ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

পরবর্তী দালাইলামা নির্বাচনের দিকে ঝুঁকছে চীন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:০৩, ৩০ জুন ২০২১

তিব্বতের আধ্যাত্মিক নেতা তেনজিন গায়াতসো আগামী ৬ জুলাই ৮৬ বছর বয়সে পদার্পণ করবেন। তার বয়স বেড়ে যাওয়ায় তিব্বতের পরবর্তী আধ্যাত্মিক নেতা কে হচ্ছেন এবং কারা তাকে নির্বাচিত করবেন তা নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠেছে। তিব্বতের জনগণ তাদের আধ্যাত্মিক নেতা দালাইলামাকে নির্বাচিত করে থাকলেও বেইজিং পরবর্তী দালাইলামা নির্বাচনের সিদ্ধান্তের দিকে ঝুঁকছে।

তিব্বতের বৌদ্ধদের বরাতে ব্রুক শেডেনেক এশিয়া টাইমসকে বলেন, ‘তিব্বত গায়াতসোর পরবর্তী উত্তরসূরিকে খুঁজে নেবে। কিন্তু বেইজিং তিব্বতের আধ্যাত্মিক নেতাকে বাছাইয়ের সিদ্ধান্তের দিকে ঝুঁকছে।’

বৌদ্ধ শিক্ষা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে পৌঁছে দিতে দালাইলামা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। তিব্বতের প্রবীণ সন্যাসীরা মূলত আধ্যাত্মিক লক্ষণ ও দর্শনের ওপর ভিত্তি করে দালাইলামার উত্তরসূরি নির্বাচন করে থাকেন।

এশিয়া টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১১ সালে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বেইজিং সরকারই কেবল পরবর্তী দালাইলামাকে নিয়োগ দিতে পারে। অন্য কাউকে দালাইলামা হিসেবে বাছাইয়ের স্বীকৃতি দেওয়া উচিত হবে না।’

শেডেনেক বলেন, ‘দালাইলামা ব্যাপক প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব। তার উত্তরসুরীকে বাছাই করা কেবল ধর্মীয় বিষয় নয়, এর সঙ্গে রাজনৈতিক বিষয়ও জড়িত।’

ছয় শতাব্দী জুড়ে দালাইলামার ১৪ প্রজন্ম তিব্বতের নেতৃত্ব দিয়েছে। তারা মানুষের জন্য সমবেদনা ও প্রার্থনা করেছেন। বর্তমান দালাইলামার যখন প্রায় চার বছর বয়স তখন তিনি সিংহাসনে বসেছিলেন এবং তার নামকরণ হয় তেনজিন গায়াতসো। বর্তমানে দালাইলামাকে নির্বাচনের প্রক্রিয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। 

১৯৫০ সালে চীনের কমিউনিস্ট সরকার তিব্বত আক্রমণ করে এবং তিব্বতকে চীনের দাবি করে। ১৯৫৯ সালে দালাইলামা তখন পালিয়ে যান এবং নির্বাসিত অবস্থায় সরকার গঠন করেন। দালাইলামাকে তিব্বতের লোকজন শ্রদ্ধা করেন এবং ৭০ বছর ধরে চীনা শাসনের সময় থেকে তারা এ ভক্তি-শ্রদ্ধা বজায় রেখেছেন। 

১৯৯৫ সালে চীন পাঞ্চেন লামার উত্তরসূরি ছয় বছরের গালহুন ছোয়কি নেইমাকে আটক করে। তখন থেকে চীন তার ব্যাপারে কোনো তথ্য দেয়নি। এশিয়া টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, তুলক বংশধর পাঞ্চেন লামা তিব্বতের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ দ্বিতীয় ব্যক্তিত্ব।

মহাযান বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন বৌদ্ধস্তাবরা পুনর্জন্ম গ্রহণ করেন। তারা পৃথিবীর বেদনা ও দুর্ভোগ নিয়ে অন্যদের আলোকিত করেন। যখন নবনিযুক্ত ১১তম পাঞ্চেন লামাকে আটক করা হয় তখন তিব্বতের বৌদ্ধরা বিদ্রোহ করেন। চীন সরকার নতুন পাঞ্চেন লামাকে নিয়োগ দেয় যিনি ছিলেন মূলত চীনের নিরাপত্তা কর্মকর্তার ছেলে।

তিব্বতের পরবর্তী আধ্যাত্মিক নেতা খুঁজতে দালাইলামা ও পাঞ্চেন লামা ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। চীন নিজস্ব দালাইলামাকে তিব্বতে নিয়োগ করতে চায়। তবে তিব্বতের বৌদ্ধদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হলো দালাইলামাকে বাছাই পক্রিয়া। পরবর্তী দালাইলামা কোথায় জন্মগ্রহণ করবেন সে ব্যাপারে সাধারণত অনুমান করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে আধ্যাত্মিক লক্ষণ, চিহ্ন ও দর্শন দেখে তিব্বতের নেতা দালাইলামাকে চূড়ান্ত করা হয়। সূত্র: এএনআই

এসি

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি