ন কারণে হতে পারে। তবে এ সমস্ত রোগীদের বিশেষ করে খাবারের প্রতি নজর দিতে হবে। যথেষ্ট পরিমাণ পানি খেতে হবে। শাক সবজি বেশি করে খেতে হবে।
শরীরের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখার ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি আমাদের মনোযোগ দিতে হবে। অনেক সময় মানসিক অসুস্থতার কারণে উচ্চরক্তচাপ ও ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য রোগ বেড়ে যেতে পারে।
এসএ/