আর নয় ‘মাই লর্ড’ সম্বোধন
প্রকাশিত : ১৮:৩১, ১৬ জুলাই ২০২০
সিনেমা-সিরিয়ালে কোর্টরুমে বা বাস্তবের মাটিতে আদালতের বিচারপতিকে 'মাই লর্ড' বা 'ইওর লর্ডশিপ' বা 'ইওর অনার' বলে সম্বোধন করা হয়ে থাকে। তবে এবার সেই প্রথায় ছেদ টানল রাজস্থান, কলকাতাসহ ভারতের বেশ কয়েকটি হাইকোর্ট। গত সোমবার (১৩ জুলাই) রাজস্থান হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সতীশ কুমার শর্মা একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে এমন ঘোষণা দেন।
ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী জানা গেছে, দেশটির সংবিধানে বর্ণিত সাম্যের নীতির প্রতি মর্যাদা পোষণ করতেই বহু পুরনো এই ব্রিটিশ প্রথা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সেইমতো গত ১৩ জুলাই রাজস্থান হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি রবীন্দ্র ভাট-এর নেতৃত্বে এক বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়।
এরই ধারাবাহিকতায় বহু বছরের ‘ঐতিহ্যবাহী’ ওই নিয়মে এবার বদল আনতে চলেছে কলকাতা হাইকোর্টেও। এই বদলের যিনি পুরোধা তিনি কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিবিএন রাধাকৃষ্ণণ। প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দেন, তিনি চান বাংলা এবং আন্দামানের বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তারা যেন তাকে প্রচলিত ‘মাই লর্ড’ নয়, ‘স্যর’ বলে সম্বোধন করেন।
এখন থেকে এই নিয়মই বলবৎ হবে এমনটাই জানান হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবারই হাইকোর্টের রেজিস্টার জেনারেল রাই চট্টোপাধ্যায় প্রধান বিচারপতির এই বার্তা পাঠিয়ে দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ এবং আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের জেলা জজ এবং নিম্ম আদালতের প্রধান বিচারপতিদেরও।
প্রধান বিচারপতির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, “এখন থেকে রেজিস্টার-সহ জেলা বিচার বিভাগের কর্মকর্তারা মাননীয় প্রধান বিচারপতিকে ‘মাই লর্ড’ কিংবা ‘লর্ডশীপ’ এর পরিবর্তে ‘স্যর’ বলে সম্বোধন করবেন। বিচারবিভাগীয় কর্তাদেরও এমনটাই করতে হবে।
এর আগে ২০০৯ সালে মাদ্রাজ হাইকোর্টের বিচারপতি কে চন্দ্রু-ও একইভাবে বিচারপতিদের 'ইওর লর্ডশিপ' বলে সম্বোধর করার নীতির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। পাশাপাশি ২০১৪ সালেও একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানির সময়ে বিচারপতি এইচ এল দাত্তু ও বিচারপতি এস এ বোবদের বেঞ্চ জানিয়েছিল, বিচারপতিদের ‘মাই লর্ড’ বা ‘ইয়োর অনার’ বা 'ইওর লর্ডশিপ' বলে সম্বোধন করাটা বাধ্যতামূলক নয়।
প্রসঙ্গত, ২০১৬-সালেও বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার তরফ থেকে আইনজীবীরা বিচারপতিদের 'স্যার' সম্বোধন করার নিয়ম বাধ্যতামূলক করেছিল।
এনএস/
আরও পড়ুন