বিক্রি করা হচ্ছে চে গুয়েভারার অ্যাপার্টমেন্ট
প্রকাশিত : ১৭:০৯, ২৬ জুন ২০২০
গত শতকের বামপন্থী বিপ্লবী আইকন এরনেস্তো চে গুয়েভারার জন্ম নেওয়া অ্যাপার্টমেন্টটি বিক্রি হচ্ছে। আর্জেন্টিনার শহর রোসারিওর উরকিসা ও এনত্রে রিও সড়কের মাঝামাঝিতে অবস্থিত এই অ্যাপার্টমেন্টটি বিক্রির জন্য উঠছে বলে বিবিসি’র খবরে বলা হয়।
চে গুয়েভারার ওই জন্মভিটার বর্তমান মালিক আর্জেন্টাইন ব্যবসায়ী ফ্রান্সিসকো ফারুগিয়া জানান, ২০০২ সালে রোজারিও শহরের সিটি সেন্টারে অবস্থিত নিও-ক্ল্যাসিকাল ধাঁচের ২ হাজার ৫৮০ স্কয়ার ফিটের ওই অ্যাপার্টমেন্টটি কেনেন তিনি। তার ইচ্ছা ছিল সেখানে একটি সংস্কৃতি কেন্দ্র গড়ে তোলার। কিন্তু সে পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। এখন তিনি জায়গাটি বিক্রি করে দিতে চান।
তবে অ্যাপার্টমেন্টটি বিক্রির জন্য কত দাম হাঁকাবেন এ ব্যাপারে কিছু বলেননি ফারুগিয়া। গত কয়েক বছরে নাম করা অনেক মানুষ এটি দেখতে এসেছেন। এর মধ্যে উরুগুয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট জোসে পেপে মুজিকা ও কিউবার প্রয়াত কিংবদন্তি বিল্পবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রোর সন্তানেরাও রয়েছেন।
১৯২৮ সালে এই জায়গাতেই সম্ভ্রান্ত এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেন এরনেস্তো চে গুয়েভারা। ১৯৬৭ সালে বলিভিয়ায় গেরিলা যুদ্ধকালে দেশটির সেনাবাহিনীর হাতে ধরা পড়ে প্রাণ হারান তিনি। এরপর থেকেই চের এই জন্মস্থানটি মানুষের কাছে আগ্রহের বিষয়। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে স্বনামধন্য অনেকেই এ জায়গাটি পরিদর্শনে যান।
এসব ভ্রমণকারীদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য নাম আলবার্তো গ্রান্দোস। চে’র অন্যতম বন্ধু। গত শতকের পঞ্চাশের দশকে তরুণ চিকিৎসক চে যখন মোটরসাইকেলে চড়ে দক্ষিণ আমেরিকা জুড়ে চিকিৎসা দিয়ে বেড়াতেন তখন সঙ্গে থাকতেন গ্রান্দোস। ২০১১ সালে তিনিও না ফেরার দেশে চলে যান।
একনায়ক ফুলজেনসিও বাতিস্তাকে উৎখাত করে ১৯৫৩-৫৯ সালে কিউবার বিপ্লবের পেছনে অন্যতম ভূমিকা পালন করেন চে। দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের মানুষের দারিদ্র্য ও ক্ষুধা গভীর দাগ কাটে গুয়েভারার মনে। অর্থনৈতিক বৈষম্য গুঁড়িয়ে মানুষকে মুক্তি দিতে বেছে নেন বিপ্লবের পথ।
সে ইচ্ছা থেকেই কিউবা থেকে চলে আসেন বলিভিয়ায়। প্রেসিডেন্ট রেনে বারিয়েন্তোস ওর্তুনোর বিপক্ষে বিদ্রোহের জন্য নিজের নেতৃত্ব গড়ে তোলেন বিপ্লবী বাহিনী। কিন্তু সেখানেই থেমে যেতে হয় চে’কে।
যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় বলিভিয়ান আর্মি চে ও তার সহযোগীদের বন্দী করে। ১৯৬৭ সালের ৯ অক্টোবর লা হিগুয়েরা গ্রামে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। অজ্ঞাত স্থানে সৎকার করা হয় তার মৃতদেহ। তবে ১৯৯৭ সালে চে’র দেহাংশ উদ্ধার করা হয় এবং তা কিউবায় ফিরিয়ে এনে আবার মাটি দেওয়া হয়।
মৃত্যুর অনেক বছর পার হয়ে গেলেও বিপ্লবীদের জন্য এখন পর্যন্ত আদর্শ হিসেবে রয়েছেন তিনি। অনুসারীরা চে’কে প্রতিশ্রুতি আর আত্মত্যাগের দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখেন।
এএইচ/এসি
আরও পড়ুন