চীনের বিআরআই প্রকল্পের অর্থনৈতিক ঝুঁকি রয়েছে
প্রকাশিত : ১৮:০৬, ১৮ জুলাই ২০২১
চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) বিশ্বব্যাপী দেশগুলোর জন্য ব্যাপক অর্থনৈতিক ঝুঁকি সৃষ্টি করেছে বলে মত দিয়েছেন কৌশলগত বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিসিপি) আধিপত্যের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে জি-৭’র বিল্ড ব্যাক বেটার ওয়ার্ল্ড’র (বিথ্রিডব্লিউ) আরও স্পষ্টতার প্রয়োজন।
চীনের কাছাকাছি হওয়ায় ভারত একমাত্র দেশ যার বিআরআই ও এর ঝুঁকি সম্পর্কে খুব স্পষ্ট ধারণা রয়েছে। ঝুঁকি মোকাবিলায় বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন, বিআরআই প্রকল্পকে মোকাবেলা করতে নয়াদিল্লি তার নিজস্ব পরিকল্পনা তৈরি করবে অথবা জি-৭’র বিথ্রিডব্লিউ উদ্যোগ বাস্তবায়নে নেতৃত্বের ভূমিকা নিতে পারে।
মন্ট্রিলভিত্তিক ক্লিও প্যাসকেল এবং ম্যানিপালভিত্তিক শেশেদ্রি চেরি দিল্লিতে আয়োজিত ‘জি-৭ এর বিথ্রিডব্লিউ বনাম সিসিপির বিআরআই : উন্নয়ন তহবিল অথবা ঋণ কূটনীতি’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এ মত ব্যক্ত করেন। প্যাসকেলের মতে, ‘বিআরআই’র ফলে স্থানীয় অর্থনীতি ও দুর্নীতির ক্ষেত্রে সম্ভাব্য ঝুঁকি রয়েছে। এই প্রকল্প শ্রম, পরিবেশ বা স্বচ্ছতার মানদণ্ডের বিষয়ে চিন্তা করে না।’
সলোমন দ্বীপপুঞ্জের উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এর প্রধানমন্ত্রী ড্যানিয়েল সুদানি চীনের ঘুষ প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপ জাতির জন্য সিসিপি’র পরিকল্পনার বিরোধিতা করেন।
ওয়াশিংটন ডিসির ‘সেন্টার অন মিলিটারি অ্যান্ড পলিটিক্যাল পাওয়ার’র ইন্দোপ্যাসিফিক সিনিয়র ফেলো প্যাসকেল বলেন, ‘সিসিপি বিআরআইতে যোগদানকারী দেশগুলোর অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও বিচারিক কাঠামোকে প্রভাবিত করে। এ ছাড়া যে দেশগুলো বিআরআই, সিসিপিতে যোগ দিয়েছে সিসিপি তাদের মূলধন বিনিয়োগ এবং অর্থনৈতিক স্বাধীনতা বাজেয়াপ্ত করে।’
প্যাসকেল আরও বলেন, ‘অন্যদিকে জি-৭’র বিথ্রিডব্লিউ উদ্যোগে ভূ-রাজনৈতিক বিষয়বস্তু অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, তবে এই উদ্যোগে যুক্ত ব্যবসায়িক ‘‘লবিস্টরা’’ ভূ-অর্থনীতিতে আবশ্যিকভাবে এটি ঢেলে সাজাতে সক্ষম হবে।’
তার মতে, জি-৭ দেশগুলো এককভাবে গড়ে ৩৪ ট্রিলিয়ন জিডিপি অর্থনীতির দেশ যার মাথাপিছু জিডিপি ৪৩ হাজার ডলার। অন্যদিকে চীন ১৫ ট্রিলিয়ন ডলার জিডিপি অর্থনীতির দেশ এবং গড় মাথাপিছু জিডিপি ১১ হাজার ডলার। চীনের জনসংখ্যা এক দশমিক ৪৫ বিলিয়ন এবং জি-৭ দেশগুলোর জনসংখ্যা ৭৭৫ মিলিয়ন।
ফোরাম ফর ইন্টিগ্রেটেড ন্যাশনাল সিকিউরিটির মুম্বাই সদরদপ্তরের সেক্রেটারি জেনারেল শেশেদ্রি চেরি বলেন, ‘বিআরআই কোনো অর্থনৈতিক, বৈশ্বিক, উন্নয়ন ও বহুপক্ষীয় প্রকল্প নয়। এটি একটি একতরফা প্রকল্প এবং যতটা সম্ভব প্রকল্প গ্রহণের দিকে মনোনিবেশ করেছে। ফলে নতুন বিশ্ব ব্যবস্থায় চীনের নেতৃত্বস্থানীয় অবস্থান তৈরি করবে। তবে জি-৭ সেভেন দেশগুলোর উদ্দেশ্য এখনো বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হয়নি।’ তবে বিথ্রিডব্লিউ শিশুশ্রম, স্বচ্ছতা, গণতন্ত্র, এবং জাতিসংঘের নিয়ম মেনে চলাসহ বেশ কয়েকটি শর্তে গণতান্ত্রিক দেশগুলোর সঙ্গে কাজ করবে বলে জানান তিনি।
সূত্র : ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস
এসি
আরও পড়ুন