ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

দালাই লামার প্রতিষ্ঠান ধ্বংসে ব্যর্থ হয়েছে চীন: বিশেষজ্ঞদের মত

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:১৪, ১০ জুন ২০২১ | আপডেট: ২০:২৫, ১০ জুন ২০২১

চলমান তিব্বত ইস্যু এবং চীন কর্তৃক দালাই লামার প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের বিষয়ে একটি ওয়েবিনার আয়োজন করেছে দিল্লির গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ল অ্যান্ড সোসাইটি অ্যালায়েন্স’। ‘দালাই লামার প্রতিষ্ঠান ধ্বংসে চীনের কমিউনিস্ট সরকার ও তার ব্যর্থতা: ভবিষ্যতের পাঠ’ শিরোনামে গত শনিবার এই  ওয়েবিনারটি অনুষ্ঠিত হয়। বিষয়টি নিয়ে প্যানেল আলোচনা করেন বিশেষজ্ঞরা।

ওয়েবিনারের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রায় এক শতক হয়ে গেছে ১৪তম দালাই লামা তার রাজনৈতিক ভূমিকা ত্যাগ করেছিলেন। তবে এখন কেন্দ্রীয় তিব্বত প্রশাসন ধর্মশালার ভিত্তিতে সেই রাজনৈতিক ভূমিকা পালন করছে। ১৪তম দালাই লামার অগ্রযুগে চীন তিব্বতের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ ও তিব্বতের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের উপর তার প্রভাবকে আরও শক্তিশালী করার জন্য পরবর্তী দালাই লামাকে বেছে নেওয়ার কৌশল অবলম্বন করে।

ওয়েবিনারে জেনেভাভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠনের (তিব্বত ব্যুরো) বিশেষ কর্মকর্তা থিনলে চুকি বলেন, ‘চীন তিব্বতের ওপর ১৯৫০ সালভিত্তিক সম্প্রসারণবাদী এজেন্ডা গ্রহণ করেছে। চীন অব্যাহতভাবে দালাই লামার প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া বৌদ্ধ ধর্মমতকে চীনা সংস্কৃতি ও মতে নিয়ে আসতে ধারাবাহিকভাবে দমনমূলক নীতি প্রয়োগ করেছে। তারা তিব্বতের পরিচয় মুছে ফেলে মানুষকে চীনা পরিচয়ে গড়ে তুলতে চাইছে।’

তিব্বতের ঐতিহাসিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপারে চুকি বলেন, ‘দালাই লামা কিংবা দালাই লামার প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে ১৬৪২ সাল থেকে তিব্বতের শাসন কার্য পরিচালিত হচ্ছে। তিব্বত শাসনে এর ৪০০-৫০০ বছরের ইতিহাস রয়েছে। পবিত্র এই ক্ষমতা দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে চীন।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের সময় থেকে তিব্বত জুড়ে আদর্শিক ও জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে দুঃশ্চিন্তা আরও প্রকট হয়েছে। চীন দেখানোর চেষ্টা করছে একক সংস্কৃতি, ভাষা ও পরিচয়ধারী তিব্বতের বৌদ্ধরা দেশের জাতীয় নিরপত্তার হুমকিস্বরূপ। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের উপর নিপীড়ন কেবল চীন সীমান্তের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। ফ্রিডম হাউসের প্রতিবেদনে বলা হয়, তিব্বতে বৌদ্ধরা, অন্যান্য সংখ্যালঘু যেমন উইঘুররাও জাতিগত নিপীড়নের শিকার।’

ওয়েবিনারে আরেক বক্তা টেনচো গায়াতসো বলেন, ‘তিব্বতের জনগণ ও দালাইলামার মধ্যে খুব গভীর সম্পর্ক।’ গায়াতসো ওয়াশিংটন ডিসিভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন ফর তিব্বত’র অন্তর্বর্তীকালীন ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ইন্টারন্যাশনাল ডিরেক্টর অব আউটরিচ। তিনি বলেন, ‘দালাই লামার প্রতিষ্ঠানগুলো ১৬ ও ১৭ শতকে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি ৫ম দালাই লামার সময় রাজনৈতিক কর্তৃত্ব পায়। তিব্বতিবাসীর কাছে দালাই লামা খাঁটি, করুণাময় এবং তিব্বত সৃষ্টির পর থেকে বহু শতাব্দী ধরে উপস্থিত রয়েছেন। তিব্বতিরা বিশ্বাস করেন, প্রথম বৌদ্ধ রাজা ৭ম শতাব্দীতে পুনর্জন্ম লাভ করে ভারত থেকে তিব্বতে বৌদ্ধধর্ম নিয়ে এসেছিলেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘চীন তিব্বতে মিথ্যার খুঁটি বসিয়েছে। তারা মিথ্যা ঐতিহাসিক গল্প রচনা করেছে। তারা শক্তি ও ক্ষমতা ব্যবহার করছে সত্যকে বিলীন ও তাদের মিথ্যাকে প্রতিষ্ঠিত করতে।’

গায়াতসো বলেন, ‘চীন দালাইলামার নেতিবাক ছবি তৈরি করেছে। তারা তিব্বতের সকল ইতিহাস পুনর্লিখনের চেষ্টা করেছে। চীন সরকার দালাই লামাকে ‘ভেড়ার পোশাক পরিহিত নেঁকড়ে’ বলে সম্বোধন করে। 

চীনের এইসব চেষ্টার পরও দালাই লামা ও তিব্বতের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হয়েছে। তিব্বতি যুবক সন্ন্যাসীরা চীনা শাসনের অধীনে যে নিপীড়নের শিকার এবং দালাইলামাকেও কখনো দেখিনি, তবুও দালাই লামার সঙ্গে তাদের আনুগত্য ও আধ্যাত্মিক সংযোগ অবিশ্বাস্য।’  সূত্র: এএনআই

এসি
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি