ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

চীনের বিরুদ্ধে নীরব জার্মানি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৫০, ৯ জুলাই ২০২০ | আপডেট: ১৬:৫১, ৯ জুলাই ২০২০

জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং- ডয়চে ভেলে

জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং- ডয়চে ভেলে

জার্মানির ওপর চীনের বিরুদ্ধে মানবাধিকার প্রশ্নে কঠোর অবস্থান নেয়ার চাপ বাড়ছে। কিন্তু ম্যার্কেল সরকারের নীরবতা ভাঙার কোনো লক্ষণ নেই। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবস্থাও তথৈবচ। দেড় দশক ধরে আঙ্গেলা ম্যার্কেল জার্মানির চ্যান্সেলর। এ সময়ে ১২বার বেইজিং সফর করেছেন তিনি। তাঁর নেতৃত্বে দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার হয়েছে। ২০১৯ সালে দুই হাজার ৬০০ কোটি ইউরোর বাণিজ্য হয়েছে দুই দেশের মধ্যে। জার্মানির সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার এখন চীন। ইউরোপ জুড়ে বাণিজ্যের প্রসার ঘটিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নেরও দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার হয়ে গেছে দেশটি। এক্ষেত্রে তাদের চেয়ে এগিয়ে আছে শুধু যুক্তরাষ্ট্র। 

অন্য দিকে চীনে মানবাধিকার লঙ্ঘন বাড়ছে। উইগুর ইস্যু অনেকদিন ধরেই চীনের অস্বস্তির কারণ। সম্প্রতি সঙ্গে যোগ হয়েছে হংকংয়ে কার্যকর করা জাতীয় নিরাপত্তা আইন। এসবের বিরুদ্ধে জার্মানির কঠোর অবস্থানের দাবি তুলছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো। জার্মানির রাজনীতিবিদরাও তুলছেন একই দাবি। কিন্তু জার্মানি একেবারে নীরব। কারণ এবং জার্মানির প্রকৃত দৃষ্টিভঙ্গিই যেন তুলে ধরেছেন জার্মান শিল্পপতি সিমেন্সের প্রধান জো কায়জার। গত সেপ্টেম্বরে ম্যার্কেলের বেইজিং সফর সম্পর্কে তিনি জার্মান ভাষায় বলেছিলেন, ‘ভান্ডেল ডুর্শ হান্ডেল’, অর্থাৎ ‘বাণিজ্যের মধ্য দিয়ে পরিবর্তন’৷ এভাবে দুই দেশের সম্পর্কে বাণিজ্য যে বিপুল প্রভাব ফেলছে তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করার পর সিমেন্স প্রধান আরেও বলেছিলেন, চীনের প্রতি জার্মানির দৃষ্টিভঙ্গি ‘সুচিন্তিতি এবং সম্মানজনক’ হতে হবে। সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য সব ধরণের বিতর্ক এড়িয়ে চলার প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দিয়েছিলেন তিনি।

হংকংয়ে হতাশা:
হংকং প্রশ্নে জার্মানির কৌশলী অবস্থানের সমালোচনা করছেন অনেকেই। এ নিয়ে হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থিরাও হতাশ। জার্মান কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্স’র (ডিজিএ) গবেষক ডিডি টাটলো বলেন, ‘গত কয়েক মাসে হংকং প্রশ্নে জার্মানির নীরবতা হংকংয়ের মানুষকে হতাশ করেছে। দেখা গেছে জার্মানি প্রকাশ্যে কিছু বলছে না আর চীনের বিষয়ে প্রতিক্রিয়াগুলোও হচ্ছে দুর্বল। আমার মনে হয়, হংকংয়ের মানুষ যেহেতু যথেষ্ট বুদ্ধিমান, তাই তারা নিশ্চয়ই পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। তারা জার্মানি যে প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করছে না সেটা ঠিকই বুঝতে পারছে।’

ইউরোপে চীনের প্রভাব:
জার্মানিসহ ইউরোপের প্রায় সব দেশের সঙ্গেই বাণিজ্যিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করেছে চীন। চীনের বিশাল অঙ্কের বেল্ট অ্যান্ড রোড অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে ইতালি। পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোও এশিয়ার জায়ান্টদের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াচ্ছে। সেপ্টেম্বরে জার্মানির লাইপসিশ শহরে ইইউ-চীন সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। করোনা পরিস্থিতির কারণে সম্মেলন স্থগিতে হলেও পুরোপুরি বাতিল হয়নি।

অর্থনৈতিক অবরোধের দাবি এবং বিরোধিতা:
মানবাধিকার প্রশ্নে চীনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়ার দাবি জোরদার হলেও জার্মানি বা ইউরোপীয় ইউনিয়নে তার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। জার্মানির সামাজিক গণতান্ত্রিক দল এসপিডির নেতা এবং ইউরোপীয় সংসদের সাবেক সভাপতি মার্টিন শুলৎস মনে করেন, জার্মানি এবং ইইউর উচিত চীনের সকল পণ্য প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা। তবে জার্মানির ডানপন্থি দল এফডিপির নেতা ক্রিস্টিয়ান লিন্ডনার মনে করেন বাণিজ্যকে অগ্রাহ্য করা ঠিক হবে না। (ডয়চে ভেলে)

এমএস/এসি
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি